কোরান সূরা নামল আয়াত 19 তাফসীর
﴿فَتَبَسَّمَ ضَاحِكًا مِّن قَوْلِهَا وَقَالَ رَبِّ أَوْزِعْنِي أَنْ أَشْكُرَ نِعْمَتَكَ الَّتِي أَنْعَمْتَ عَلَيَّ وَعَلَىٰ وَالِدَيَّ وَأَنْ أَعْمَلَ صَالِحًا تَرْضَاهُ وَأَدْخِلْنِي بِرَحْمَتِكَ فِي عِبَادِكَ الصَّالِحِينَ﴾
[ النمل: 19]
তার কথা শুনে সুলায়মান মুচকি হাসলেন এবং বললেন, হে আমার পালনকর্তা, তুমি আমাকে সামর্থ?2470;াও যাতে আমি তোমার সেই নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি, যা তুমি আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে দান করেছ এবং যাতে আমি তোমার পছন্দনীয় সৎকর্ম করতে পারি এবং আমাকে নিজ অনুগ্রহে তোমার সৎকর্মপরায়ন বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত কর। [সূরা নামল: 19]
Surah An-Naml in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Naml ayat 19
সুতরাং তিনি তার কথায় বিস্মিত হয়ে মুচকি হাসলেন ও বললেন -- ''আমার প্রভু! তুমি আমাকে অনুমতি দাও যেন তুমি আমার প্রতি ও আমার পিতামাতার প্রতি যে নিয়ামত অর্পণ করেছ তোমার সেই আশিসের জন্য আমি কৃতজ্ঞতা জানাতে পারি, আর আমি যেন সৎকর্ম করতে পারি যা তুমি পছন্দ কর, আর তোমার অনুগ্রহ বশতঃ আমাকে তোমার সৎপথাবলন্বী বান্দাদের অন্তর্ভূক্ত করো।’’
Tafsir Mokhtasar Bangla
১৯. যখন সুলাইমান ( আলাইহিস-সালাম ) পিঁপড়ার কথা শুনলেন তখন তিনি তার কথায় মুচকি হেসে নিজ প্রতিপালককে ডেকে বললেন: হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমাকে আপনার সেই নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা আদায় করার তাওফীক ও মানসিকতা দিন যে নিয়ামত আপনি আমাকে ও আমার মাতা-পিতাকে দিয়েছেন। আর আপনি আমাকে আপনার সন্তুষ্টি মাফিক নেক আমল করার তাওফীক দিন। উপরন্তু আমাকে আপনার নিজ দয়ায় আপনার নেককার বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করুন।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
( সুলাইমান ) ওর উক্তিতে মৃদু হাসল এবং বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমাকে সামর্থ্য দাও, যাতে আমি তোমার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি -- আমার প্রতি ও আমার পিতা-মাতার প্রতি তুমি যে অনুগ্রহ করেছ[১] তার জন্য এবং যাতে আমি তোমার পছন্দমত সৎকাজ করতে পারি। আর তুমি নিজ করুণায় আমাকে তোমার সৎকর্মপরায়ণ দাসদের শ্রেণীভুক্ত করে নাও।’[২] [১] পিঁপড়ের মত ছোট একটি জীবের কথা শুনে বুঝার জন্য সুলাইমানের মনে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করার অনুভূতি জাগল যে, আল্লাহ আমার উপর কত অনুগ্রহ করেছেন! [২] এখান হতে জানা গেল জান্নাত মু'মিনদের বাসস্থান। যেখানে আল্লাহর বিনা অনুগ্রহে কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। এই জন্যই হাদীসে নবী ( সাঃ ) বলেছেন, " সরল ও সত্যের নিকটবর্তী থাক, আর এ কথা জেনে রাখো যে, কোন ব্যক্তি নিজ আমলের জোরে জান্নাতে যেতে পারবে না। " সাহাবারা জিজ্ঞাসা করলেন, 'হে আল্লাহর রসূল! আপনিও না?' তিনি বললেন, " হ্যাঁ! আমিও না, যতক্ষণ আমার উপর আল্লাহর রহমত না হবে। " ( বুখারী ৬৪৬৭নং, মুসলিম ২১৭নং )
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
অতঃপর সুলাইমান তার এ কথাতে মৃদু হাসলেন এবং বললেন, ‘হে আমার রব! আপনি আমাকে সামর্থ্য দিন [ ১ ] যাতে আমি আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি, আমার প্রতি ও আমার পিতামাতার প্রতি আপনি যে অনুগ্রহ করেছেন তার জন্য এবং যাতে আমি এমন সৎকাজ করতে পারি যা আপনি পছন্দ করেন [ ২ ]। আর আপনার অনুগ্রহে আমাকে আপনার সৎকর্মপরায়ণ বান্দাদের শামিল করুন [ ৩ ]।’ [ ১ ] এখানে উদ্দেশ্য এই যে, আমাকে সামর্থ্য দিন। আমাকে ইলহাম করুন। [ মুয়াসসার ] যাতে আমি নেয়ামতের কৃতজ্ঞতাকে সর্বদা সাথে রাখি, তা থেকে কোন সময় পৃথক না হই। মোটকথা এই যে, সৰ্বক্ষণ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। কারণ, আপনি আমাকে পাখি ও জীবজন্তুর কথা বুঝতে শিখিয়েছেন। আর আমার পিতার উপর নেয়ামত দিয়েছেন যে, তিনি আপনার কাছে আত্মসমৰ্পন করেছেন এবং ঈমান এনেছেন। [ ইবন কাসীর ] [ ২ ] এখানে সৎকাজ করার সাথে একটি শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে যে, ‘যা আপনি পছন্দ করেন’ অর্থাৎ যাতে আপনার সস্তুষ্টি বিধান হয়। এর দ্বারা মূলতঃ কবুল হওয়াই উদ্দেশ্য। তখন আয়াতের অর্থ হবে, হে আল্লাহ্! আমাকে এমন সৎকর্মের তাওফীক দিন, যা আপনার কাছে মকবুল হয়। নবী-রাসূলগণ তাদের সৎকর্মসমূহ মাকবুল হওয়ার জন্যেও দো‘আ করতেন; যেমন ইবরাহীম ও ইসমাঈল আলাইহিমাসসালাম কাবা গৃহ নির্মাণের সময় দো‘আ করেছিলেনঃ رَنَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا “ হে আমাদের প্রভু! আমাদের থেকে তা কবুল করুন” । [ সূরা আল-বাকারাহঃ ১২৭ ] এর দ্বারা বুঝা গেল যে, কোন সৎকর্ম সম্পাদন করেই নিশ্চিন্ত হয়ে যাওয়া ঠিক নয়; বরং তা কবুল হওয়ার জন্যে আল্লাহ্ তা‘আলার দরবারে কাকুতি-মিনতির মাধ্যমে দো‘আ করা উচিত। [ ৩ ] সুলাইমান আলাইহিসসালাম এসব বাক্যে জান্নাতে প্রবেশ করার জন্য আল্লাহ্র রহমত ও দয়ার দরখাস্ত করেছেন। এর দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, জান্নাতে যাওয়া আল্লাহ্র রহমতের উপর নির্ভরশীল। শুধুমাত্ৰ সৎকাজের বিনিময়ে জান্নাত পাওয়া যাবে না। হাদীসেও এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “ কোন ব্যাক্তি তার কর্মের উপর ভরসা করে জান্নাতে যাবে না । সাহাবায়ে কেরাম বললেনঃ আপনিও কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, আমিও না, তবে যদি আমাকে আল্লাহ্র অনুগ্রহ পরিবেষ্টন করে” [ বুখারীঃ ৫৩৪৯, ৬৮০৮, ৬০৯৮, মুসলিমঃ ২৮১৬ ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
১৫-১৯ নং আয়াতের তাফসীর এই আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা'আলার ঐ নিয়ামতরাশির বর্ণনা রয়েছে যেগুলো তিনি হযরত দাউদ ( আঃ ) ও হযরত সুলাইমান ( আঃ )-এর উপর দিয়ে রেখেছিলেন। তিনি তাদেরকে দান করেছিলেন উভয় জগতের সম্পদ। এই নিয়ামতগুলো দান করার সাথে সাথে তিনি তাদেরকে তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশেরও তাওফীক দিয়েছিলেন। তাঁরা তাঁদেরকে প্রদত্ত নিয়ামতরাজির কারণে সদা-সর্বদা আল্লাহ তা'আলার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে থাকেন। তাঁরা তাঁর প্রশংসা করতেন।হযরত উমার ইবনে আবদিল আযীয ( রঃ ) লিখেছেনঃ “ যে বান্দাকে আল্লাহ যে নিয়ামত দান করেন সেই নিয়ামতের উপর যদি সে তার প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তবে তার ঐ প্রশংসা ঐ নিয়ামত অপেক্ষা উত্তম হবে । দেখো, স্বয়ং আল্লাহর কিতাবেই একথা বিদ্যমান রয়েছে। অতঃপর তিনি এই আয়াতই লিখেন। তারপর তিনি লিখেনঃ “ আল্লাহ তা'আলা এ দুই নবী ( আঃ )-কে যে নিয়ামত দান করেছিলেন তা অপেক্ষা উত্তম নিয়ামত আর কি হতে পারে?”মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ ‘সুলাইমান ( আঃ ) হয়েছিল দাউদ ( আঃ )-এর উত্তরাধিকারী । এর দ্বারা উদ্দেশ্য ধন-মালের উত্তরাধিকারী নয়। বরং রাজত্ব ও নবুওয়াতের উত্তরাধিকারী উদ্দেশ্য। যদি সম্পদের উত্তরাধিকারী উদ্দেশ্য হতো তবে শুধুমাত্র হযরত সুলাইমান ( আঃ )-এর নাম আসতো না। কেননা, হযরত দাউদ ( আঃ )-এর একশটি স্ত্রী ছিল। আর নবীদের ( আঃ ) মালের মীরাস হয় না। যেমন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) খবর দিয়েছেনঃ “ আমরা নবীদের দল ( মালের ) কাউকেও উত্তরাধিকারী করি না । আমরা যা ছেড়ে যাই তা সাদকা ( রূপে পরিগণিত ) হয়।” হযরত সুলাইমান ( আঃ ) আল্লাহর নিয়ামতরাজি স্মরণ করে বলছেনঃ “ হে লোক সকল! আমাকে পক্ষীকুলের ভাষা শিক্ষা দেয়া হয়েছে । এটা আমার প্রতি আল্লাহর একটি বিশেষ করুণা ও অনুগ্রহ যা অন্য কাউকেও দেয়া হয়নি। এটা অবশ্যই তার সুস্পষ্ট অনুগ্রহ।”কোন কোন অজ্ঞ লোক বলেছে যে, ঐ সময় পক্ষীকুলও মানুষের ভাষায় কথা বলতো। কিন্তু এটা তাদের অজ্ঞতা ছাড়া কিছুই নয়। তাদের তো এটা অনুধাবন করা উচিত ছিল যে, যদি সত্যি এরূপই হতো তবে হযরত সুলাইমান ( আঃ )-এর বৈশিষ্ট্য আর কি থাকতো? অথচ তিনি গর্বের সাথে বর্ণনা করছেনঃ “ আমাকে পক্ষীকুলের ভাষা শিক্ষা দেয়া হয়েছে । সুতরাং ঐ অজ্ঞদের কথা সত্য হলে সবাই পাখীর ভাষা বুঝতে পারতো এবং হযরত সুলাইমান ( আঃ )-এর বৈশিষ্ট্য কিছুই থাকতো না। কাজেই তাদের উক্তি সম্পূর্ণ ভুল। পাখী ও পশুর ভাষা এখন যা আছে তখনও তাই ছিল। হযরত সুলাইমান ( আঃ )-এর এটা একটা বিশেষ মর্যাদা যে, খেচর-ভূচর সবকিছুরই ভাষা বুঝতে পারতেন। সাথে সাথে তিনি এই নিয়ামতও লাভ করেছিলেন যে, একটা রাজত্ব পরিচালনার জন্যে যত কিছু জিনিসের প্রয়োজন আল্লাহ তা'আলা তাঁকে সবই দান করেছিলেন। এটা ছিল তাঁর প্রতি মহান আল্লাহর প্রকাশ্য অনুগ্রহ।হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ হযরত দাউদ ( আঃ ) একজন বড় মর্যাদাবোধ সম্পন্ন ব্যক্তি ছিলেন । যখন তিনি বাড়ী হতে বের হতেন তখন দরযা বন্ধ করে যেতেন। অতঃপর তার বাড়ীতে প্রবেশের কারো অনুমতি ছিল না। একদা অভ্যাসমত তিনি বাড়ী হতে বের হন। অল্পক্ষণ পরে তার এক পত্নী দেখতে পান যে, বাড়ীর শিশুদের মাঝে একটি লোক দাঁড়িয়ে রয়েছে। তিনি এ দৃশ্য দেখে হতবুদ্ধি হয়ে পড়েন এবং অন্যদেরকেও দেখান। তাঁরা সবাই বিস্ময়াভিভূত হয়ে পরস্পর বলাবলি করেনঃ “ দ্যা বন্দ রয়েছে তবুও এ লোকটি ভিতরে প্রবেশ করলো কি করে? আল্লাহর কসম! হযরত দাউদ ( আঃ )-এর সামনে আজ আমাদের অপমানের কোন সীমা থাকবে না । ইতিমধ্যে হযরত দাউদ ( আঃ ) এসে পড়েন। তিনিও লোকটিকে তথায় দণ্ডায়মান দেখে জিজ্ঞেস করেনঃ “ তুমি কে?” লোকটি উত্তরে বলেঃ “আমি সেই যাকে কেউ বাধা দিতে পারে না এবং দর বন্ধ করা দ্বারাও যাকে বাধা দেয়া যায় না । আর যে বড় হতে বড়তম ব্যক্তিরও কোন পরোয়া করে না।” হযরত দাউদ ( আঃ ) বুঝে নিয়ে বলেনঃ “ মারহাবা! মারহাবা! ( সাবাস! সাবাস! ) আপনি মালাকুল মাউত ( মৃত্যুর ফেরেশতা ) ।” তৎক্ষণাৎ মৃত্যুর ফেরেশতা তার রূহ কবয করে নেন। সূর্য উদিত হলো এবং হযরত দাউদ ( আঃ )-এর মৃতদেহের উপর রৌদ্র এসে পড়লো। তখন হযরত সুলাইমান ( আঃ ) পক্ষীকুলকে নির্দেশ দিলেন যে, তারা যেন হযরত দাউদ ( আঃ )-এর উপর ছায়া করে। পাখীগুলো তখন তাদের পালক বিস্তার করে এমন গভীরভাবে ছায়া করলো যে, যমীন অন্ধকারে ছেয়ে গেল। এরপর হযরত সুলাইমান ( আঃ ) পাখীগুলোকে এক এক করে পালক গুটিয়ে নিতে বললেন। হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) জিজ্ঞেস করলেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! পাখীগুলো কিভাবে তাদের পালকগুলো গুটিয়ে নিলো?” রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তখন নিজের হাত গুটিয়ে নিয়ে বললেনঃ “এভাবে । তার উপর সেই দিন লাল রং এর গৃধিনী জয়যুক্ত হয়।” ( এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত সুলাইমান ( আঃ )-এর সৈন্য একত্রিত হলো যাদের মধ্যে মানুষ, জ্বিন, পাখী ইত্যাদি সবই ছিল। তাঁর নিকটবর্তী ছিল মানুষ, তারপর জ্বিন। পাখী তাঁর মাথার উপর থাকতো। গরমের সময় তারা তাঁকে ছায়া দিতো। সবাই নিজ নিজ পদে প্রতিষ্ঠিত ছিল। যার জন্যে যে জায়গা নির্ধারিত ছিল সে সেই জায়গাতেই থাকতো। এই সেনাবাহিনীকে নিয়ে হযরত সুলাইমান ( আঃ ) চলতে রয়েছেন। একটি জঙ্গলের মধ্য দিয়ে তাঁদেরকে গমন করতে হলো যেখানে পিপীলিকার সেনাবাহিনী ছিল। হযরত সুলাইমান ( আঃ )-এর সেনাবাহিনীকে দেখে একটি পিপীলিকা অন্যান্য পিপীলিকাকে বললোঃ “ তোমরা নিজ নিজ গর্তে প্রবেশ কর, যেন সুলাইমান ( আঃ ) ও তার সেনাবাহিনী তাদের অজ্ঞাতসারে তোমাদেরকে পদতলে পিষে না ফেলে ।” হযরত হাসান ( রঃ ) বলেন যে, ঐ পিপীলিকাটির নাম ছিল হারস। সে বানু শায়সানের গোত্রভুক্ত ছিল। সে আবার খোঁড়া ছিল। সে অন্যান্য পিপীলিকার ব্যাপারে ভয় করলো যে, হযরত সুলাইমান ( আঃ )-এর ঘোড়াগুলো তাদের ক্ষুরের দ্বারা পিপীলিকাগুলোকে পিষে ফেলবে।পিপীলিকাটির এ কথা শুনে হযরত সুলাইমান ( আঃ )-এর হাসি আসলো এবং তৎক্ষণাৎ তিনি দু'আ করলেনঃ “ হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমাকে সামর্থ্য দিন যাতে আমি আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি, আমার প্রতি ও আমার পিতা-মাতার প্রতি আপনি যে অনুগ্রহ করেছেন তার জন্যে । আমার প্রতি আপনার অনুগ্রহ এই যে, আপনি আমাকে পাখী ও জীব-জন্তুর ভাষা শিখিয়েছেন ইত্যাদি এবং আমার পিতা-মাতার প্রতি আপনার ইনআম এই যে, তাঁরা মুমিন ও মুসলমান হয়েছেন ইত্যাদি। আর আমাকে তাওফীক দিন যাতে আমি সৎ কার্য করতে পারি, যা আপনি পছন্দ করেন এবং আপনার অনুগ্রহে আমাকে আপনার সঙ্কর্মপরায়ণ বান্দাদের শ্রেণীভুক্ত করুন।তাফসীরকারদের উক্তি রয়েছে যে, এই উপত্যকাটি সিরিয়ায় অবস্থিত ছিল। কেউ কেউ অন্য জায়গাতে বলেছেন। এই পিপীলিকাটি মাছির মত দুই পালক বিশিষ্ট ছিল। অন্য উক্তিও রয়েছে। নাওফ বাক্কালী ( রঃ ) বলেন যে, পিপীলিকাটি নেকড়ে বাঘের মত ছিল। খুব সম্ভব, আসলে শব্দ লিখে দেয়া হয়েছে অর্থাৎ নেকড়ে বাঘ। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সবচেয়ে ভাল জানেন। হযরত সুলাইমান ( আঃ ) জীব-জন্তুর ভাষা বুঝতে পারতেন বলে ঐ পিপীলিকাটির কথা তিনি বুঝে নেন এবং অনিচ্ছাকতভাবে তাঁর হাসি এসে যায়।আবুস সাদীক নাজী ( রঃ ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, সুলাইমান ইবনে দাউদ ( আঃ ) বৃষ্টির পানি চাওয়ার জন্যে বের হন। তিনি দেখতে পান যে, একটি পিপীলিকা উল্টোভাবে শুয়ে পা আকাশের দিকে উঠিয়ে দু'আ করতে রয়েছেঃ “ হে আল্লাহ! আমরাও আপনার সৃষ্টজীব । বৃষ্টির পানির আমরাও মুখাপেক্ষী। যদি আপনি বৃষ্টি বর্ষণ না করেন তবে আমরা ধ্বংস হয়ে যাবো।” পিপীলিকাকে এভাবে দু'আ করতে দেখে নিজের লোকেদের মধ্যে ঘোষণা করে দেনঃ “ চল, ফিরে যাই । অন্য কারো দুআর বরকতে তোমাদেরকে বৃষ্টির পানি পান করানো হবে।” ( এটা ইবনে আবি হাতিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী ( সঃ ) বলেছেনঃ “ কোন এক নবীকে একটি পিপীলিকায় কামড়িয়ে নেয় । তিনি তখন পিপীলিকাসমূহের গর্তে আগুন জ্বালিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেন। তৎক্ষণাৎ আল্লাহ তা'আলা ঐ নবীর নিকট অহী করেনঃ “একটি পিপীলিকায় তোমাকে কেটেছে বলে আমার তাসবীহ পাঠকারী পিপীলিকার বিরাট দলকে তুমি ধ্বংস করে দিলে? প্রতিশোধ নেয়ার ইচ্ছা থাকলে যেটা তোমাকে কেটেছে ওর থেকেই প্রতিশোধ নিতে?” ( এ হাদীসটি সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে )
সূরা নামল আয়াত 19 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- এবং সেখানে চন্দ্রকে রেখেছেন আলোরূপে এবং সূর্যকে রেখেছেন প্রদীপরূপে।
- যখন আমরা তোমাদেরকে বিশ্ব-পালনকর্তার সমতুল্য গন্য করতাম।
- আর প্রীতি সঞ্চার করেছেন তাদের অন্তরে। যদি তুমি সেসব কিছু ব্যয় করে ফেলতে, যা কিছু
- এবং জিনকে সৃষ্টি করেছেন অগ্নিশিখা থেকে।
- অতএব তারা যেন এবাদত করে এই ঘরের পালনকর্তার
- হে আহলে-কিতাবগণ! তোমাদের কাছে আমার রাসূল আগমন করেছেন! কিতাবের যেসব বিষয় তোমরা গোপন করতে, তিনি
- যে ব্যক্তি সৎকর্মপরায়ণ হয়ে স্বীয় মুখমন্ডলকে আল্লাহ অভিমূখী করে, সে এক মজবুত হাতল ধারণ করে,
- এমনিভাবে আমি গোনাহগারদের অন্তরে অবিশ্বাস সঞ্চার করেছি।
- অপর সে উকি দিয়ে দেখবে এবং তাকে জাহান্নামের মাঝখানে দেখতে পাবে।
- তারা সেই লোকদের মত, যারা তাদের নিকট অতীতে নিজেদের কর্মের শাস্তিভোগ করেছে। তাদের জন্যে রয়েছে
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা নামল ডাউনলোড করুন:
সূরা Naml mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Naml শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers