কোরান সূরা আহ্কাফ আয়াত 16 তাফসীর
﴿أُولَٰئِكَ الَّذِينَ نَتَقَبَّلُ عَنْهُمْ أَحْسَنَ مَا عَمِلُوا وَنَتَجَاوَزُ عَن سَيِّئَاتِهِمْ فِي أَصْحَابِ الْجَنَّةِ ۖ وَعْدَ الصِّدْقِ الَّذِي كَانُوا يُوعَدُونَ﴾
[ الأحقاف: 16]
আমি এমন লোকদের সুকর্মগুলো কবুল করি এবং মন্দকর্মগুলো মার্জনা করি। তারা জান্নাতীদের তালিকাভুক্ত সেই সত্য ওয়াদার কারণে যা তাদেরকে দেওয়া হত। [সূরা আহ্কাফ: 16]
Surah Al-Ahqaaf in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Ahqaf ayat 16
এরাই তারা যাদের থেকে আমরা গ্রহণ করে থাকি তারা যা করেছিল তার শ্রেষ্ঠ এবং উপেক্ষা করি তাদের মন্দ কার্যাবলী -- জান্নাতের বাসিন্দাদের অন্তর্ভুক্ত। প্রামাণিক প্রতিশ্রুতি যা তাদের কাছে ওয়াদা করা হত।
Tafsir Mokhtasar Bangla
১৬. এরা সে সব লোক যাদের নেক আমল আমি কবুল করে থাকি এবং মন্দ কাজগুলো মার্জনা করি। ফলে তদ্বারা তাদেরকে পাকড়াও করিনা। তারা জান্নাতবাসীদের অন্তর্ভুক্ত। তাদেরকে যে অঙ্গীকার প্রদান করা হলো তা সত্য; যা অবশ্যই বাস্তবে রূপ লাভ করবে।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
আমি এদেরই সর্বোৎকৃষ্ট কর্মগুলো গ্রহণ করে থাকি এবং তাদের মন্দ কর্মগুলো ক্ষমা করে দিই, তারা জান্নাতবাসীদের অন্তর্ভুক্ত। এদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তা সত্য প্রমাণিত হবে।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
‘ওরাই তারা, আমরা যাদের সৎ আমলগুলো কবুল করি এবং মন্দ কাজগুলো ক্ষমা করি, তারা জান্নাতবাসীদের মধ্যে হবে [ ১ ]। এদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তা সত্য ওয়াদা। [ ১ ] এ আয়াতের বিধান অত্যন্ত ব্যাপক। এমনকি সাহাবায়ে কিরামের মধ্যে ঘটে যাওয়া বিষয়গুলোও এর অন্তর্ভুক্ত। আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুর এক উক্তি থেকে আয়াতের ব্যাপকতা বোঝা যায়। মুহাম্মদ ইবনে হাতেম বর্ণনা করেন, একবার আমি আমীরুল মুমেনীন আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তখন তার কাছে আরও কিছু লোক উপস্থিত ছিল। তারা উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুর চরিত্রে কিছু দোষ আরোপ করলে তিনি বললেন: "উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু সে লোকদের অন্যতম ছিলেন, যাদের কথা আল্লাহ তা'আলা اُولٰٓيِكَ الَّذِيْنَ فَتَقَبَّلُ عَنْهُم اَحْسَنَ مَاءَمِلُوْاوَنَتَجَا وَزُعَنْ سَيِّاٰتِيمْ فِيْٓ اَصْحٰبِ الْجَنَّةِ আয়াতে ব্যক্ত করেছেন। আল্লাহর কসম। উসমান ও তার সঙ্গীদের ক্ষেত্রেই এই আয়াত প্রযোজ্য। এ বাক্যটি তিনি তিনবার বললেন। [ দেখুন, ইবনে কাসীর ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
১৫-১৬ নং আয়াতের তাফসীর: এর পূর্বে আল্লাহ তা'আলার একত্ববাদ, আন্তরিকতার সাথে তাঁর ইবাদত এবং ওর প্রতি অটলতার হুকুম ছিল বলে এখানে পিতা-মাতার হক আদায় করার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। এই বিষয়েরই আরো বহু আয়াত কুরআন পাকের মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ তোমার প্রতিপালক আদেশ দিয়েছেন তিনি ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত না করতে ও পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করতে ।”( ১৭:২৩ ) আর এক জায়গায় বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ সুতরাং আমার প্রতি ও তোমার পিতা-মাতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও । প্রত্যাবর্তন তো আমারই নিকট।" ( ৩১:১৪ ) এই বিষয়ের আরো অনেক আয়াত আছে। এখানে আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “ আমি মানুষকে তার মাতা-পিতার প্রতি সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি ।'হযরত সা'দ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, তাঁর মাতা তাঁকে বলেঃ “ আল্লাহ তা'আলা পিতা-মাতার আনুগত্য করার কি নির্দেশ দেননি? জেনে রেখো যে, আমি পানাহার করবো না যে পর্যন্ত না তুমি আল্লাহর সাথে কুফরী করবে ।” হযরত সা'দ ( রাঃ ) এতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁর মাতা তাই করে অর্থাৎ পানাহার সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করে। শেষ পর্যন্ত লাঠি দ্বারা তার মুখ ফেড়ে জোরপূর্বক তার মুখে খাদ্য ও পানীয় ঢুকিয়ে দেয়া হয়। তখন ( আরবী ) এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়।” ( এ হাদীসটি ইমাম আবু দাউদ তায়ালেসী (রঃ ) বর্ণনা করেছেন। ইমাম মুসলিম ( রঃ ) এবং ইমাম ইবনে মাজাহ ( রঃ ) ছাড়া অন্যান্য আহলুস সুনানও এটা বর্ণনা করেছেন) আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “ তার জননী তাকে গর্ভে ধারণ করে কষ্টের সাথে এবং প্রসব করে কষ্টের সাথে । হযরত আলী ( রাঃ ) এ আয়াত দ্বারা এবং এর সাথে সূরায়ে লোকমানের ( তার দুধ ছাড়ানো হয় দুই বছরে ) এবং আল্লাহ তাআলার নির্দেশঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ মাতারা যেন তাদের সন্তানদেরকে পূর্ণ দুই বছর দুধ পান করায় তাদের জন্যে যারা দুধ পান করানোর সময়কাল পূর্ণ করতে চায় ।”( ২:২৩৩ ) এর দ্বারা দলীল গ্রহণ করেছেন যে, গর্ভধারণের সময়কাল হলো কমপক্ষে ছয় মাস। তাঁর এই দলীল গ্রহণ খুবই দৃঢ় এবং সঠিক। হযরত উসমান ( রাঃ ) এবং অন্যান্য সাহাবায়ে কিরামও এর পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। হযরত মুআম্মার ইবনে আবদিল্লাহ জুহনী ( রাঃ ) বলেন যে, তাঁর গোত্রের একটি লোক জুহনিয়্যাহ গোত্রের একটি মহিলাকে বিয়ে করে। ছয় মাস পূর্ণ হওয়া মাত্রই মহিলাটি সন্তান প্রসব করে। তখন তার স্বামী হযরত উসমান ( রাঃ )-এর নিকট তার ঐ স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। হযরত উসমান ( রাঃ ) তখন লোক পাঠিয়ে মহিলাটিকে ধরে আনতে বলেন। মহিলাটি প্রস্তুত হয়ে আসতে উদ্যতা হলে তার বোন কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। মহিলাটি তখন তার বোনকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেঃ “ তুমি কাঁদছো কেন? আল্লাহর কসম! আমার স্বামী ছাড়া দুনিয়ার কোন একটি লোকের সাথেও আমি কখনো মিলিত হইনি । আমার দ্বারা কখনো কোন দুষ্কর্ম হয়নি। সুতরাং আমার ব্যাপারে মহান আল্লাহর কি ফায়সালা হচ্ছে তা তুমি সত্বরই দেখে নিবে।” মহিলাটি হযরত উসমান ( রাঃ )-এর নিকট হাযির হলে তিনি তাকে রজম ( পাথর মেরে হত্যা ) করার নির্দেশ দেন। এ খবর হযরত আলী ( রাঃ )-এর কর্ণগোচর হলে তিনি খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত উসমান ( রাঃ )-কে প্রশ্ন করেনঃ “ আপনি এটা কি করতে যাচ্ছেন?” জবাবে তিনি বলেনঃ “এই মহিলাটি তার বিয়ের ছয় মাস পরেই সন্তান প্রসব করেছে, যা অসম্ভব ( সুতরাং আমি তাকে ব্যভিচারের অপরাধে রজম করার নির্দেশ দিয়েছি ) । হযরত আলী ( রাঃ ) তখন তাকে বলেনঃ “ আপনি কি কুরআন পড়েননি?” উত্তরে তিনি বলেনঃ “হঁ্যা, অবশ্যই পড়েছি ।” হযরত আলী ( রাঃ ) তখন বলেনঃ “ তাহলে কুরআন কারীমের ( আরবী ) ( অর্থাৎ তার গর্ভধারণ ও দুধ ছাড়ানোর সময়কাল হলো ত্রিশমাস ) এ আয়াতটি এবং ( আরবী ) ( অর্থাৎ দুধ ছাড়ানোর সময়কাল হলো পূর্ণ দুই বছর ) এ আয়াতটি পড়েননি? সুতরাং গর্ভধারণ ও দুধ পান করানোর মোট সময়কাল হলো ত্রিশ মাস । এর মধ্যে দুধ পান করানোর সময়কাল দুই বছর বা চব্বিশ মাস বাদ গেলে বাকী থাকে ছয় মাস। তাহলে কুরআন কারীম দ্বারা জানা গেল যে, গর্ভধারণের সময়কাল হলো কমপক্ষে ছয় মাস। এ মহিলাটি এ সময়কালের মধ্যেই সন্তান প্রসব করেছে। সুতরাং তার উপর কি করে ব্যভিচারের অভিযোগ দেয়া যেতে পারে?”এ কথা শুনে হযরত উসমান ( রাঃ ) বলেনঃ “ আল্লাহর কসম! এ কথা সম্পূর্ণরূপে সঠিক! বড়ই দুঃখের বিষয় যে, এটা আমি চিন্তাই করিনি । যাও, মহিলাটিকে ফিরিয়ে নিয়ে এসো।” অতঃপর জনগণ মহিলাটিকে এমন অবস্থায় পেলো যে, সে যে দোষমুক্ত তা প্রমাণিত হয়ে গিয়েছিল। হযরত মুআম্মার ( রঃ ) বলেনঃ “ আল্লাহর শপথ! একটি কাকের সাথে অন্য কাকের এবং একটি ডিমের সাথে অন্য ডিমের যেমন সাদৃশ্য থাকে, মহিলাটির শিশুর সাথে তার পিতার সাদৃশ্য এর চেয়েও বেশী ছিল । স্বয়ং তার পিতাও তাকে দেখে বলেঃ “ আল্লাহর কসম! এটা যে আমারই সন্তান এ ব্যাপারে এখন আমার কোনই সন্দেহ নেই । আল্লাহ তাআলা মহিলাটির স্বামীকে একটা ক্ষত দ্বারা আক্রান্ত করেন যা তার চেহারায় দেখা দিয়েছিল। অবশেষে তাতেই সে মৃত্যুবরণ করে। ( এটা ইবনে আবি হাতিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন) এ রিওয়াইয়াতটি আমরা অন্য সনদে ( আরবী )-এ আয়াতের তাফসীরে আনয়ন করেছি। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেন যে, যদি কোন নারী নয় মাসে সন্তান প্রসব করে তবে তার দুধ পান করানোর সময়কাল একুশ মাসই যথেষ্ট। আর যদি সাত মাসে সন্তান ভূমিষ্ট হয় তবে দুধ পানের সময়কাল হবে তেইশ মাস। আর যদি ছয় মাসে সন্তান প্রসব করে তবে দুধ পান করানোর সময়কাল হবে পূর্ণ দুই বছর। কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেছেন যে, গর্ভধারণ ও দুধ ছাড়ানোর সময়কাল হলো ত্রিশ মাস।মহান আল্লাহ বলেনঃ ক্রমে সে পূর্ণ শক্তিপ্রাপ্ত হয় এবং চল্লিশ বছরে উপনীত হয় অর্থাৎ সে শক্তিশালী হয়, যৌবন বয়সে পৌছে, পুরুষদের গণনাভুক্ত হয়, জ্ঞান পূর্ণ হয়, বোধশক্তি পূর্ণতায় পৌঁছে এবং সহিষ্ণুতা লাভ করে। এটা বলা হয়ে থাকে যে, চল্লিশ বছর বয়সে মানুষের যে অবস্থা হয়, বাকী জীবন তার প্রায় ঐ অবস্থাই থাকে।হযরত মাসরূক ( রঃ )-কে জিজ্ঞেস করা হয়ঃ ‘মানুষকে কখন তার গুনাহর জন্যে পাকড়াও করা হয়? উত্তরে তিনি বলেনঃ “ যখন তোমার বয়স চল্লিশ বছর হবে তখন তুমি নিজের মুক্তির জন্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করবে ।”হযরত উসমান ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী ( সঃ ) বলেছেনঃ “ বান্দার বয়স যখন চল্লিশ বছরে পৌঁছে তখন আল্লাহ তার হিসাব হালকা করে দেন । যখন তার বয়স ষাট বছর হয় তখন আকাশবাসীরা তাকে ভালবাসতে থাকেন। তার বয়স যখন আশি বছরে পৌঁছে তখন আল্লাহ তা'আলা পুণ্যগুলো ঠিক রাখেন এবং পাপগুলো মিটিয়ে দেন। যখন তার বয়স নব্বই বছর হয় তখন আল্লাহ তা'আলা তার পূর্বের ও পরের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেন এবং তাকে তার পরিবার পরিজনদের জন্যে শাফাআতকারী বানিয়ে দেন এবং আকাশে লিখে দেন যে, সে আল্লাহর যমীনে তাঁর বন্দী।” ( এ হাদীসটি হাফিয আবূ ইয়ালা (রঃ ) বর্ণনা করেছেন। অন্য সনদে এটা মুসনাদে আহমাদেও বর্ণিত হয়েছে)দামেস্কের উমাইয়া শাসনকর্তা হাজ্জাজ ইবনে আবদিল্লাহ হাকামী বলেনঃ “ চল্লিশ বছর বয়স পর্যন্ত তো আমি লোক লজ্জার খাতিরে অবাধ্যাচরণ ও পাপসমূহ বর্জন করেছি, এরপরে আল্লাহকে বলে লজ্জা করে আমি এগুলো পরিত্যাগ করেছি ।” কবির নিম্নের উক্তিটি কতই না চমৎকারঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ বাল্যকালে অবুঝ অবস্থায় যা কিছু হওয়ার হয়ে গেছে, কিন্তু বার্ধক্য যখন তার মুখ দেখালো তখন মাথার ( চুলের ) শুভ্রতা নিজেই মিথ্যা ও বাজে জিনিসকে বলে দিলোঃ এখন তুমি দূর হয়ে যাও ।” এরপর মহান আল্লাহ বান্দার দু'আর বর্ণনা দিচ্ছেন যে, সে বলেঃ হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমাকে সামর্থ্য দিন, যাতে আমি আপনার নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি, আমার প্রতি ও আমার মাতা-পিতার প্রতি যে নিয়ামত ও অনুগ্রহ আপনি দান করেছেন তার জন্যে। আর যাতে আমি সন্ধার্য করতে পারি যা আপনি পছন্দ করেন। আমার জন্যে আমার সন্তান-সন্ততিদেরকে সঙ্কর্মপরায়ণ করে দিন। আমি আপনারই অভিমুখী হলাম এবং আত্মসমর্পণ করলাম। এতে ইরশাদ হয়েছে যে, চল্লিশ বছর বয়সে উপনীত হলে মানুষের উচিত পূর্ণভাবে আল্লাহ তা'আলার নিকট তাওবা করা এবং নব উদ্যমে এমন কাজ করে যাওয়া যাতে তিনি সন্তুষ্ট হন।হযরত ইবনে মাসউদ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, তাশাহহুদে পড়ার জন্যে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাদেরকে নিম্নলিখিত দু'আটি শিক্ষা দিতেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ হে আল্লাহ! আমাদের অন্তরে আপনি ভালবাসা সৃষ্টি করে দিন, আমাদের পরস্পরের মাঝে সন্ধি স্থাপন করুন, আমাদেরকে শান্তির পথ দেখিয়ে দিন, আমাদেরকে ( অজ্ঞতার ) অন্ধকার হতে রক্ষা করে ( জ্ঞানের ) আলোকের দিকে নিয়ে যান, আমাদেরকে প্রকাশ্য ও গোপনীয় নির্লজ্জতাপূর্ণ কাজ হতে বাঁচিয়ে নিন, আমাদের কানে, আমাদের চোখে, আমাদের অন্তরে, আমাদের স্ত্রীদের মধ্যে এবং আমাদের সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে বরকত দান করুন এবং আমাদের তাওবা কবুল করুন, নিশ্চয়ই আপনি তাওবা কবুলকারী ও দয়ালু । আমাদেরকে আপনার নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশকারী বানিয়ে দিন এবং ঐ নিয়ামতরাশির কারণে আমাদেরকে আপনার প্রশংসাকারী করুন ও আপনার এই নিয়ামতরাজিকে স্বীকারকারী আমাদেরকে বানিয়ে দিন। আর আমাদের উপর আপনার নিয়ামত পরিপূর্ণ করুন।” ( এ হাদীসটি সুনানে আবি দাউদে বর্ণিত আছে )যে লোকদের বর্ণনা উপরে দেয়া হলো অর্থাৎ আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করে এবং তার কাছে আত্মসমর্পণ করে ও নিজেদের পাপের জন্যে তাঁর নিকট ক্ষমা প্রার্থী হয় তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ আমি তাদের সুকৃতিগুলো গ্রহণ করে থাকি এবং মন্দকর্মগুলো ক্ষমা করি। তাদের অল্প আমলের বিনিময়েই আমি তাদেরকে জান্নাতবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করে থাকি। তাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তা সত্য প্রমাণিত হবে।হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, রূহুল আমীন ( হযরত জিবরাঈল আঃ ) বলেন:“ বান্দার পুণ্য ও পাপগুলো আনয়ন করা হবে এবং একটিকে অপরটির বিনিময় করা হবে । অতঃপর যদি একটি পুণ্যও বাকী থাকে তবে ওরই বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা তাকে জানাতে পৌঁছিয়ে দিবেন।” হাদীসটির বর্ণনাকারী তার উস্তাদকে জিজ্ঞেস করেনঃ “ যদি পাপরাশির বিনিময়ে সমস্ত পুণ্য শেষ হয়ে যায়?” উত্তরে তিনি আল্লাহ পাকের এ উক্তিটি উদ্ধৃত করেনঃ “আমি তাদের সুকৃতিগুলো গ্রহণ করে থাকি এবং মন্দ কর্মগুলো ক্ষমা করি, তারা জান্নাতবাসীদের অন্তর্ভুক্ত । তাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তা সত্য প্রমাণিত হবে।” অন্য রিওয়াইয়াতে আছে যে, হযরত রূহুল আমীন ( আঃ ) এ উক্তিটি মহামহিমান্বিত আল্লাহ হতে উদ্ধৃত করেছেন।” ( এ হাদীসটি ইমাম ইবনে জারীর (রঃ ) ও ইবনে আবি হাতিম ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন। এ হাদীসটি গারীব বা দুর্বল, কিন্তু এর ইসনাদ খুবই উত্তম)হযরত সা'দ ( রঃ ) বলেনঃ যখন হযরত আলী ( রাঃ ) বসরার উপর বিজয় লাভ করেন ঐ সময় হযরত মুহাম্মাদ ইবনে হাতিব ( রঃ ) আমার নিকট আগমন করেন। একদা তিনি আমাকে বলেনঃ আমি একদা আমীরুল মুমিনীন হযরত আলী ( রাঃ )-এর নিকট হাযির ছিলাম। ঐ সময় তথায় হযরত আম্মার ( রঃ ), হযরত সা’সা’ ( রাঃ ), হযরত আশতার ( রাঃ ) এবং হযরত মুহাম্মাদ ইবনে আবি বকর ( রাঃ ) বিদ্যমান ছিলেন। কতকগুলো লোক হযরত উসমান ( রাঃ ) সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে কিছু বিরূপ মন্তব্য করেন। ঐ সময় হযরত আলী ( রাঃ ) মসনদে উপবিষ্ট ছিলেন। তাঁর হাতে একটি ছড়ি ছিল। তখন তাদের মধ্যে কে একজন বলেনঃ “ আপনাদের মাঝে তো এই বিতর্কের সঠিকভাবে ফায়সালাকারী বিদ্যমান রয়েছেন?” সুতরাং সবাই হযরত আলী ( রাঃ )-কে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি উত্তরে বলেন, হযরত উসমান ( রাঃ ) নিশ্চিতরূপে ঐ লোকদের মধ্যে একজন ছিলেন যাঁদের সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “আমি এদেরই সুকৃতিগুলো গ্রহণ করে থাকি এবং মন্দকর্মগুলো ক্ষমা করি । তারা জান্নাতবাসীদের অন্তর্ভুক্ত। এদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তা সত্য প্রমাণিত হবে।” আল্লাহর কসম! এই আয়াতে যাদের কথা বলা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন হযরত উসমান ( রাঃ ) এবং তাঁর সঙ্গীগণ।” একথা তিনি তিনবার বলেন। বর্ণনাকারী ইউসুফ ( রঃ ) বলেনঃ আমি হযরত মুহাম্মাদ ইবনে হাতিব ( রঃ )-কে জিজ্ঞেস করলামঃ আপনাকে আমি আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি, বলুন তো, আপনি কি এটা স্বয়ং হযরত আলী ( রাঃ )-এর মুখে শুনেছেন? উত্তরে তিনি বলেনঃ “ হ্যা, আল্লাহর কসম! আমি স্বয়ং এটা হযরত আলী ( রাঃ )-এর মুখে শুনেছি ।” ( এটা ইমাম ইবনে আবি হাতিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)
সূরা আহ্কাফ আয়াত 16 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন রয়েছে; কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।
- অতঃপর তোমাদের উপর শোকের পর শান্তি অবতীর্ণ করলেন, যা ছিল তন্দ্রার মত। সে তন্দ্রায় তোমাদের
- যখন তারা জাহান্নামে পরস্পর বিতর্ক করবে, অতঃপর দূর্বলরা অহংকারীদেরকে বলবে, আমরা তোমাদের অনুসারী ছিলাম। তোমরা
- আর তাকে তিনি শিখিয়ে দেবেন কিতাব, হিকমত, তওরাত, ইঞ্জিল।
- তারাই সে লোক, যাদের প্রচেষ্টা পার্থিবজীবনে বিভ্রান্ত হয়, অথচ তারা মনে করে যে, তারা সৎকর্ম
- তারা তো সেই জনপদের উপর দিয়েই যাতায়াত করে, যার ওপর বর্ষিত হয়েছে মন্দ বৃষ্টি। তবে
- নিঃসন্দেহে সাফা ও মারওয়া আল্লাহ তা’আলার নিদর্শন গুলোর অন্যতম। সুতরাং যারা কা’বা ঘরে হজ্ব বা
- আর যারা কুফর করেছে, তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে, তোমাদের কাছে কি আয়াতসমূহ পঠিত হত না?
- তারা যদি তোমাদের খবর জানতে পারে, তবে পাথর মেরে তোমাদেরকে হত্যা করবে, অথবা তোমাদেরকে তাদের
- আর যখন তোমরা ছিলে সমরাঙ্গনের এ প্রান্তে আর তারা ছিল সে প্রান্তে অথচ কাফেলা তোমাদের
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা আহ্কাফ ডাউনলোড করুন:
সূরা Ahqaf mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Ahqaf শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers