কোরান সূরা বাকারাহ্ আয়াত 207 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Baqarah ayat 207 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা বাকারাহ্ আয়াত 207 আরবি পাঠে(Baqarah).
  
   

﴿وَمِنَ النَّاسِ مَن يَشْرِي نَفْسَهُ ابْتِغَاءَ مَرْضَاتِ اللَّهِ ۗ وَاللَّهُ رَءُوفٌ بِالْعِبَادِ﴾
[ البقرة: 207]

আর মানুষের মাঝে এক শ্রেণীর লোক রয়েছে যারা আল্লাহর সন্তুষ্টিকল্পে নিজেদের জানের বাজি রাখে। আল্লাহ হলেন তাঁর বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত মেহেরবান। [সূরা বাকারাহ্: 207]

Surah Al-Baqarah in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Baqarah ayat 207


আর মানুষের মাঝে এমনও আছে যে নিজের সত্তাকে বিক্রি করে দিয়েছে আল্লাহ্‌র সন্তষ্টি কামনা ক’রে। আর আল্লাহ্ পরম স্নেহময় বান্দাদের প্রতি।


Tafsir Mokhtasar Bangla


২০৭. আবার মানুষের মাঝে কিছু রয়েছে সত্যিকার ঈমানদার। যারা নিজেদের জীবনকে আল্লাহর নিকট বিকিয়ে দিয়ে প্রভুর আনুগত্যে সেটিকে ব্যয় করে। তারা তাঁর পথে জিহাদ করে ও সর্বদা তাঁর সন্তুষ্টি কামনা করে। আর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাদের প্রতি অতি করুণাময় অতীব দয়ালু।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


পক্ষান্তরে এমন লোকও আছে, যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আত্মবিক্রয় করে দেয় [১] এবং আল্লাহ নিজ বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত দয়ার্দ্র। [১] এই আয়াত সম্পর্কে বলা হয় যে, সুহায়ব রূমী ( রাঃ )-এর ব্যাপারে নাযিল হয়েছে। যখন তিনি হিজরত করেন, তখন মক্কার কাফেররা বলল, এই ধন-সম্পদ এখানকারই উপার্জিত, বিধায় আমরা তা সাথে করে নিয়ে যেতে দেবো না। সুহায়ব ( রাঃ ) সমস্ত ধন-সম্পদ তাদেরকে সমর্পণ করে দ্বীন নিয়ে রসূল ( সাঃ )-এর নিকটে উপস্থিত হয়ে গেলেন। তিনি তাঁর ঘটনা শুনে বললেন, " সুহায়ব অতীব লাভদায়ক ব্যবসা করেছে। " কথাটি তিনি দু'বার বলেছিলেন। ( ফাতহুল ক্বাদীর ) কিন্তু এ আয়াতও ব্যাপক অর্থের, যা সমস্ত মু'মিন, আল্লাহভীরু এবং দুনিয়ার মোকাবেলায় দ্বীনকে প্রাধান্য দানকারী সকলকেই শামিল করে থাকে। কেননা, কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা বিশেষ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অবতীর্ণ হওয়া সমস্ত আয়াতের ব্যাপারে নীতি হল, 'বাচ্যার্থের ব্যাপকতাই লক্ষণীয়, অবতীর্ণের কারণবিষয়ক ঘটনার বিশেষত্ব নয়'। অর্থাৎ, আয়াতের যে অর্থ তার ব্যাপকতাকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে, বিশেষ কোন কারণে নাযিল হয়ে থাকলেও অর্থ কেবল তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। সুতরাং আখনাস বিন শুরাইক ( যার কথা পূর্বের আয়াতে এসেছে ) মন্দ চরিত্রের একটি নমুনা। যারাই এই চরিত্রের অধিকারী হবে, তারা সকলেই তার শ্রেণীভুক্ত হবে। অনুরূপ যারা উত্তম গুণাবলী এবং পূর্ণ ঈমানের গুণে গুণান্বিত হবে, তাঁদের সকলের জন্য নমুনা হবেন সুহায়ব ( রাঃ )

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


আর মানুষের মধ্যে এমন লোকও আছে, যে আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি লাভের জন্য নিজেকে বিকিয়ে দেয় []। আল্লাহ্‌ তাঁর বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত সহানুভূতিশীল। [] বিভিন্ন গ্রন্থে সহীহ সনদে বর্ণিত হয়েছে যে, এ আয়াতটি সোহাইব রুমী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু-এর এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে নাযিল হয়েছিল। তিনি যখন মক্কা থেকে হিজরত করে মদীনা অভিমুখে রওয়ানা হয়েছিলেন, তখন পথিমধ্যে একদল কোরাইশ তাকে বাধা দিতে উদ্যত হলে তিনি সওয়ারী থেকে নেমে দাঁড়ালেন এবং তার তুনীরে রক্ষিত সবগুলো তীর বের করে দেখালেন এবং কোরাইশদের লক্ষ্য করে বললেন, - হে কোরাইশগণ! তোমরা জান, আমার তীর লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় না। আমি আল্লাহ্‌র শপথ করে বলছি, যতক্ষণ পর্যন্ত তুনীরে একটি তীরও থাকবে, ততক্ষণ তোমরা আমার ধারে-কাছেও পৌছতে পারবে না। তীর শেষ হয়ে গেলে তলোয়ার চালাব। যতক্ষণ আমার প্রাণ থাকবে, ততক্ষণ আমি তলোয়ার চালিয়ে যাব। তারপর তোমরা যা চাও করতে পারবে। আর যদি তোমরা দুনিয়ার স্বার্থ কামনা কর, তাহলে শোন, আমি তোমাদেরকে মক্কায় রক্ষিত আমার ধন-সম্পদের সন্ধান বলে দিচ্ছি, তোমরা তা নিয়ে নাও এবং আমার রাস্তা ছেড়ে দাও। তাতে কোরাইশদল রায়ী হয়ে গেল এবং সোহাইব রুমী রাদিয়াল্লাহু আনহু নিরাপদে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দরবারে উপস্থিত হয়ে ঘটনা বর্ণনা করলেন। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’বার বললেন, সুহাইব লাভবান হয়েছে! সুহাইব লাভবান হয়েছে! [ মুস্তাদরাকে হাকিম: ৩/৩৯৮ ]

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


২০৪-২০৭ নং আয়াতের তাফসীর সুদ্দী ( রঃ ) বলেন যে, এই আয়াতগুলো আখনাস বিন শারীক সাকাফীর সম্বন্ধে অবতীর্ণ হয়। এই লোকটি মুনাফিক ছিল। প্রকাশ্যে সে মুসলমান ছিল বটে কিন্তু ভিতরে সে মুসলমানদের বিরোধী ছিল। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেন যে, আয়াতগুলো ঐ মুনাফিকদের সম্বন্ধে অবতীর্ণ হয় যারা হযরত যুবাইর ( রাঃ ) ও তাঁর সঙ্গীদের দুর্নাম করেছিল, যাদেরকে ‘রাজী’ নামক স্থানে শহীদ করা হয়েছিল। এই শহীদগণের প্রশংসায় শেষের আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। এবং পূর্বের আয়াতগুলো মুনাফিকদের নিন্দে করে অবতীর্ণ হয়। কেউ কেউ বলেন যে, আয়াতগুলো সাধারণ। প্রথম তিনটি আয়াত সমস্ত মুনাফিকের সম্বন্ধে অবতীর্ণ হয় এবং চুতর্থ আয়াতটি সমুদয় মুসলমানের প্রশংসায় অবতীর্ণ হয়। কাতাদাহ ( রঃ ) প্রভৃতি মনীষীর উক্তি এটাই এবং এটাই সঠিক। হযরত নাওফ বাককালী ( রঃ ) যিনি তাওরাত ও ইঞ্জীলেরও পণ্ডিত ছিলেন, বলেনঃ “ আমি এই উম্মতের কতকগুলো লোকের মন্দ-গুণ আল্লাহ তা'আলার অবতারিত গ্রন্থের মধ্যেই পাচ্ছি । বর্ণিত আছে যে, কতকগুলো লোক প্রতারণা করে দুনিয়া কামাচ্ছে। তাদের কথা তো মধুর চাইতেও মিষ্ট কিন্তু তাদের অন্তর নিম অপেক্ষাও তিক্ত। মানুষকে দেখানোর জন্যে তারা ছাগলের চামড়া পরিধান করে, কিন্তু তাদের অন্তর নেকড়ে বাঘের ন্যায়। আল্লাহ তাআলা বলেন, 'আমার উপর সে বীরতু প্রকাশ করে এবং আমার সাথে প্রতারণা করে থাকে। আমার সত্তার শপথ! আমি তার প্রতি এমন পরীক্ষা পাঠাবো যে, সহিষ্ণু লোকেরাও হতভম্ব হয়ে পড়বে।”কুরতুবী ( রঃ ) বলেন, 'আমি খুব চিন্তা ও গবেষণা করে বুঝতে পারলাম যে, এগুলো মুনাফিকদের বিশেষণ। কুরআন পাকের মধ্যেও এটা বিদ্যমান রয়েছে।' অতঃপর তিনি ( আরবি ) ( ২:২০৪ ) এই আয়াতগুলো পাঠ করেন। হযরত সাঈদ ( রঃ ) যখন অন্যান্য গ্রন্থের উদ্ধৃতি দিয়ে এ কথাটি বর্ণনা করেন তখন হযরত মুহাম্মদ বিন কা'ব ( রাঃ ) বলেছিলেন, 'এটা কুরআন মাজীদের মধ্যেও রয়েছে। এবং তিনিও এই আয়াতগুলো পাঠ করেন। সাঈদ ( রঃ ) বলেন, এই আয়াতগুলো কাদের সম্বন্ধে অবতীর্ণ হয়েছিল তা আমি জানি। শান-ই-নযুল হিসেবে আয়াতগুলো যে সম্বন্ধেই অবতীর্ণ হয়ে থাকনা কেন, হুকুম হিসেবে সাধারণ।ইবনে মাহীসানের ( রাঃ ) কিরাতে ইয়াশহাদু আল্লাহু’ রয়েছে। তখন অর্থ। হবে-তারা মুখে যা কিছুই বলুক না কেন, তাদের অন্তরের কথা আল্লাহ খুবই ভাল জানেন।' যেমন অন্য জায়গায় রয়েছে ( আরবি )অর্থাৎ ( হে মুহাম্মদ (সঃ )!) যখন মুনাফিকরা তোমার নিকট আসে তখন তারা বলে-আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই আপনি আল্লাহর রাসূল এবং আল্লাহ জানেন যে, আপনি অবশ্যই তাঁর রাসূল এবং আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, নিশ্চয়ই মুনাফিকরা মিথ্যাবাদী ।' ( ৬৩:১ ) কিন্তু জমহুরের পঠনে ‘ইয়ুশহিদুল্লাহ রয়েছে। তখন অর্থ হবে তারা জনসাধারণের সামনে নিজেদের মনের দুষ্টামি গোপন করলেও আল্লাহর সামনে তাদের অন্তরের কুফরী প্রকাশমান। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ ( আরবি )অর্থাৎ তারা মানুষ হতে গোপন করছে বটে কিন্তু আল্লাহ হতে গোপন করতে পারবে না। ( ৪:১০৮ )হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) এই অর্থ বর্ণনা করেন, মানুষের সামনে তারা ইসলাম প্রকাশ করে এবং আল্লাহর শপথ করে বলে যে, তারা মুখে যা বলছে তাই তাদের অন্তরেও রয়েছে।' আয়াতের সঠিক অর্থ এটাই বটে। আবদুর রহমান বিন যায়েদ ( রঃ ) এবং মুজাহিদ ( রঃ ) হতেও এই অর্থই বর্ণিত আছে। ইমাম ইবনে জারীরও ( রঃ ) এই অর্থই পছন্দ করেছেন। শব্দটির আভিধানিক অর্থ হচ্ছে ‘খুবই বাঁকা। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছে। ( আরবি ) অর্থাৎ এর দ্বারা তুমি যেন বাঁকা সম্প্রদায়কে ভয় প্রদর্শন কর।' ( ২০:৯৭ ) মুনাফিকদের অবস্থাও তদ্রুপ। তারা প্রমাণ স্থাপনে মিথ্যা বলে থাকে, সত্য হতে সরে যায়, সরল ও সঠিক কথা ছেড়ে দিয়ে মিথ্যার আশ্রয় নেয় এবং গালি দিয়ে থাকে। বিশুদ্ধ হাদীসে রয়েছে যে, মুনাফিকদের অবস্থা তিনটি। ( ১ ) কথা বললে মিথ্যা বলে। ( ২ ) অঙ্গীকার করলে তা ভঙ্গ করে। ( ৩ ) ঝগড়া করলে গালি দেয়।অন্য একটি হাদীসে রয়েছে যে, আল্লাহ তাআলার নিকট অতি মন্দ ঐ ব্যক্তি যে অত্যন্ত ঝগড়াটে। এর কয়েকটি সনদ রয়েছে। অতঃপর ইরশাদ হচ্ছে-এরা যেমন কটু ও কর্কশ ভাষী তেমনই এদের কার্যাবলীও অতি জঘন্য। তাদের কাজ তাদের কথার সম্পূর্ণ বিপরীত। তাদের আকীদা বা বিশ্বাস একেবারেই অসৎ। এখানে ( আরবি ) শব্দটির অর্থ হচ্ছে ‘ইচ্ছে করা। যেমন আল্লাহ পাকের নির্দেশ রয়েছে। ( আরবি ) অর্থাৎ ‘তোমরা জুম'আর নামাযের ইচ্ছে কর।' ( ৬২:৯ ) এখানে শব্দটির অর্থ দৌড়ান নয়। কেননা নামাযের জন্যে দৌড়িয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ। হাদীস শরীফে রয়েছে, যখন তোমরা নামাযের জন্যে আগমন কর তখন আরাম ও স্বস্তির সাথে এসো। কাজেই অর্থ এই যে, মুনাফিকদের উদ্দেশ্য হচ্ছে পৃথিবীর বুকে অশান্তি উৎপাদন করা এবং শস্যক্ষেত্র ও জীব-জন্তু বিনষ্ট করা। হযরত মুজাহিদ ( রঃ ) হতে এই অর্থও বর্ণিত আছে যে, ঐ মুনাফিকদের শঠতা ও অন্যায় কার্যকলাপের ফলে আল্লাহ তা'আলা বৃষ্টি বন্ধ করে দেন, ফলে শস্যক্ষেত্র ও জীব-জন্তুর ক্ষতি সাধন হয়ে থাকে। আল্লাহ তা'আলা এই ধরনের বিবাদ ও অশান্তি উৎপাদনকারীদেরকে মোটেই ভালবাসেন না। এই দুষ্ট ও অসদাচরণকারীদেরকে যখন উপদেশের মাধ্যমে বুঝানো হয়, তখন তারা আরো উত্তেজিত হয়ে উঠে এবং বিরোধিতার উত্তেজনায় পাপ কার্যে আরও বেশী লিপ্ত হয়ে পড়ে। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছে, এবং যখন তাদের সামনে আমার প্রকাশ্য নিদর্শনসমূহ পাঠ করা হয় তখন তুমি কাফিরদের মুখমণ্ডলে ক্রোধ ও অসন্তুষ্টির চিহ্ন লক্ষ্য করে থাকো। এবং পাঠকদের উপর তারা লাফিয়ে পড়ে; জেনে রেখো যে, কাফিরদের জন্যে আমার নির্দেশ হচ্ছে দেখাগ্নি এবং সেটা অত্যন্ত জঘন্য স্থান। এখানেও বলা হচ্ছে যে, তাদের জন্যে দোযখই যথেষ্ট এবং নিশ্চয় ওটা নিকৃষ্ট আশ্রয় স্থল। মুনাফিকদের জঘন্য চরিত্রের বর্ণনা দেয়ার পর এখন মুমিনদের প্রশংসা করা হচ্ছে। এই আয়াতটি হযরত সুহাইব বিন সিনানের ( রাঃ ) ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়। তিনি মক্কায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তিনি মদীনায় হিজরত করতে চাইলে মক্কার কাফিরেরা তাকে বলে, আমরা তোমাকে মাল নিয়ে মদীনা যেতে দেবো। তুমি মাল-ধন ছেড়ে গেলে যেতে পারো। তিনি সমস্ত মাল পৃথক করে নেন এবং কাফিরেরা তাঁর ঐ মাল অধিকার করে নেয়। সুতরাং তিনি ঐসব সম্পদ ছেড়ে দিয়েই মদীনায় হিজরত করেন। এই কারণেই এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। হযরত উমার ( রাঃ ) ও সাহাবা-ই-কিরামের একটি বিরাট দল তাঁর অভ্যর্থনার জন্যে ‘হুররা' নামক স্থান পর্যন্ত এগিয়ে আসেন এবং তাঁকে মুবারকবাদ জানিয়ে বলেনঃ “ আপনি বড়ই উত্তম ও লাভজনক ব্যবসা করেছেন' একথা শুনে তিনি বলেনঃ “ আপনাদের ব্যবসায়েও যেন আল্লাহ তা'আলা আপনাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত না করেন । আচ্ছা বলুন তো, এই মুবারকবাদের কারণ কি: ঐ মহান ব্যক্তিগণ বলেনঃ আপনার সম্বন্ধে রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর উপর এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছে। যখন তিনি রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর নিকট পৌছেন তখন তিনিও তাকে সুসংবাদ প্রদান করেন।মক্কার কুরাইশরা তাকে বলেছিলেঃ তুমি যখন মক্কায় আগমন কর তখন তোমার নিকট কিছুই ছিল না। তোমার নিকট যে মাল-ধন রয়েছে তা সবই তুমি এখানেই উপার্জন করেছ। সুতরাং এই মাল আমরা তোমাকে মদীনায় নিয়ে যেতে দেবো না। অতএব তিনি মাল ছেড়ে দিয়ে একমাত্র আল্লাহর দ্বীন নিয়েই রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর খিদমতে উপস্থিত হন। একটি বর্ণনায় এও রয়েছে যে, যখন তিনি হিজরতের উদ্দেশ্যে বের হন এবং কাফিরেরা তা জানতে পারে তখন তারা সবাই এসে তাকে ঘিরে নেয়। তিনি তৃণ হতে তীর বের করে নিয়ে বলেনঃ “ হে মক্কাবাসী! আমি যে কেমন তীরন্দাজ তা তোমরা ভাল করেই জান । আমার একটি তীরও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় না। তীর শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমি তোমাদেরকে বিদীর্ণ করতে থাকবো। এর পরে চলবে তরবারির যুদ্ধ। এই যুদ্ধেও আমি তোমাদের কারও চেয়ে কম নই। যখন তরবারীও ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে তখন তোমরা কাছে এসে যা ইচ্ছে তাই করতে পারো। তোমরা যদি এটা স্বীকার করে নাও তবে ভাল কথা। নচেৎ আমি তোমাদেরকে আমার সমুদয় সম্পদ দিয়ে দিচ্ছি। তোমরা সবই নিয়ে নাও এবং আমাকে মদীনা যেতে দাও।' তারা মাল নিতে সম্মত হয়ে যায়, এভাবেই তিনি হিজরত করেন। তিনি রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর নিকট পৌছার পূর্বেই ওয়াহীর মাধ্যমে এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছিল। দেখা মাত্রই রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাঁকে মুবারকবাদ দেন। অধিকাংশ মুফাসসিরের এও উক্তি রয়েছে যে, এই আয়াতটি সাধারণ প্রত্যেক মুজাহিদের ব্যাপারেই প্রযোজ্য। যেমন অন্যস্থানে রয়েছে। ‘আল্লাহ তা'আলা বেহেশতের বিনিময়ে মুমিনদের জীবন ও সম্পদ ক্রয় করে নিয়েছেন। তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করে, তারা হত্যা করে এবং নিহতও হয়। আল্লাহর এই সত্য অঙ্গীকার তাওরাত, ইঞ্জীল ও কুরআনের মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে। আল্লাহ তা'আলা অপেক্ষা বেশী সত্য অঙ্গীকারকারী আর কে হতে পারে: হে ইমানদারগণ! তোমরা এই ক্রয়-বিক্রয়ে ও আদান-প্রদানে সন্তুষ্ট হয়ে যাও, এটাই বড় কৃতকার্যতা'। হযরত হিশাম বিন আমের ( রাঃ ) যখন কাফিরদের দু'টি ব্যুহ ভেদ করে তাদের মধ্যে ঢুকে পড়েন এবং একাকীই তাদের উপর আক্রমণ চালান তখন কতকগুলো মুসলমান তাঁর এই আক্রমণকে শরীয়ত: বিরোধী মনে করেন। কিন্তু হযরত উমার ( রাঃ ) এবং হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) প্রভৃতি সাহাবীগণ এর প্রতিবাদ করেন এবং ( আরবি ) ( ২:২০৭ ) এই আয়াতটি পাঠ করে শুনান।

সূরা বাকারাহ্ আয়াত 207 সূরা

ومن الناس من يشري نفسه ابتغاء مرضات الله والله رءوف بالعباد

سورة: البقرة - آية: ( 207 )  - جزء: ( 2 )  -  صفحة: ( 32 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. হে মুমিনগণ, তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর, যখন এক সম্প্রদায় তোমাদের দিকে স্বীয় হস্ত
  2. বলুন, তোমরা পৃথিবীতে পরিভ্রমণ কর এবং দেখ তোমাদের পুর্ববর্তীদের পরিণাম কি হয়েছে। তাদের অধিকাংশই ছিল
  3. তারা যেসব সৎকাজ করবে, কোন অবস্থাতেই সেগুলোর প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করা হবে না। আর আল্লাহ
  4. তোমাদেরকে এরই প্রতিশ্রুতি দেয়া হচ্ছে বিচার দিবসের জন্যে।
  5. তারা সেখান থেকে পৃথক হবে না।
  6. তারা সকলেই তোমাদের ধর্মের; একই ধর্মে তো বিশ্বাসী সবাই এবং আমিই তোমাদের পালনকর্তা, অতএব আমার
  7. ইব্রাহীম ও মূসার কিতাবসমূহে।
  8. পক্ষান্তরে যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে, তারাই জান্নাতের অধিবাসী। তারা সেখানেই চিরকাল থাকবে।
  9. অতঃপর আমি তার দোয়া কবুল করেছিলাম, তাকে দান করেছিলাম ইয়াহইয়া এবং তার জন্যে তার স্ত্রীকে
  10. তাদেরকে যখন বলা হয়, দয়াময়কে সেজদা কর, তখন তারা বলে, দয়াময় আবার কে? তুমি কাউকে

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা বাকারাহ্ ডাউনলোড করুন:

সূরা Baqarah mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Baqarah শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Friday, November 22, 2024

Please remember us in your sincere prayers