কোরান সূরা আলে-ইমরান আয়াত 130 তাফসীর
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَأْكُلُوا الرِّبَا أَضْعَافًا مُّضَاعَفَةً ۖ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ﴾
[ آل عمران: 130]
হে ঈমানদারগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খেয়ো না। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক, যাতে তোমরা কল্যাণ অর্জন করতে পারো। [সূরা আলে-ইমরান: 130]
Surah Al Imran in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Al Imran ayat 130
ওহে যারা ঈমান এনেছ! সুদ গলাধঃকরণ করো না তাকে দ্বিগুণ ও বহুগুণিত করে; আর আল্লাহ্কে ভয়-শ্রদ্ধা করো যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।
Tafsir Mokhtasar Bangla
১৩০. আল্লাহতে বিশ্বাসী ও তাঁর রাসূলের অনুসারী হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদের ঋণ দেয়া মূল সম্পদের উপর কয়েকগুণ বাড়তি সুদ খাওয়া থেকে বিরত থাকো। যা জাহিলী যুগের লোকেরা করতো। আর তোমরা আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে তাঁকেই ভয় করো। তাহলে তোমরা দুনিয়া ও আখিরাতের কাক্সিক্ষত কল্যাণের নাগাল পাবে।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
হে বিশ্বাসিগণ! তোমরা ক্রমবর্ধমান হারে ( দ্বিগুণ-চতুর্গুণ বা চক্রবৃদ্ধি হারে ) সূদ খেয়ো না,[১] এবং আল্লাহকে ভয় কর, তাহলে তোমরা সফলকাম হতে পারবে। [১] যেহেতু উহুদ যুদ্ধে পরাজয় রসূল ( সাঃ )-এর অবাধ্যতা এবং পার্থিব সম্পদের প্রতি লোভের কারণে হয়েছিল, তাই দুনিয়ার লোভনীয় জিনিসের মধ্যে সর্বাধিক মারাত্মক সূদ থেকে নিষেধ এবং আল্লাহর আনুগত্য করার তাকীদ করা হচ্ছে। আর 'চক্রবৃদ্ধি হারে সূদ' খেতে নিষেধ করার অর্থ এই নয় যে, যদি চক্রবৃদ্ধি হারে না হয়, তাহলে তা খাওয়া জায়েয। বরং সূদ কম হোক বা বেশী, ব্যক্তিবিশেষের নিকট থেকে হোক অথবা কোম্পানী বা প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে, তা সর্বাবস্থায় হারামই। যেমন পূর্বেও আলোচিত হয়েছে। সূদ হারাম হওয়ার জন্য এটা ( চক্রবৃদ্ধি হারে খাওয়া ) শর্ত নয়। বরং বাস্তব পরিবেশের দিকে লক্ষ্য করে এইভাবে বলা হয়েছে। অর্থাৎ, সেই সময় সূদ খাওয়ার যে পরিবেশ ও ধরন ছিল, তাই প্রকাশ ও বর্ণনা করা হয়েছে। জাহেলিয়াতে সূদের সাধারণ প্রচলন এই ছিল যে, ঋণ পরিশোধ করার সময় এসে যাওয়ার পর তা পরিশোধ করা সম্ভব না হলে, তার ( পরিশোধের ) সময় বৃদ্ধি করার সাথে সাথে সূদও বর্ধিত হতে থাকত; ফলে সামান্য অর্থও বাড়তে বাড়তে বহুগুণ হয়ে যেত এবং সাধারণ একজন মানুষের পক্ষে তা আদায় করা অসম্ভব হয়ে পড়ত। মহান আল্লাহ বললেন, আল্লাহকে ভয় কর এবং সেই আগুনকে ভয় কর যা প্রস্তুত করা হয়েছে কাফেরদের জন্য। এ থেকে সতর্ক করাও উদ্দেশ্য। অর্থাৎ, সূদ খাওয়া থেকে বিরত না হলে, এই হারাম কাজ তোমাদেরকে কুফরী পর্যন্ত পৌঁছে দেবে। কারণ, সূদ খাওয়া মানে, আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামা।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
হে মুমিনগণ! তোমরা চক্রবৃ্দ্ধি হারে সুদ [ ১ ] খেয়ো না [ ২ ] এবং আল্লহার তাকওয়া অবলম্বন কর যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। চৌদ্দতম রুকু‘ [ ১ ] আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমর ইবনে আকইয়াশের জাহেলী যুগের কিছু সুদের কারবার ছিল সে তা উসুল করা জন্য ইসলাম গ্রহণ থেকে বিরত ছিল। তারপর যখন উহুদ যুদ্ধের দিন আসল, সে জিজ্ঞাসা করল, আমার চাচাত ভাই অমুক কোথায়? লোকেরা বলতঃ উহুদের প্রান্তরে, আবার জিজ্ঞাসা করতঃ অমুক কোথায়? তারা বলতঃ উহুদের প্রান্তরে, আবার জিজ্ঞাসা করলঃ অমুক কোথায়? লোকেরা বলতঃ সেও উহুদের প্রান্তরে। এতে সে তার যুদ্ধাস্ত্র পরে নিয়ে উহুদের উদ্দেশ্যে বের হয়ে পড়ে। মুসলিমগণ যখন তাকে দেখল তখন তারা বললঃ আমর! তুমি আমাদের থেকে দূরে থাক। কিন্তু সে জবাব দিল ‘আমি ইসলাম গ্রহণ করেছি’। তারপর সে যুদ্ধ করে আহত হলো, তাকে তার পরিবারের কাছে আহত অবস্থায় নিয়ে আসা হল। সা’দ ইবনে মুআয রাদিয়াল্লাহু আনহু এসে তার বোনকে বললেন, তুমি তাকে জিজ্ঞাসা কর সে কি জাতিকে বাঁচানোর জন্য, নাকি তাদের ক্রোধে শরীক হওয়ার জন্য, নাকি আল্লাহ্র জন্য যুদ্ধ করেছে? তখন আমর জবাবে বললঃ বরং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করেছি। তারপর তিনি মারা গেলেন। ফলে জান্নাতে প্রবেশ করলেন, অথচ আল্লাহ্র জন্য এক ওয়াক্ত সালাত পড়ারও সুযোগ তার হয়নি। [ আবু দাউদঃ ২৫৩৭, ইসাবাঃ ২/৫২৬ ] হাফেয ইবনে হাজার রাহিমাহুল্লাহ বলেনঃ আমি সর্বদা খুঁজে বেড়াতাম যে, আল্লাহ তা’আলা উহুদের ঘটনার মাঝখানের সুদের কথা কেন নিয়ে আসলেন, তারপর যখন এ ঘটনা পড়লাম তখন আমার কাছে এ আয়াতকে এখানে আনার যোক্তিকতা স্পষ্ট হলো। [ আল উজাবঃ ২/৭৫৩ ] [ ২ ] আলোচ্য আয়াতে কয়েকগুণ বেশী অর্থাৎ চক্রবৃদ্ধি হারকে সুদ হারাম ও নিষিদ্ধ হওয়ার শর্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি। অন্যান্য আয়াতে অত্যন্ত কঠোরভাবে সর্বাবস্থায় সুদ হারাম হওয়ার কথা বর্ণিত হয়েছে। “ আয়াতে চক্রবৃদ্ধি হারে” সুদ খাওয়া নিষেধ করার মধ্যে এদিকেও ইঙ্গিত হতে পারে যে, সুদ গ্রহণে অভ্যস্ত ব্যক্তি যদি চক্রবৃদ্ধি সুদ থেকে বেঁচেও থাকে, তবে সুদের উপার্জনকে যখন পুনরায় সুদে খাটাবে, তখন অবশ্যই দ্বিগুণের দ্বিগুণ হতে থাকবে- যদিও সুদখোরদের পরিভাষায় একে চক্রবৃদ্ধি সুদ বলা হবে না । সারকথা, সব সুদই পরিণামে দ্বিগুণের ওপর দ্বিগুন সুদ হয়ে থাকে। সুতরাং আয়াতে সবরকম সুদকেই নিষিদ্ধ ও হারাম করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘তোমরা ধ্বংসকারী সাতটি বিষয় হতে বেঁচে থাকবে, সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ ! সে বিষয়গুলো কি কি? তিনি বললেন, আল্লাহ্র সাথে শির্ক করা, জাদু করা, যথার্থ কারণ ছাড়া আল্লাহ যাকে হত্যা করতে নিষেধ করেছেন তাকে হত্যা করা, সুদ খাওয়া, অন্যায়ভাবে ইয়াতিমের মাল ভক্ষন করা, যুদ্ধ অবস্থায় জেহাদের ময়দান হতে পলায়ণ করা, পবিত্র মুসলিম নারীর উপর ব্যাভিচারের মিথ্যা অপবাদ দেয়া’। [ বুখারীঃ ২৭৬৬ ]
সূরা আলে-ইমরান আয়াত 130 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- নিশ্চয় আপনার পালনকর্তাই স্রষ্টা, সর্বজ্ঞ।
- আমি এর জন্যে তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাই না। আমার প্রতিদান তো বিশ্ব-পালনকর্তা দেবেন।
- বলুন এটা উত্তম, না চিরকাল বসবাসের জান্নাত, যার সুসংবাদ দেয়া হয়েছে মুত্তাকীদেরকে? সেটা হবে তাদের
- আর আপনি তাদেরকে শুনিয়ে দিন, সে লোকের অবস্থা, যাকে আমি নিজের নিদর্শনসমূহ দান করেছিলাম, অথচ
- আর তাদের মধ্যে একদল রয়েছে, যারা বিকৃত উচ্চারণে মুখ বাঁকিয়ে কিতাব পাঠ করে, যাতে তোমরা
- যাতে ঐ নেয়ামত অস্বীকার করে, যা আমি তাদেরকে দিয়েছি। অতএব মজা ভোগ করে নাও-সত্বরই তোমরা
- সে সত্বরই সন্তুষ্টি লাভ করবে।
- আর যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়, তাদের মৃত বলো না। বরং তারা জীবিত, কিন্তু তোমরা
- অতঃপর যখন তারা তাঁর কাছ থেকে নিরাশ হয়ে গেল, তখন পরামর্শের জন্যে এখানে বসল। তাদের
- যদি আমি ওদের সামনে আকাশের কোন দরজাও খুলে দেই আর তাতে ওরা দিনভর আরোহণ ও
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা আলে-ইমরান ডাউনলোড করুন:
সূরা Al Imran mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Al Imran শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers