কোরান সূরা আ'রাফ আয়াত 200 তাফসীর
﴿وَإِمَّا يَنزَغَنَّكَ مِنَ الشَّيْطَانِ نَزْغٌ فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ ۚ إِنَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ﴾
[ الأعراف: 200]
আর যদি শয়তানের প্ররোচনা তোমাকে প্ররোচিত করে, তাহলে আল্লাহর শরণাপন্ন হও তিনিই শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী। [সূরা আ'রাফ: 200]
Surah Al-Araf in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Araf ayat 200
আর যদি শয়তানের থেকে খোঁচাখুচি তোমাকে আহত করে তবে আল্লাহ্র কাছে আশ্রয় চাও। নিঃসন্দেহ তিনি সর্ব শ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা।
Tafsir Mokhtasar Bangla
২০০. হে রাসূল! যদি আপনি আঁচ করতে পারেন যে, শয়তান আপনাকে কুমন্ত্রণা দিচ্ছে অথবা কল্যাণের কাজে নিরুৎসাহিত করছে তাহলে আপনি আল্লাহর আশ্রয় ও নিরাপত্তা গ্রহণ করুন। কারণ, তিনি আপনার সব কথা শুনছেন। আপনার আশ্রয় প্রার্থনা সম্পর্কেও তিনি জানেন। তাই তিনি অচিরেই আপনাকে শয়তানের হাত থেকে রক্ষা করবেন।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
আর যদি শয়তানের কুমন্ত্রণা তোমাকে প্ররোচিত করে, তাহলে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা কর,[১] নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। [১] এমতাবস্থায় যদি শয়তান তোমাকে উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা কর।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর যদি শয়তানের কুমন্ত্রণা আপনাকে প্ররোচিত করে, তবে আল্লাহর আশ্রয় চাইবেন। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ [ ১ ]। [ ১ ] এ আয়াতটি পূর্ববর্তী আয়াতের উপসংহার। কারণ, এতে হেদায়াত দেয়া হয়েছে যে, যারা অত্যাচার-উৎপীড়ন করে এবং মূর্খজনোচিত ব্যবহার করে, তাদের ভুলক্রটি ক্ষমা করে দেবেন। তাদের মন্দের উত্তর মন্দের দ্বারা দেবেন না। এ বিষয়টি মানব প্রকৃতির পক্ষে একান্তই কঠিন। বিশেষতঃ এমন পরিস্থিতিতে সৎ এবং ভাল মানুষদেরকেও শয়তান রাগাম্বিত করে লড়াই-ঝগড়ায় প্রবৃত্ত করেই ছাড়ে। সে জন্যই পরবর্তী আয়াতে উপদেশ দেয়া হয়েছে যে, যদি এহেন মুহুর্তে রোষানল জ্বলে উঠতে দেখা যায়, তবে বুঝবেন শয়তানের পক্ষ থেকেই এমনটি হচ্ছে এবং তাঁর প্রতিকার হল আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাওয়া, তার সাহায্য প্রার্থনা করা। হাদীসে উল্লেখ রয়েছে যে, দু'জন লোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিস ওয়াসাল্লামের সামনে ঝগড়া-বিবাদ করছিল। এদের একজন রাগে হিতাহিত জ্ঞান হারাবার উপক্রম হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি একটি বাক্য জানি, যদি এ লোকটি সে বাক্য উচ্চারণ করে, তাহলে তার এই উত্তেজনা প্রশমিত হয়ে যাবে। তারপর বললেনঃ বাক্যটি হল এই ( اَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرّجِيْمِ ) সে লোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট শুনে সঙ্গে সঙ্গে বাক্যটি উচ্চারণ করল। তাতে সাথে সাথে তার রোষানল প্রশমিত হয়ে গেল। [ বুখারীঃ ৩২৮২, ৬০৪৮, ৬১১৫, মুসলিমঃ ২৬১০, ইবন হিববানঃ ৫৬৯২, আবু দাউদঃ ৪৭৮০, তিরমিযীঃ ৩৪৫২, মুসনাদে আহমাদঃ ৫/২৪৪,নাসায়ী, আমলুল ইয়াওমে ওয়াল্লাইলাঃ ৩৯৩ ] অন্য হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে তাহাৰ্জ্জুদের জন্য দাঁড়ালে তিনবার তাকবীর বলতেন, তিনবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলতেন, সুবহানাল্লাহ ওয়া বিহামদিহী তিনবার বলতেন, তারপর বলতেনঃ ( اَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيْم مِنْ هَمْزِه وَنَفْخِهِ وَنَفْثِهِ ) অর্থাৎ আমি বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই, তার কুমন্ত্রণা হতে, অহংকার হতে, তার হাতে মৃত্যু হওয়া থেকে। [ আবু দাউদঃ ৭৬৪, ইবন মাজাহঃ ৮০৭, মুসনাদে আহমাদঃ ৪/৮৫ ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
১৯৯-২০০ নং আয়াতের তাফসীর: হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেন যে, ( আরবী )-এর ভাবার্থ হচ্ছেজনগণের যে মাল তাদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত এবং যে মাল তারা নিজেরাই নিয়ে আসে, ( হে মুহাম্মাদ সঃ! ) তুমি তা গ্রহণ কর। সূরায়ে বারাআতে ফরয দানের যে ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে, এ নির্দেশ ছিল তার পূর্বেকার। সেই সময় সাদকা তাঁর কাছে পেশ করা হতো। যহহাক ( রঃ ) বলেন যে, ( আরবী )-এর অর্থ হচ্ছেযা অতিরিক্ত হয় তা খরচ করে দাও। ( আরবী ) শব্দের অর্থ করা হয়েছে ‘অতিরিক্ত। যায়েদ ইবনে আসলাম ( রঃ ) বলেন যে, এতে মুশরিকদেরকে ক্ষমা করে দেয়ার হুকুম হয়েছে। দশ বছর পর্যন্ত এই ক্ষমার নীতি কার্যকরী থাকে। এরপর তাদের প্রতি কঠোরতা অবলম্বনের নির্দেশ দেয়া হয়। এটা হচ্ছে হযরত ইবনে জারীর ( রঃ )-এর উক্তি। মুজাহিদ ( রঃ ) বলেন যে, এর অর্থ হচ্ছে- লোকদেরকে তাদের চরিত্র ও কাজের ব্যাপারে ক্ষমার চোখে দেখ । অর্থাৎ তাদের স্বভাব চরিত্র ও কাজ কারবারের খোঁজ খবর নিয়ো না। ভাবার্থ হচ্ছে- লোকদেরকে ক্ষমা করে দাও এবং খারাপ সাহচর্য অবলম্বন করা থেকে বিরত থাক। আল্লাহর শপথ! আমি যার সাহচর্য অবলম্বন করবে, তার সুন্দর চরিত্র অবশ্যই গ্রহণ করবো। সকল উক্তির মধ্যে এই উক্তিটিই সর্বোত্তম।হযরত উয়াইনা ( রঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, যখন মহান আল্লাহ স্বীয় নবী ( সঃ )-এর উপর ( আরবী ) -এ আয়াতটি অবতীর্ণ করলেন তখন নবী ( সঃ ) হযরত জিবরাঈল ( আ )-কে জিজ্ঞেস করলেন- “ হে জিবরাঈল ( আঃ )! এর উদ্দেশ্য কি?” জিবরাঈল ( আঃ ) উত্তরে বললেনঃ আল্লাহ আপনাকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, কেউ আপনার উপর অত্যাচার করলে আপনি তাকে ক্ষমা করে দিবেন, যে আপনাকে দান থেকে বঞ্চিত করে তাকে আপনি দান করবেন এবং যে আপনার আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করে আপনি তার সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখবেন ।” ( এ হাদীসটি ইবনে জারীর (রঃ ) এবং ইবনে আবি হাতিম ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন) এই বিষয় সম্পর্কীয় আর একটি হাদীস হযরত উকবা ইবনে আমির ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ আমি একদা রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর সাথে সাক্ষাৎ করি। আমি তার হাত ধারণ করে বলি- হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! সর্বোত্তম আমল আমাকে বাতলিয়ে দিন। তিনি তখন আমাকে বললেনঃ “ হে উকবা ইবনে আমির ( রাঃ )! যে তোমার প্রতি সহানুভূতি দেখায় না তুমি তার প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন কর, যে তোমাকে দান থেকে বঞ্চিত রাখে তুমি তাকে দান থেকে বঞ্চিত করো না, যে তোমার প্রতি যুলুম করে তুমি তাকে ক্ষমা করে দাও ।” ( আরবী ) অর্থাৎ “ হে নবী ( সঃ )! তুমি বিনয় ও ক্ষমা পরায়ণতার নীতি গ্রহণ কর এবং লোকদেরকে সকাজের নির্দেশ দাও, আর জাহিল ও মূর্খদের সাথে জড়িয়ে পড়ো না বরং তাদেরকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখো৷” ( আরবী ) -এর অর্থ হচ্ছে বা সত্ত্বাজ । [ বুখারীর ( রঃ ) উক্তি হচ্ছে ( আরবী )-এর অর্থ ( আরবী ) এবং এর থেকে দলীল গ্রহণ করেছেন উরওয়া ( রঃ ), সুদ্দী ( রঃ ), কাতাদা ( রঃ ) এবং ইবনে জারীর ( রঃ ) ]হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, উয়াইনা ইবনে হসন ইবনে হুযাইফা স্বীয় ভ্রাতুস্পুত্র হুর ইবনে কয়েস ( রাঃ )-এর নিকট আগমন করেন। হুর ইবনে কয়েস ( রাঃ ) হযরত উমার ( রাঃ )-এর একজন দরবারী লোক ছিলেন। কুরআন কারীমে তাঁর গভীর জ্ঞান ছিল। তিনি হযরত উমার ( রাঃ )-এর মজলিসের কারী ও আলিমদের অন্যতম কারী ও আলিম ছিলেন এবং তার পরামর্শ সভার একজন সদস্য ছিলেন। হযরত উমার ( রাঃ )-এর দরবারের আলিমগণ যুবকও ছিলেন, বৃদ্ধও ছিলেন। উয়াইনা স্বীয় ভ্রাতুস্পুত্রকে বললেনঃ “ হে আমার ভ্রাতুস্পুত্র! আমীরুল মুমিনীনের কাছে তোমার বিশেষ মর্যাদা রয়েছে । সুতরাং তুমি তার সাথে আমার সাক্ষাতের অনুমতি নিয়ে এসো।” তখন হুর ( রাঃ ) উয়াইনার জন্যে অনুমতি নিয়ে আসলেন এবং হযরত উমার ( রাঃ ) উয়াইনাকে হাযির হওয়ার অনুমতি দিলেন। উয়াইনা যখন আমীরুল মুমিনীন। হযরত উমার ( রাঃ )-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন তখন তিনি তাকে বললেনঃ “ হে । খাত্তাবের পুত্র! আপনি আমাকে যথেষ্ট টাকাও দেননি এবং আমার প্রতি আদল বা ন্যায় বিচারও করেনি।" আদলের কথা শোনা মাত্রই হযরত উমার তেলে বেগুনে। জ্বলে উঠলেন এবং উয়াইনাকে মারতে উদ্যত হলেন। তখন হুর ( রাঃ ) বলে উঠলেনঃ হে আমীরুল মুমিনীন! আল্লাহ তাআলা স্বীয় নবী ( সঃ )-কে বলেছেনঃ “ তুমি বিনয় ও ক্ষমাপরায়ণতার নীতি অবলম্বন কর, জনগণকে সৎকাজের নির্দেশ দাও এবং মূর্খদের সাথে জড়িয়ে পড়ো না ( বরং তাদেরকে ক্ষমা করে দাও ) । ইনি তো মূর্খদেরই অন্তর্ভুক্ত! আল্লাহর শপথ । যখন হযরত উমার ( রাঃ )-এর সামনে এ আয়াতটি পাঠ করা হলো তখন তিনি থেমে গেলেন এবং উয়াইনাকে কোন শাস্তি দিলেন না। মহা মহিমান্বিত আল্লাহর কিতাবে তাঁর গভীর পাণ্ডিত্য ছিল। ( এটা ইমাম বুখারী (রঃ ) তাঁর সহীহ গ্রন্থে তাখরীজ করেছেন)ইবনে আবি হাতিম ( রঃ ) আবদুল্লাহ ইবনে নাফি ( রাঃ ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, একদা সালিম ইবনে আবদিল্লাহ ইবনে উমার ( রঃ ) সিরিয়াবাসী এক যাত্রী দলের পার্শ্ব দিয়ে গমন করেন। যাত্রী দলের মধ্যে ঘন্টা বাজছিল। তিনি বললেনঃ “ ঘন্টা বাজানো নিষিদ্ধ । কাফিররা তাদের মন্দিরে ঘন্টা বাজিয়ে থাকে।” তখন সেই কাফেলার লোকেরা বললোঃ “ এ ব্যাপারে আমাদের জ্ঞান আপনার চেয়ে বেশী আছে । বড় বড় ঘন্টা বাজানো নিষিদ্ধ বটে, কিন্তু ছোট ছোট ঘন্টায় কোন দোষ নেই। তাদের একথা শুনে হযরত সালিম ( রঃ ) নীরব হয়ে যান। শুধু এতোটুকু তিনি বললেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ মূর্খদের সাথে বকাবকি না করাই উত্তম। বলা হয় যে, ( আরবী ) এ সবগুলোরই অর্থ একই। অর্থাৎ সৎ কাজ। আল্লাহ তা'আলা স্বীয় নবী ( সঃ )-কে নির্দেশ দিয়েছেন যে, তিনি যেন আল্লাহর বান্দাদেরকে সৎকাজের নির্দেশ দেন। ( আরবী ) শব্দের মধ্যে সমস্ত আনুগত্য নিহিত রয়েছে। আর তিনি তাকে মূর্খদের সাথে জড়িয়ে না পড়ারও নির্দেশ দিয়েছেন। এই নির্দেশ বাহ্যতঃ নবী ( সঃ )-এর প্রতি হলেও সমস্ত বান্দাই এর অন্তর্ভুক্ত। এর মাধ্যমে বান্দাদেরকে আদব বা ভদ্রতা শিক্ষা দেয়া হচ্ছে যে, তাদের প্রতি কেউ যদি জুলুম করে তবে তাদেরকে তা সহ্য করতে হবে, এর অর্থ এটা নয় যে, কেউ যদি আল্লাহর ওয়াজেবী হকের ব্যাপারে অবহেলা প্রদর্শন করে বা তার সাথে কুফরী করে অথবা তার একত্ববাদ থেকে অজ্ঞ থেকে যায় তবুও তাকে ক্ষমা করে দিতে হবে। এর অর্থ এটাও নয় যে, মূর্খরা যদি মূখতা বশতঃ মুসলমানদের সাথে যুদ্ধে প্রবৃত্ত হয় তবুও নীরব থাকতে হবে। মোটকথা, এটা হচ্ছে ঐ চরিত্র যা আল্লাহ স্বীয় নবী ( সঃ )-কে শিক্ষা দিয়েছেন। এই বিষয়টিকে একজন জ্ঞানী কবি কবিতার মধ্যে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। তিনি বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ ক্ষমা করে দেয়ার নীতি অবলম্বন কর এবং সৎকাজের নির্দেশ দাও যেমন তোমাকে আদেশ করা হয়েছে । আর মূর্খদেরকে এড়িয়ে চল, তাদের সাথে জড়িয়ে পড়ো না। প্রত্যেক লোকের সাথে নরমভাবে কথা বল । আর উচ্চমর্যাদা সম্পন্ন লোকের প্রতি নরম ভাষা প্রয়োগ করা খুবই প্রশংসাৰ্হ।”কোন কোন আলিমের উক্তি রয়েছে যে, মানুষ দু' প্রকারের রয়েছে। প্রথম হচ্ছে উপকারী মানুষ। সে তোমাকে খুশী মনে যা কিছু দান করে তা তুমি কৃতজ্ঞতার সাথে গ্রহণ কর এবং সাধ্যের অতিরিক্ত ভার তার উপর চাপিয়ে দিয়ো না যার ফলে নিজেই সে পিষ্ট হয়ে যায়। দ্বিতীয় হচ্ছে হতভাগ্য ব্যক্তি। তুমি তাকে ভাল কাজের পরামর্শ দাও। কিন্তু যদি তার বিভ্রান্তি বেড়েই চলে এবং সে তার অজ্ঞতার উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে যায় তবে তাকে এড়িয়ে চল। সম্ভবতঃ এই ক্ষমাই তাকে তার দুষ্কার্য থেকে বিরত রাখবে। যেমন আল্লাহ পাক বলেনঃ “ উত্তম পন্থায় খারাপকে দূরীভূত কর, এভাবে তোমার শত্রুও তোমার মিত্রতে পরিণত হবে । তারা যে খেয়াল প্রকাশ করছে তা আমি খুব ভালই জানি।” আল্লাহ পাক বলেনঃ “ শয়তানের কুমন্ত্রণা যদি তোমাকে প্ররোচিত করে তবে তুমি আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা কর, তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ ।” অন্য জায়গায় আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “ নেকী ও বদী, সৎ ও অসৎ এবং ভাল ও মন্দ সমান হতে পারে না ।” ভাল পন্থায় খারাপকে দূর কর।' এই আমল ঐ লোকেরাই অবলম্বন করতে পারে যারা প্রকৃতিগতভাবে ধৈর্যশীল। ভাগ্যবান লোকেরাই এর উপর আমল করতে পারে। পরিণামে তারা বড়ই সফলতা লাভ করবে। যদি শয়তান তোমাদের অন্তরে কোন কুমন্ত্রণা দেয় এবং বিভ্রান্ত করতে শুরু করে অথবা শত্রুর সাথে ঝগড়ার সময় তোমাকে রাগান্বিত করে এবং ঐ মূখ হতে এড়িয়ে চলা থেকে তোমাকে বিরত রাখে এবং তাকে দুঃখ দিতে তোমাকে উত্তেজিত করে, তাহলে তুমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা কর। মূর্খ যে তোমার উপর বাড়াবাড়ি করছে তা আল্লাহ দেখছেন এবং তোমার আশ্রয় প্রার্থনাও তিনি শুনছেন। তাঁর কাছে কোন কথাই গোপন নেই। শয়তানের বিভ্রান্তি এবং ফাসাদ সৃষ্টি তোমাদের যে পরিমাণ ক্ষতি সাধন করতে পারে আল্লাহ তা সম্যক অবগত।যখন ( আরবী ) -এই আয়াত অবতীর্ণ হয় তখন বান্দা বলেঃ “ হে আমার মা’বৃদ! যদি ক্রোধ এসে পড়ে তবে কিভাবে ক্ষমা করার নীতি অবলম্বন করা যাবে?” তখন মহান আল্লাহ ( আরবী )-এই আয়াত অবতীর্ণ করেন । ঐ দুই ব্যক্তির ঘটনা পূর্বে বর্ণিত হয়েছে যে, তারা উভয়ে নবী ( সঃ )-এর সামনে লড়ে যায়। এমন কি একজনের নাসারন্ধ্র ক্রোধে ফুলে ওঠে। তখন নবী ( সঃ ) বলেনঃ ‘আমি এমন একটি কালেমা জানি যে, যদি সে ওটা পাঠ করে তবে তার ক্রোধ প্রশমিত হয়ে যাবে! কালেমাটি হচ্ছে নিম্নরূপঃ( আরবী ) অর্থাৎ “ আমি বিতাড়িত শয়তান হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি । লোকটিকে কালেমাটি বলে দেয়া হলো। তখন সে বললোঃ আমার মধ্যে কোন পাগলামি নেই। ( আরবী ) -এর প্রকৃত অর্থ হচ্ছে ফাসাদ। এই ফাসাদ ক্রোধের কারণেই হাক বা অন্য কোন কারণেই হাক। আল্লাহ পাক বলেনঃ “ হে নবী ( সঃ ) ! উত্তম রীতিতে কথা বল । শয়তান পরস্পরের মধ্যে বিশৃংখলা সৃষ্টির চেষ্টা করতে রয়েছে। ( আরবী )-এর অর্থ হচ্ছে দুষ্টামি ও কুমন্ত্রণা থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করা। আর ( আরবী ) শব্দটি মঙ্গল বা কল্যাণ কামনায় ব্যবহৃত হয়। ( আরবী )-এর হাদীসগুলো তাফসীরের শুরুতে বর্ণিত হয়েছে। সুতরাং পুনরাবৃত্তির কোন প্রয়োজন নেই।
সূরা আ'রাফ আয়াত 200 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- আর যদি তারা সন্ধি করতে আগ্রহ প্রকাশ করে, তাহলে তুমিও সে দিকেই আগ্রহী হও এবং
- সুউচ্চ জান্নাতে।
- আমি আপনার প্রতি উজ্জ্বল নিদর্শনসমূহ অবতীর্ণ করেছি। অবাধ্যরা ব্যতীত কেউ এগুলো অস্বীকার করে না।
- অতঃপর বোঝা বহনকারী মেঘের।
- আমাদের কেউ কেউ সৎকর্মপরায়ণ এবং কেউ কেউ এরূপ নয়। আমরা ছিলাম বিভিন্ন পথে বিভক্ত।
- যদি আল্লাহ লোকদেরকে তাদের অন্যায় কাজের কারণে পাকড়াও করতেন, তবে ভুপৃষ্ঠে চলমান কোন কিছুকেই ছাড়তেন
- যখন তিনি তার পিতাকে বললেনঃ হে আমার পিতা, যে শোনে না, দেখে না এবং তোমার
- অতঃপর যখন তারা তাঁর কাছ থেকে নিরাশ হয়ে গেল, তখন পরামর্শের জন্যে এখানে বসল। তাদের
- জাহান্নামের সামনে উপস্থিত করার সময় আপনি তাদেরকে দেখবেন, অপমানে অবনত এবং অর্ধ নিমীলিত দৃষ্টিতে তাকায়।
- তারা তোমার সামনে কসম খাবে যাতে তুমি তাদের প্রতি রাযী হয়ে যাও। অতএব, তুমি যদি
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা আ'রাফ ডাউনলোড করুন:
সূরা Araf mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Araf শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers