কোরান সূরা বাকারাহ্ আয়াত 260 তাফসীর
﴿وَإِذْ قَالَ إِبْرَاهِيمُ رَبِّ أَرِنِي كَيْفَ تُحْيِي الْمَوْتَىٰ ۖ قَالَ أَوَلَمْ تُؤْمِن ۖ قَالَ بَلَىٰ وَلَٰكِن لِّيَطْمَئِنَّ قَلْبِي ۖ قَالَ فَخُذْ أَرْبَعَةً مِّنَ الطَّيْرِ فَصُرْهُنَّ إِلَيْكَ ثُمَّ اجْعَلْ عَلَىٰ كُلِّ جَبَلٍ مِّنْهُنَّ جُزْءًا ثُمَّ ادْعُهُنَّ يَأْتِينَكَ سَعْيًا ۚ وَاعْلَمْ أَنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ حَكِيمٌ﴾
[ البقرة: 260]
আর স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীম বলল, হে আমার পালনকর্তা আমাকে দেখাও, কেমন করে তুমি মৃতকে জীবিত করবে। বললেন; তুমি কি বিশ্বাস কর না? বলল, অবশ্যই বিশ্বাস করি, কিন্তু দেখতে এজন্যে চাইছি যাতে অন্তরে প্রশান্তি লাভ করতে পারি। বললেন, তাহলে চারটি পাখী ধরে নাও। পরে সেগুলোকে নিজের পোষ মানিয়ে নাও, অতঃপর সেগুলোর দেহের একেকটি অংশ বিভিন্ন পাহাড়ের উপর রেখে দাও। তারপর সেগুলোকে ডাক; তোমার নিকট দৌড়ে চলে আসবে। আর জেনে রাখো, নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী, অতি জ্ঞান সম্পন্ন। [সূরা বাকারাহ্: 260]
Surah Al-Baqarah in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Baqarah ayat 260
আর স্মরণ করো! ইব্রাহীন বললেন -- ''আমার প্রভু! আমাকে দেখাও কেমন করে তুমি মৃতকে জীবিত করো।’’ তিনি বললেন -- ''তুমি কি বিশ্বাস করো না?’’ তিনি বললেন,''না, তবে যাতে আমার হৃদয় শান্ত হয়।’’ তিনি বললেন -- ''তা হলে পাখীদের চারটি তুমি নাও ও তাদের তোমার প্রতি অনুগত করো, তারপর প্রতিটি পাহাড়ে তাদের এক একটি অংশ স্থাপন করো, তারপর তাদের ডাক দাও, তারা ছুটে আসবে তোমার কাছে। আর জেনে রেখো, নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।’’
Tafsir Mokhtasar Bangla
২৬০. হে নবী! আপনি স্মরণ করুন সে সময়ের কথা যখন ইব্রাহীম ( আলাইহিস-সালাম ) বললেন: হে আমার প্রভু! আপনি কীভাবে মৃতকে জীবিত করেন সেটা আমাকে দেখান! আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে বললেন: তুমি কি এ ব্যাপারটিকে বিশ্বাস করো না? ইব্রাহীম ( আলাইহিস-সালাম ) বললেন: হাঁ, অবশ্যই করি। তবে আমি নিজ অন্তরের আরো প্রশান্তির জন্য চাচ্ছি। তখন আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে আদেশ করে বললেন: তুমি চারটি পাখীকে নিজের কাছে নিয়ে সেগুলোকে টুকরো টুকরো করে ফেলো। এরপর সেগুলোর অংশ বিশেষকে তোমার আশপাশের সবগুলো পাহাড়ের উপর রাখো। অতঃপর সেগুলোকে ডাকলে দেখবে সেগুলো জীবিত হয়ে খুব দ্রæত তোমার দিকে ধেয়ে আসছে। হে ইব্রাহীম! তুমি জেনে রাখো, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা নিজ ক্ষমতায় পরাক্রমশালী। তিনি তাঁর আদেশ, শরীয়ত ও সৃষ্টির ব্যাপারে অত্যন্ত প্রজ্ঞাবান।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
আরো ( স্মরণ কর ) যখন ইব্রাহীম বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক! কিভাবে তুমি মৃতকে জীবিত কর, আমাকে দেখাও।’[১] তিনি বললেন, ‘তুমি কি এ বিশ্বাস কর না?’ সে বলল, ‘অবশ্যই ( বিশ্বাস করি )। কিন্তু আমার মনকে প্রবোধ দানের জন্য ( দেখতে চাই )!’ তিনি বললেন, ‘তবে চারটি পাখী ধর এবং ঐগুলিকে ( পুষে ) তোমার বশীভূত কর ( তা যবেহর পর টুকরা-টুকরা করে সম্মিলিত কর )। তারপর তাদের এক এক অংশ এক এক পাহাড়ে স্থাপন কর। অতঃপর ঐগুলিকে ডাক দাও, ( দেখবে, ) ঐগুলি দ্রুতগতিতে তোমার নিকট এসে উপস্থিত হবে। আর জেনে রাখ যে, আল্লাহ প্রবল পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।’ [১] এটা মৃতকে জীবিত করার দ্বিতীয় ঘটনা, যা দেখানো হয়েছিল একজন অতীব সম্মানিত পয়গম্বর ইবরাহীম ( আঃ )-এর আশা পূরণের এবং তাঁর আন্তরিক প্রশান্তি লাভের জন্য। চারটি কোন্ কোন্ পাখি ছিল? মুফাসসিরগণ বিভিন্ন নাম উল্লেখ করেছেন। তবে নাম নির্দিষ্টীকরণে কোন লাভ নেই। এই কারণেই মহান আল্লাহ তাদের নামের উল্লেখ করেননি। চারটি বিভিন্ন প্রকারের পাখি ছিল। فَصُرْهُنَّ এর একটি অর্থ করা হয়েছে, أَمِلْهُنَّ ( আকৃষ্ট করে নাও ) অর্থাৎ, পোষ মানিয়ে নাও। যাতে জীবিত হওয়ার পর সহজেই চিনে নিতে পারো যে, এগুলো সেই পাখিই এবং কোন প্রকারের সন্দেহের অবকাশ না থাকে। তবে এই অর্থে ثُمَّ قَطِّعْهنَ ( অতঃপর সেগুলোকে টুকরা টুকরা কর ) শব্দ ঊহ্য মেনে নিতে হবে। দ্বিতীয় অর্থ করা হয়েছে, قَطِّعْهُنَّ ( সেগুলোকে টুকরা টুকরা করে নাও )। এই অর্থে কোন কিছু ঊহ্য না মেনেও মানে পরিষ্কার হয়ে যায়। অর্থাৎ, সেগুলোকে টুকরা টুকরা করে তাদের অংশগুলো একে অপরের সাথে মিশ্রিত করে বিভিন্ন পাহাড়ে রেখে দাও। অতঃপর সেগুলোকে ডাকো, দেখবে তারা জীবিত হয়ে তোমার কাছে চলে আসবে। ঠিক তা-ই হল। পূর্বের ও বর্তমানের কোন কোন মুফাসসিরগণ ( যাঁরা সাহাবী ও তাবেঈনদের তাফসীরের এবং সালফে-সালেহীনদের তরীকার কোন গুরুত্ব দেন না তাঁরা ) فَصُرْهُنَّ এর অনুবাদ কেবল 'পোষ মানিয়ে নাও' করেছেন। আর পাখিগুলোকে যবেহ করার পর টুকরা টুকরা করে পাহাড়ে তার অংশগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দেওয়ার, তারপর মহান আল্লাহর মহাশক্তি দ্বারা সেগুলোর আপোসে জোড়া লাগার কথা স্বীকার করেন না। বলা বাহুল্য এ অনুবাদ সঠিক নয়। এ রকম অনুবাদ ও ব্যাখ্যা করলে ঘটনার সমস্ত অলৌকিকতাই শেষ হয়ে যায় এবং মৃতকে জীবিত করে দেখানোর প্রশ্ন থেকেই যায়। অথচ এই ঘটনাকে উল্লেখ করার উদ্দেশ্যই হল, মহান আল্লাহর মৃতকে জীবিত করার গুণ ও তাঁর মহাশক্তিকে প্রমাণ করা। একটি হাদীসে নবী করীম ( সাঃ ) ইবরাহীম ( আঃ )-এর এই ঘটনার উল্লেখ করে বলেছেন, " আমরা ইবরাহীম ( আঃ ) অপেক্ষা সন্দেহ করার অধিকার বেশী রাখি। " ( বুখারী ৩৩২৭নং ) আর এর অর্থ এই নয় যে, ইবরাহীম ( আঃ ) আল্লাহর কুদরতে সন্দেহ পোষণ করেছিলেন, অতএব সন্দেহ করার অধিকার তাঁর চেয়ে আমাদের বেশী; বরং উদ্দেশ্য হল, তাঁর যে সন্দেহ হতে পারে তার খন্ডন করা। অর্থাৎ, ইবরাহীম ( আঃ ) মৃতকে জীবিত করার ব্যাপারে কোন প্রকার সন্দেহ করেননি। যদি তিনি এ ব্যাপারে সন্দেহ করে থাকতেন, তাহলে অবশ্যই সন্দেহ করার ব্যাপারে আমাদের অধিকার তাঁর চেয়ে বেশী হত। ( অধিক জানার জন্য দ্রষ্টব্যঃ ফাতহুল ক্বাদীর )
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর যখন ইব্রাহীম বলল, ‘হে আমার রব! কিভাবে আপনি মৃত কে জীবিত করেন দেখান’, তিনি বললেন, ‘তবে কি আপনি ঈমান আনেন নি?’ তিনি বললেন, ‘অবশ্যই হ্যাঁ, কিন্তু আমার মন যাতে প্রশান্ত হয় [ ১ ] ! আল্লাহ্ বললেন, ‘তবে চারটি পাখি নিন এবং তাদেরকে আপনার বশীভুত করুন। তারপর সেগুলোর টুকরো অংশ এক এক পাহাড়ে স্থাপন করুন। তারপর সেগুলোকে ডাকুন, সেগুলো আপনার নিকট দৌড়ে আসবে। আর জেনে রাখুন, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ প্রবল পরাক্রমশালী , প্রজ্ঞাময় [ ২ ]। [ ১ ] আয়াতে বর্ণিত কাহিনীর সার-সংক্ষেপ হচ্ছে এই যে, ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম আল্লাহ্ তা'আলার কাছে আরয করলেনঃ আপনি কিভাবে মৃতকে পুনজীবিত করবেন, তা আমাকে প্রত্যক্ষ করান। আল্লাহ্ তা'আলা এরশাদ করলেনঃ ‘এরূপ আকাংখা ব্যক্ত করার কারণ কি? আমার সর্বময় ক্ষমতার প্রতি কি আপনার আস্থা নেই?’ ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম নিজের আস্থা বিবৃত করে নিবেদন করলেনঃ আস্থা ও বিশ্বাস তো অবশ্যই আছে। কেননা, আপনার সর্বময় ক্ষমতার নিদর্শন সর্বদা, প্রতি মুহুর্তেই দেখতে পাচ্ছি এবং চিন্তাশীল ব্যক্তিমাত্রই তার নিজের সত্তা থেকে শুরু করে এ বিশ্ব জাহানের প্রতিটি অণু-পরমাণুতে এর প্রমাণ দেখতে পাচ্ছে। কিন্তু মানব প্রকৃতির সাধারণ প্রবণতা হচ্ছে যে, অন্তরের বিশ্বাস যতই দৃঢ় হোক, চোখে না দেখা পর্যন্ত অন্তরে পূর্ণ প্রশান্তি আসতে চায় না, প্রশ্নের পর প্রশ্ন জাগতে থাকে; এটা কি করে হবে, না জানি এর প্রক্রিয়াটা কেমন? মনের মাঝে এ ধরনের প্রশ্ন উদয় হওয়ার ফলে পূর্ণ প্রশান্তি লাভ হতে চায় না। নানা প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। এ কারণেই ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম এরূপ নিবেদন করেছিলেন, যাতে মৃত ব্যক্তিকে জীবিতকরণঃ সংক্রান্ত চিন্তা দ্বিধাগ্রস্ত না হয়ে পড়ে। অধিকন্তু মনে যাতে স্থিরতা আসে; নানা প্রশ্নের জাল যেন অন্তরে বাসা বাঁধতে না পারে এবং মনের দৃঢ়তা যাতে বজায় থাকে। আল্লাহ্ তা'আলা তার প্রার্থনা কবুল করলেন এবং বিষয়টি প্রত্যক্ষ করাবার জন্য একটি অভিনব ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন, যাতে মুশরিকদের যাবতীয় সন্দেহ-সংশয়ও দূর হয়ে যায়। প্রক্রিয়াটি ছিল এই যে, ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালামকে চারটি পাখি ধরে নিজের কাছে রেখে সেগুলোকে এমনভাবে লালন-পালন করতে নির্দেশ দেয়া হল, যাতে সেগুলো সম্পূর্ণরূপে পোষ মেনে যায় এবং ডাকামাত্রই হাতের কাছে চলে আসে। তদুপরি তিনি যেন সেগুলোকে ভালভাবে চিনতেও পারেন। পরে নির্দেশ হল, পাখীগুলোকে জবাই করে এগুলোর হাড়-মাংস, পাখা ইত্যাদির সবগুলোকেই কিমায় পরিণত করুন, তারপর সেগুলোকে ভাল করে মিশিয়ে নিয়ে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করে নিজের পছন্দমত কয়েকটি পাহাড়ে এক-একটি ভাগ রেখে দিন। তারপর এদেরকে ডাকুন। তখন এগুলো আল্লাহ্র কুদরতে জীবিত হয়ে উড়ে আপনার কাছে চলে আসবে। ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম তা-ই করলেন। অতঃপর এদের যখন ডাকলেন, সঙ্গে সঙ্গে হাড়ের সাথে হাড়, পাখার সাথে পাখা, গোশতের সাথে গোশত, রক্তের সাথে রক্ত মিলে পূর্বের রূপ ধারণ করল এবং তার কাছে উড়ে এসে উপস্থিত হল। [ তাফসীরে কুরতুবী: ৪/৩১৪ ] [ ২ ] পরাক্রমশালী হওয়ার মধ্যে সর্বশক্তিমানতা বিধৃত হয়েছে; আর প্রজ্ঞাময় বলে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, কোন বিশেষ হেকমতের কারণেই প্রত্যেককে মৃত্যুর পর পুনজীবন প্রত্যক্ষ করানো হয় না। নতুবা প্রত্যেককে এটা প্রত্যক্ষ করানো আল্লাহ্ তা'আলার পক্ষে মোটেই কঠিন নয়। সুতরাং প্রত্যক্ষ না করানোর মধ্যে ‘ঈমান বিল-গায়েব’ বা গায়েবের উপর ঈমান স্থাপন করার বৈশিষ্ট্য অক্ষুন্ন থাকে।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
হযরত ইবরাহীম ( আঃ )-এর প্রশ্ন করার অনেক কারণ ছিল। প্রথম এই যে, যেহেতু তিনি এই দলীলই পাপাচারী নমরূদের সামনে পেশ করেছিলেন, তাই তিনি চেয়েছিলেন যে, প্রগাঢ় বিশ্বাস তো রয়েছেই, কিন্তু যেন প্রগাঢ়তম বিশ্বাস জন্মে। অর্থাৎ যেন তিনি চাচ্ছিলেনঃ ‘বিশ্বাস তো আছেই। কিন্তু দেখতেও চাই; সহীহ বুখারী শরীফের মধ্যে এই আয়াতের ব্যাপারে একটি হাদীস রয়েছে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ ইবরাহীম ( আঃ ) অপেক্ষা আমরা সন্দেহ পোষণের বেশী হকদার । কেননা তিনি বলেছিলেনঃ হে আমার প্রভু! কিরূপে আপনি মৃতকে জীবিত করেন তা আমাকে প্রদর্শন করুন। এই রকমই সহীহ মুসলিম শরীফেও হযরত ইয়াহইয়া বিন ওয়াহাব হতে বর্ণিত আছে। এর দ্বারা কোন অজ্ঞ ব্যক্তি যেন মনে না করে যে, আল্লাহ তা'আলার এই বিশেষণ সম্পর্কে হযরত ইবরাহীম ( আঃ ) এর কোন সন্দেহ ছিল। আল্লাহ তা'আলা যে বলেন, চারটি পাখী গ্রহণ কর, এই কথানুসারে হযরত ইবরাহীম ( আঃ ) যে কি কি পাখি গ্রহণ করেছিলেন সেই ব্যাপারে মুফাসসিরদের কয়েকটি উক্তি রয়েছে। কিন্তু স্পষ্ট কথা এই যে, এর জ্ঞান আমাদের কোন উপকার করতে পারে না এবং তা না জানায় আমাদের কোন ক্ষতিও নেই। কেউ কেউ বলেন যে, ওগুলো ছিল কলঙ্গু, ময়ূর, মোরগ, ও কবুতর। আবার কউ কেউ বলেন যে, ওগুলো ছিল জলকুকুট, সীমুরগের ( প্রবাদোক্তপাখী ) বাচ্চা, মোরাগ এবং ময়ূর। কারও কারও মতে ওগুলো ছিল কবুতর, মোরগ, ময়ূর ও কাক। অতঃপর ঐগুলো কেটে খণ্ড খণ্ড কর’ হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) ( আরবি )-এর অর্থ এটাই গ্রহণ করেছেন। অন্য বর্ণনায় রয়েছেঃ ( আরবি )-এর অর্থ হচ্ছে ‘ঐগুলো তোমার নিকট সম্মিলিত কর।' অতঃপর যখন তিনি পাখীগুলো পেয়ে যান তখন ওগুলো জবাই করে খণ্ড খণ্ড করেন এবং ঐ চারটি পাখীর খণ্ডগুলো সব একত্রে মিলিয়ে দেন। এরপর ঐগুলো চারটি পাহাড়ের উপর বা সাতটি পাহাড়ের উপর রেখে দেন এবং ওগুলোর মাথা নিজের হাতে রাখেন। তারপর আল্লাহ তা'আলার নির্দেশক্রমে ওদেরকে আহবান করেন। তিনি যেই পাখীর নাম ধরে ডাক দিতেন ওর ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত পালকগুলো এদিক ওদিক হতে উড়ে এসে পরস্পর মিলিত হয়ে যেতো। অনুরূপভাবে রক্ত রক্তের সাথে মিলে যেতো এবং অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো যেই যেই পাহাড়ে ছিল সবই পরস্পর মিলে যেতো। অতঃপর ওটা পূর্ণ পাখী হয়ে তাঁর নিকট উড়ে আসতো। তিনি ওর উপর অন্য পাখীর মাথা লাগালে তা সংযুক্ত হতো না। কিন্তু ওর নিজের মাথা দিলে যুক্ত হয়ে যেতো। অবশেষে ঐ চারটি পাখী জীবিত হয়ে উড়ে যায় এবং আল্লাহ তা'আলার ক্ষমতা বলে মৃতের জীবিত হওয়ার এই বিশ্বাস উৎপাদক দৃশ্য হযরত ইবরাহীম ( আঃ ) স্বচক্ষে দর্শন করেন।অতঃপর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “ নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা পরাক্রান্ত বিজ্ঞানময় । কোন কাজেই তিনি অসমর্থ হন না। তিনি যা চান কোন প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই তা সম্পন্ন হয়ে যায়। প্রত্যেক জিনিসই তার অধিকারে রয়েছে। তিনি তাঁর সমুদয় কথা ও কাজে মহাবিজ্ঞানময়। অনুরূপভাবে নিয়ম-শঙ্খলার ব্যাপারে ও শরীয়তের নির্ধারণ ব্যাপারেও তিনি মহাবিজ্ঞতার পরিচয় দিয়ে থাকেন। হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস ( রাঃ ) বলেনঃ “ মহান আল্লাহ হযরত ইবরাহীম ( আঃ )-কে ‘তুমি কি বিশ্বাস কর না:' এই প্রশ্ন করা এবং হযরত ইবরাহীমের ( আঃ ) হ্যা, বিশ্বাস তো করি, কিন্তু অন্তরকে পরিতৃপ্ত করতে চাই' এই উত্তর দেয়া, এই আয়াতটি অন্যান্য সমস্ত আয়াত অপেক্ষা বেশী আশা প্রদানকারী বলে আমার মনে হয় ।” ভাবার্থ এই যে, কোন ঈমানদারের অন্তরে কোন সময় যদি কোন শয়তানী সংশয় ও সন্দেহ এসে যায় তবে এই জন্যে আল্লাহ তাকে ধরবেন না। হযরত আবদুল্লাহ বিন আমর বিন আ’সের ( রাঃ ) সাথে হযরত আবদুল্লাহ বিন আব্বাসের ( রাঃ ) সাক্ষাৎ হলে আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস ( রাঃ ) তাকে জিজ্ঞেস করেনঃ কুরআন মাজীদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বেশী আশা উৎপাদনকারী আয়াত কোটি: হযরত আবদুল্লাহ বিন আমর ( রাঃ ) বলেনঃ ( আরবি ) যুক্ত আয়াতটি। যাতে বলা হয়েছেঃ “ হে আমার পাপী বান্দারা! তোমরা নিরাশ হয়ো না, আমি তোমাদের সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দেবো ।' তখন হযরত আবদুল্লাহ বিন আব্বাস ( রাঃ ) বলেনঃ “ আমার মতে তো সবচেয়ে বেশী আশা উৎপাদনকারী আয়াত হচ্ছে হযরত ইবরাহীমের ( আঃ ) “হে আল্লাহ! তুমি কিরূপে মৃতকে জীবিত কর তা আমাকে প্রদর্শন কর' এই উক্তি এবং আল্লাহর তুমি কি বিশ্বাস কর না: এই প্রশ্ন ও তার বিশ্বাস করি, কিন্তু আমার অন্তরকে পরিতৃপ্ত করতে চাই । উক্ত আয়াতটি ( মুসনাদ-ই-আবদুর রাজ্জাক ও মুসনাদ-ই-ইবনে আবি হাতিম ইত্যাদি )।
সূরা বাকারাহ্ আয়াত 260 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- হে আমাদের পালনকর্তা! তুমি আমাদেরকে কাফেরদের জন্য পরীক্ষার পাত্র করো না। হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের
- হে আমাদের পালনকর্তা, আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে এবং সব মুমিনকে ক্ষমা করুন, যেদিন হিসাব কায়েম হবে।
- যখন তারা কান পেতে আপনার কথা শোনে, তখন তারা কেন কান পেতে তা শোনে, তা
- নিশ্চয় আমি মানুষকে শ্রমনির্ভররূপে সৃষ্টি করেছি।
- আর সামুদ জাতি প্রতি তাদের ভাই সালেহ কে প্রেরণ করি; তিনি বললেন, হে আমার জাতি।
- বললেন তুই এখান থেকে যা। এখানে অহংকার করার কোন অধিকার তোর নাই। অতএব তুই বের
- কিন্তু যারা অতঃপর তওবা করে নেবে এবং সৎকাজ করবে তারা ব্যতীত, নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল ও
- যখন সব কাজের ফায়সলা হয়ে যাবে, তখন শয়তান বলবেঃ নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে সত্য ওয়াদা দিয়েছিলেন
- বলুনঃ আমি তো কেবল ওহীর মাধ্যমেই তোমাদেরকে সতর্ক করি, কিন্তু বধিরদেরকে যখন সতর্ক করা হয়,
- কিন্তু যারা এরপর তওবা করে এবং সংশোধিত হয়, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম মেহেরবান।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা বাকারাহ্ ডাউনলোড করুন:
সূরা Baqarah mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Baqarah শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers