কোরান সূরা ফাত্হ আয়াত 17 তাফসীর
﴿لَّيْسَ عَلَى الْأَعْمَىٰ حَرَجٌ وَلَا عَلَى الْأَعْرَجِ حَرَجٌ وَلَا عَلَى الْمَرِيضِ حَرَجٌ ۗ وَمَن يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ يُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ ۖ وَمَن يَتَوَلَّ يُعَذِّبْهُ عَذَابًا أَلِيمًا﴾
[ الفتح: 17]
অন্ধের জন্যে, খঞ্জের জন্যে ও রুগ্নের জন্যে কোন অপরাধ নাই এবং যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের অনুগত্য করবে তাকে তিনি জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত হয়। পক্ষান্তরে যে, ব্যক্তি পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে, তাকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দিবেন। [সূরা ফাত্হ: 17]
Surah Al-Fath in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Al Fath ayat 17
অন্ধের জন্য কোনো অপরাধ নেই, আর খোঁড়ার জন্যেও কোনো অপরাধ নেই, আর রোগীর জন্যেও কোনো দোষ নেই। আর যে কেউ আল্লাহ্র ও তাঁর রসূলের আজ্ঞাপালন করে তাদের তিনি প্রবেশ করাবেন বাগানসমূহে যাদের নিচে দিয়ে বয়ে চলেছে ঝরনারাজি, কিন্তু যে কেউ ফিরে যায় তিনি তাকে শায়েস্তা করবেন মর্মন্তুদ শাস্তিতে।
Tafsir Mokhtasar Bangla
১৭. অন্ধ, খোঁড়া কিংবা রোগাক্রান্ত ব্যক্তি আল্লাহর পথে যুদ্ধ করা থেকে বিরত থাকলে তাতে কোন অপরাধ নেই। বস্তুতঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তদীয় রাসূলের আনুগত্য করবে তিনি তাকে এমন সব উদ্যানে প্রবিষ্ট করাবেন যার অট্টালিকা ও বৃক্ষরাজির তলদেশ দিয়ে নদী-নালা প্রবাহিত। আর যে ব্যক্তি উভয়জনের আনুগত্য থেকে বিমুখ থাকবে তিনি তাদেরকে কষ্টদায়ক শাস্তি দিবেন।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
অন্ধের জন্য, খোঁড়ার জন্য, রোগীর জন্য কোন অপরাধ নেই।[১] আর যে কেউই আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করবে, আল্লাহ তাঁকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে; যার নিম্নদেশে নদীমালা প্রবাহিত; কিন্তু যে ব্যক্তি পৃষ্ঠ-প্রদর্শন করবে, তিনি তাকে বেদনায়ক শাস্তি দেবেন। [১] অন্ধ ও খোঁড়া হওয়ার কারণে চলাফেরা করতে অক্ষমতা এ দু'টো চিরস্থায়ী ওজর। এই ওজর-ওয়ালা ব্যক্তিদের অথবা এই ধরনের অক্ষম মানুষদেরকে জিহাদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। حَرَج ( অপরাধ ) এর অর্থ পাপ। এরা ছাড়া রোগীরাও সাময়িকভাবে অক্ষম। যতক্ষণ পর্যন্ত সে ( রোগী ) প্রকৃতপক্ষে রোগী থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সেও জিহাদ থেকে অব্যাহতি লাভ করবে। অতঃপর রোগ বা অসুস্থতা দূর হওয়ার সাথে সাথে সেও অন্য মুসলিমদের সাথে জিহাদের নির্দেশের অন্তর্ভুক্ত হবে।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
অন্ধের কোন অপরাধ নেই, খঞ্জের কোন অপরাধ নেই এবং পীড়িতেরও কোন অপরাধ নেই; এবং যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করবে, তিনি তাকে প্রবেশ করাবেন এমন জান্নাতে, যার নিচে নহরসমূহ প্রবাহিত ; কিন্তু যে ব্যক্তি পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে। তিনি তাকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দেবেন।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
১৬-১৭ নং আয়াতের তাফসীর: যেসব মরুবাসী বেদুঈন জিহাদ হতে সরে রয়েছিল তাদেরকে যে এক প্রবল পরাক্রান্ত জাতির সহিত যুদ্ধ করার জন্যে আহ্বান করা হয়েছিল তারা কোন্ জাতি ছিল এ ব্যাপারে তাফসীরকারদের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। তারা বিভিন্ন জন বিভিন্ন উক্তি করেছেন। উক্তিগুলো হলোঃ ( এক ) তারা ছিল হাওয়াযেন গোত্র। ( দুই ) তারা সাকীফ গোত্র ছিল। ( তিন ) তারা ছিল বানু হানীফ গোত্র। ( চার ) তারা ছিল পারস্যবাসী। ( পাঁচ ) তারা রোমক ছিল। ( ছয় ) তারা ছিল মূর্তিপূজক জাতি। কেউ কেউ বলেন যে, এর দ্বারা কোন নির্দিষ্ট গোত্র বা দলকে বুঝানো হয়নি, বরং সাধারণভাবে রণ-নিপুণ জাতিকে বুঝানো হয়েছে। যারা তখন পর্যন্ত মুকাবিলায় আসেনি। হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) বলেন যে, এর দ্বারা কুর্দিস্তানের লোকদেরকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ তারা ছিল কুর্দি জাতি।হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ কিয়ামত সংঘটিত হবে না যে পর্যন্ত না তোমরা যুদ্ধ করবে এমন এক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যাদের চক্ষু হবে ছোট ছোট এবং নাক হবে বসা বসা । তাদের চেহারা হবে ঢালের মতো।” ( এ হাদীসটি ইমাম ইবনে আবি হাতিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন) হযরত সুফিয়ান ( রঃ ) বলেন যে, এর দ্বারা তুর্কীদেরকে বুঝানো হয়েছে। অন্য একটি রিওয়াইয়াতে আছে যে, রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ তোমাদেরকে এমন এক কওমের সঙ্গে জিহাদ করতে হবে যে, তাদের জুতাগুলো হবে চুল বিশিষ্ট ।” হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) বলেন যে, তারা হবে কুর্দী সম্প্রদায়।এরপর মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ “ তোমরা তাদের সহিত যুদ্ধ করবে যতক্ষণ না তারা আত্মসমর্পণ করে । অর্থাৎ তোমাদের উপর জিহাদের বিধান দেয়া হলো এবং এই হুকুম অব্যাহত থাকবে।মহান আল্লাহর উক্তি ও যদি তোমরা এই নির্দেশ পালন কর তবে আল্লাহ্ তোমাদেরকে উত্তম পুরস্কার দান করবেন।” অর্থাৎ আল্লাহ্ তোমাদেরকে তাদের উপর সাহায্য করবেন অথবা তারা যুদ্ধ না করেই ইসলাম কবুল করে নিবে। মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ্ বলেনঃ “ আর যদি তোমরা পূর্বানুরূপ পৃষ্ঠ প্রদর্শন কর, তবে তোমাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি ।' অর্থাৎ হুদায়বিয়ার ব্যাপারে যেমন তোমরা ভীরুতা প্রদর্শন করে গৃহে রয়ে গিয়েছিলে, নবী ( সঃ ) ও সাহাবী ( রাঃ )-এর সাথে অংশগ্রহণ করনি, তেমনই যদি এখনো কর তবে আল্লাহ্ তা'আলা তোমাদেরকে কঠিন বেদনাদায়ক শাস্তি প্রদান করবেন।এরপর জিহাদকে ছেড়ে দেয়ার সঠিক ওযরের বর্ণনা দেয়া হচ্ছে যে, অন্ধের জন্যে, খঞ্জের জন্যে এবং রুগের জন্যে কোন অপরাধ নেই।' এখানে আল্লাহ্ তা'আলা দুই প্রকারের ওযরের বর্ণনা দিয়েছেন। ( এক ) সদা বিদ্যমান ওযর এবং তা হলো অন্ধত্ব ও খোড়ামী। ( দুই ) অস্থায়ী ওযর এবং তা হলো রুগ্নতা। এটা কিছু দিন থাকে এবং পরে দূর হয়ে যায়। সুতরাং রুগ্ন ব্যক্তিদের ওযরও গ্রহণযোগ্য হবে যতদিন তারা রুগ্ন থাকে। সুস্থ হয়ে যাওয়ার পর তাদের ওযর আর গৃহীত হবে না। এবার আল্লাহ পাক জিহাদের প্রতি উৎসাহিত করতে গিয়ে বলেন- যে কেউ ( যুদ্ধের নির্দেশ প্রতিপালনের ব্যাপারে ) আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল ( সঃ )-এর আনুগত্য করবে, আল্লাহ তাকে প্রবিষ্ট করবেন জান্নাতে, যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত। পক্ষান্তরে, যে ব্যক্তি পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে, তিনি তাকে মর্মন্তুদ শাস্তি প্রদান করবেন। দুনিয়াতেও সে লাঞ্ছিত হবে এবং আখিরাতেও তার দুঃখের কোন সীমা থাকবে না। এসব ব্যাপারে আল্লাহ্ তা'আলাই সবচেয়ে ভাল জানেন।
সূরা ফাত্হ আয়াত 17 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- তোমাদেরকে করতলগত করতে পারলে তারা তোমাদের শত্রু হয়ে যাবে এবং মন্দ উদ্দেশ্যে তোমাদের প্রতি বাহু
- তিনিই নিরক্ষরদের মধ্য থেকে একজন রসূল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদের কাছে পাঠ করেন তার আয়াতসমূহ,
- পার্থিব জীবন ক্রীড়া ও কৌতুক ব্যতীত কিছুই নয়। পরকালের আবাস পরহেযগারদের জন্যে শ্রেষ্টতর। তোমরা কি
- যে ভাল কাজে বাধা দেয়, সে সীমালংঘন করে, সে পাপিষ্ঠ,
- যেদিন আকাশ বিদীর্ণ হবে তখন সেটি রক্তবর্ণে রঞ্জিত চামড়ার মত হয়ে যাবে।
- তোমরা বের হয়ে পড় স্বল্প বা প্রচুর সরঞ্জামের সাথে এবং জেহাদ কর আল্লাহর পথে নিজেদের
- যদি তাদের মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ হওয়ার মত পরিস্থিতিরই আশঙ্কা কর, তবে স্বামীর পরিবার থেকে একজন এবং
- আমি যে শ্রেষ্ট এ ব্যক্তি থেকে, যে নীচ এবং কথা বলতেও সক্ষম নয়।
- অপরাধীদের সাথে আমি এমনি ব্যবহার করে থাকি।
- নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা আছে, তিনি তা জানেন। তিনি আরও জানেন তোমরা যা গোপনে কর
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা ফাত্হ ডাউনলোড করুন:
সূরা Al Fath mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Al Fath শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers