কোরান সূরা মু'মিনুন আয়াত 30 তাফসীর
﴿إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَاتٍ وَإِن كُنَّا لَمُبْتَلِينَ﴾
[ المؤمنون: 30]
এতে নিদর্শনাবলী রয়েছে এবং আমি পরীক্ষাকারী। [সূরা মু'মিনুন: 30]
Surah Al-Muminun in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Muminun ayat 30
নিঃসন্দেহ এতে তো নিদর্শন রয়েছে, আর আমরা তো শৃঙ্খলাবদ্ধ করছিলাম।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৩০. নিশ্চয়ই উপরোল্লিখিত নূহ ( আলাইহিস-সালাম ) ও তাঁর সাথের মু’মিনদেরকে নাজাত দেয়া, কাফিরদেরকে ধ্বংস করা, রাসূলদেরকে সাহায্য করা ও তাঁদের প্রতি মিথ্যারোপকারীদেরকে ধ্বংস করার মাঝে আমার কুদরতের সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। আমি নূহ ( আলাইহিস-সালাম ) এর সম্প্রদায়ের নিকট তাঁকে পাঠিয়ে তাদেরকে মূলতঃ পরীক্ষা করেছি। যাতে মু’মিন কাফির থেকে এবং অনুগত পাপী থেকে সুস্পষ্টভাবে পৃথক হয়ে যায়।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
এতে অবশ্যই বহু নিদর্শন রয়েছে; [১] আমি তো তাদেরকে পরীক্ষা করেছিলাম। [২] [১] নূহ ( আঃ )-এর এই ঘটনায় মু'মিনদের পরিত্রাণ ও কাফেরদের ধ্বংসের মধ্যে নিদর্শন রয়েছে। আর তা এই যে, আম্বিয়াগণ যা কিছু আল্লাহর পক্ষ থেকে নিয়ে আসেন, তাতে তাঁরা সত্য। আর এটাও যে আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান। হক ও বাতিলের সংঘর্ষের ব্যাপারে তিনি পূর্ণ অবগত থাকেন এবং যথাসময়ে তিনি তার প্রতিকার করেন। অতঃপর বাতিলপন্থীদেরকে এমনভাবে পাকড়াও করেন যে, তাঁর কবল হতে তাদের বাঁচার কোন পথ থাকে না। [২] আর আমি নবী-রসূলগণ দ্বারা এভাবেই যুগে যুগে মানুষের পরীক্ষা নিয়েছি।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
এতে অবশ্যই রয়েছে বহু নিদর্শন [ ১ ]। আর আমরা তো তাদেরকে পরীক্ষা করেছিলাম [ ২ ]। [ ১ ] অর্থাৎ ঈমানদারদেরকে নাজাত দেয়া এবং কাফেরদেরকে ধ্বংস করার মধ্যে রয়েছে অনেক নিদর্শন যেগুলো থেকে শিক্ষা নেয়া জরুরী। এ শিক্ষাগুলোর মধ্যে রয়েছে, তাওহীদের দাওয়াতদানকারী নবীগণ সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন এবং শির্কপন্থী কাফেররা ছিল মিথ্যার উপর প্রতিষ্ঠিত। সুতরাং নবী-রাসূলরা সত্যবাদী। তারা যা আল্লাহ্র কাছ থেকে নিয়ে এসেছে তা হক। আর তিনি যা ইচ্ছা তা করতে সক্ষম। সবকিছু তার জ্ঞানে রয়েছে। [ ইবন কাসীর ] আর রাসূলের যুগে মক্কায় সে একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল যা এক সময় ছিল নূহ ও তার জাতির মধ্যে। এর পরিণামও তার চেয়ে কিছু ভিন্ন হবার নয়। আল্লাহ্র ফায়সালা যতই বিলম্ব হোক না কেন একদিন অবশ্যই তা হয়েই যায় এবং অনিবাৰ্যভাবে তা হয় সত্যপন্থীদের পক্ষে এবং মিথ্যাপহীদের বিপক্ষে। [ ২ ] উদ্দেশ্য এই যে, আল্লাহ্ রাসূলদেরকে পাঠিয়ে তাদেরকে পরীক্ষা করে মানুষের জন্য অথবা ফেরেশতাদের জন্য প্রকাশ করতে চাইলেন যে, কে আনুগত্য করে আর কে অবাধ্য হয়। [ ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
আল্লাহ তা'আলা সংবাদ দিচ্ছেন যে, হযরত নূহ ( আঃ ) যখন তাঁর কওমের হিদায়াত প্রাপ্তি হতে নিরাশ হয়ে গেলেন তখন তিনি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করলেনঃ হে আমার প্রতিপালক! আমাকে সাহায্য করুন! যারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলছে তাদের উপর আমাকে জয়যুক্ত করুন! যেমন অন্য আয়াতে বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ তখন সে তার প্রতিপালককে আহ্বান করে বলেছিলঃ আমি তো অসহায়, অতএব, তুমি প্রতিবিধান কর ।” ( ৫৪:১০ ) তৎক্ষণাৎ মহান আল্লাহ তাঁর কাছে অহী করলেনঃ তুমি আমার তত্ত্বাবধানে ও আমার অহী অনুযায়ী নৌযান নির্মাণ কর এবং তাতে প্রত্যেক জীবের এক এক জোড়া উঠিয়ে নাও এবং তোমার পরিবার-পরিজনকেও উঠিয়ে নাও তাদেরকে ছাড়া যাদের বিরুদ্ধে পূর্বেই সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। তাদের সম্পর্কে তুমি আমাকে কিছু বলো না, তারা তো নিমজ্জিত হয়ে যাবে। তারা হলো তাঁর কওমের কাফির লোকেরা এবং তাঁর স্ত্রী ও তাঁর পুত্র। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সবচেয়ে ভাল জনেন। এর পূর্ণ ঘটনা সূরায়ে হূদের তাফসীরে গত হয়েছে। সুতরাং এখানে পুনরাবৃত্তির কোন প্রয়োজন নেই। মহান আল্লাহ বলেন, যখন তুমি ও তোমার সঙ্গীরা নৌযানে আসন গ্রহণ করবে তখন বলবেঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই, যিনি আমাদেরকে উদ্ধার করেছেন যালিম সম্প্রদায় হতে। যেমন মহামহিমান্বিত আল্লাহ অন্য জায়গায় বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ এবং যিনি তোমাদের জন্যে সৃষ্টি করেন এমন নৌযান ও চতুষ্পদ জন্তু যাতে তোমরা আরোহণ কর । যাতে তোমরা ওদের পৃষ্ঠে স্থির হয়ে বসতে পার, তারপর তোমাদের প্রতিপালকের অনুগ্রহ স্মরণ কর যখন তোমরা ওর উপর স্থির হয়ে বস; এবং বলঃ পবিত্র ও মহান তিনি, যিনি এগুলোকে আমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন, যদিও আমরা সমর্থ ছিলাম না এগুলোকে বশীভূত করতে। আমরা আমাদের প্রতিপালকের নিকট অবশ্যই প্রত্যাবর্তন করাবো।” ( ৪৩:১২-১৪ ) হযরত নূহ ( আঃ ) এ কথাই বলেন। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ সে বললোঃ এতে আরোহণ কর, আল্লাহর নামে এর গতি ও স্থিতি, আমার প্রতিপালক অবশ্যই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু ।” ( ১১:৪১ ) সুতরাং নৌকা চলতে শুরু করার সময়ও তিনি আল্লাহকে স্মরণ করেন এবং যখন ওটা থামবার উপক্রম হয় তখনও তিনি আল্লাহকে স্মরণ করেন। তিনি প্রার্থনা করেনঃ হে আমার প্রতিপালক! আমাকে এমনভাবে অবতরণ করান যা হবে কল্যাণকর; আর আপনিই শ্রেষ্ঠ অবতারণকারী। এতে অর্থাৎ মুমিনদের মুক্তি ও কাফিরদের ধ্বংসের মধ্যে নবীদের সত্যতার নিদর্শন রয়েছে এবং এই আলামত রয়েছে যে, আল্লাহ যা চান তাই করে থাকেন। তিনি প্রত্যেক জিনিসের উপর ক্ষমতাবান। তিনি সবকিছু অবগত আছেন।নিশ্চয়ই তিনি রাসূলদেরকে পাঠিয়ে স্বীয় বান্দাদেরকে পরীক্ষা করে থাকেন।
সূরা মু'মিনুন আয়াত 30 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- কখনই নয়, তারা তাদের এবাদত অস্বীকার করবে এবং তাদের বিপক্ষে চলে যাবে।
- আর ও একটি বিজয় রয়েছে যা এখনও তোমাদের অধিকারে আসেনি, আল্লাহ তা বেষ্টন করে আছেন।
- আমি তাঁকে দুনিয়াতে দান করেছি কল্যাণ এবং তিনি পরকালেও সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভূক্ত।
- তবে যে মুশরিকদের সাথে তোমরা চুক্তি বদ্ধ, অতপরঃ যারা তোমাদের ব্যাপারে কোন ত্রুটি করেনি এবং
- না তারা বলে যে, তিনি পাগল ? বরং তিনি তাদের কাছে সত্য নিয়ে আগমন করেছেন
- আর আমার আদেশ যখন উপস্থিত হল, তখন আমি নিজ রহমতে হুদ এবং তাঁর সঙ্গী ঈমানদারগণকে
- তিনি আল্লাহ; যিনি নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলের সবকিছুর মালিক। কাফেরদের জন্যে বিপদ রয়েছে, কঠোর আযাব;
- নভোমন্ডলে ও ভুমন্ডলে যা কিছু আছে, সব তাঁরই। সবাই তাঁর আজ্ঞাবহ।
- আমি যাদেরকে গ্রন্থ দান করেছি, তারা তা যথাযথভাবে পাঠ করে। তারাই তৎপ্রতি বিশ্বাস করে। আর
- এমনিভাবে আমি তাকে প্রতিফল দেব, যে সীমালঙ্ঘন করে এবং পালনকর্তার কথায় বিশ্বাস স্থাপন না করে।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা মু'মিনুন ডাউনলোড করুন:
সূরা Muminun mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Muminun শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers