কোরান সূরা মায়িদা আয়াত 31 তাফসীর
﴿فَبَعَثَ اللَّهُ غُرَابًا يَبْحَثُ فِي الْأَرْضِ لِيُرِيَهُ كَيْفَ يُوَارِي سَوْءَةَ أَخِيهِ ۚ قَالَ يَا وَيْلَتَا أَعَجَزْتُ أَنْ أَكُونَ مِثْلَ هَٰذَا الْغُرَابِ فَأُوَارِيَ سَوْءَةَ أَخِي ۖ فَأَصْبَحَ مِنَ النَّادِمِينَ﴾
[ المائدة: 31]
আল্লাহ এক কাক প্রেরণ করলেন। সে মাটি খনন করছিল যাতে তাকে শিক্ষা দেয় যে, আপন ভ্রাতার মৃতদেহ কিভাবে আবৃত করবে। সে বললঃ আফসোস, আমি কি এ কাকের সমতুল্যও হতে পারলাম না যে, আপন ভ্রাতার মৃতদেহ আবৃত করি। অতঃপর সে অনুতাপ করতে লাগল। [সূরা মায়িদা: 31]
Surah Al-Maidah in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Maidah ayat 31
তারপর আল্লাহ্ একটি কাককে নিযুক্ত করলেন মাটি আচঁড়াতে যেন তাকে দেখানো যায় কেমন ক’রে সে তার ভাইয়ের মৃতদেহ ঢাকবে। সে বললে -- ''হায় দুর্ভাগ্য! আমি কি এই কাকের মতো হবার জন্য এতই দুর্বল হয়ে গেছি, কাজেই আমি যেন আমার ভাইয়ের শব ঢাকতে পারি?’’ সেজন্য পরমুহূর্তে সে হলো অনুতপ্তদের দলের
Tafsir Mokhtasar Bangla
৩১. তারপর আল্লাহ তা‘আলা একটি কাক পাঠালেন যে আরেকটি মৃত কাককে দাফন করার জন্য তার সামনেই মাটি খনন করতে লাগলো। যাতে সে কাবীলকে জানাতে পারে কীভাবে সে তার ভাইয়ের শরীর লুকাতে পারে। সে বললো: ধিক আমার! আমি এ কাকটির মতোও হতে পারলাম না যাতে আমি আমার ভাইয়ের লাশটি লুকাতে পারি? ফলে সে খুবই অনুতপ্ত হলো।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
অতঃপর আল্লাহ এক কাক পাঠালেন, যে তার ভায়ের শবদেহ কিভাবে গোপন করা যায়, তা দেখাবার উদ্দেশ্যে মাটি খনন করতে লাগল। সে বলল, ‘হায়! আমি কি এ কাকের মতও হতে পারলাম না, যাতে আমার ভায়ের শবদেহ গোপন করতে পারি?’ অতঃপর সে অনুতপ্ত হল।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
অতঃপর আল্লাহ এক কাক পাঠালেন, যে তার ভাইয়ের মৃতদেহ কিভাবে গোপন করা যায় তা দেখাবার জন্য মাটি খুঁড়তে লাগল [ ১ ]। সে বলল, ‘হায়! আমি কি এ কাকের মতও হতে পারলাম না, যাতে আমার ভাইয়ের মৃতদেহ গোপন করতে পারি?’ অতঃপর সে লজ্জিত হল। [ ১ ] ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, একটি কাক আরেকটি মৃত কাকের নিকট এসে তার উপর মাটি দিতে দিতে সেটাকে ঢেকে দিল। এটা দেখে যে তার ভাইকে হত্যা করেছে সে বলতে লাগল, হায়! আমি কি এ কাকের মতও হতে পারলাম না। [ তাবারী ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
২৭-৩১ নং আয়াতের তাফসীর: এ কাহিনীতে হিংসা-বিদ্বেষ, ঔদ্ধত্য ও অহংকারের মন্দ পরিণামের বর্ণনা দেয়া হয়েছে যে, কিভাবে আদম ( আঃ )-এর দুই সহোদর পুত্রের মধ্যে বিবাদের সৃষ্টি হয় এবং একজন আল্লাহর ভয়ে অত্যাচারিত অবস্থায় মারা যায় ও জান্নাতে স্বীয় বাসস্থান বানিয়ে নেয়; আর অপরজন তার প্রতি অত্যাচার ও বাড়াবাড়ি করে বিনা কারণে তাকে হত্যা করে ফেলে এবং উভয় জগতে ধ্বংস হয়ে যায়। আল্লাহ বলেনঃ “ হে নবী ( সঃ ) ! আহলে কিতাবদেরকে তুমি হযরত আদম ( আঃ )-এর দু'টি সন্তানের সঠিক কাহিনী শুনিয়ে দাও ।' তাদের নাম ছিল হাবীল ও কাবীল। বর্ণিত আছে, ঐ সময়টা ছিল দুনিয়ার প্রাথমিক অবস্থা। তাই সেই সময় একই উদরে দুটো সন্তান জন্মগ্রহণ করতো। একটি ছেলে ও একটি মেয়ে। তখন একটি গর্ভের ছেলের সাথে আর একটি গর্ভের মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেয়া হতো। হাবীলের যমজ বোন সুন্দরী ছিল না, কিন্তু কাবীলের যমজ বোনটি সুন্দরী ছিল। সুতরাং কাবীল নিজের যমজ বোনকেই বিয়ে করতে চেয়েছিল। হযরত আদম ( আঃ ) তাকে এ কাজ করতে নিষেধ করেন। শেষ পর্যন্ত ফায়সালা হলো যে, তারা উভয়ে যেন আল্লাহর নামে কিছু কুরবানী করে। যার কুরবানী ককূল হবে, মেয়েটির সাথে তারই বিয়ে দেয়া হবে। হাবীলের কুরবানী ককূল হয়, যার বর্ণনা কুরআন কারীমের এ আয়াতগুলোতে রয়েছে। মুফাসসিরদের উক্তিগুলো নিম্নে দেয়া হলোঃহযরত আদম ( আঃ )-এর ঔরসজাত সন্তানদের বিয়ের নিয়ম যা উপরে উল্লিখিত হলো তা বর্ণনা করার পর বর্ণিত আছে যে, বড় ভাই কাবীল কৃষি কাজ করতো এবং ছোট ভাই হাবীল ছাগলের মালিক ছিল। হাবীলের বোনের তুলনায় কাবীলের বোনটি ছিল অপেক্ষাকৃত সুন্দরী। তাকে বিয়ে করার জন্যে যখন হাবীলের প্রস্তাব যায়। তখন কাবীল তা প্রত্যাখ্যান করে এবং সে নিজেই তাকে বিয়ে করতে চায়। এতে হযরত আদম ( আঃ ) তাকে বাধা প্রদান করেন। তখন উভয়েই আল্লাহর নামে কুরবানী পেশ করলো যে, যার কুরবানী ককূল হবে সেই তাকে বিয়ে করবে। হযরত আদম ( আঃ ) সেই সময় মক্কাভূমির পথে যাত্রা শুরু করেন যে, দেখা যাক কি ঘটে? আল্লাহ তা'আলা হযরত আদম ( আঃ )-কে বললেনঃ “ ভূ-পৃষ্ঠে আমার যে ঘরটি রয়েছে তা তুমি চেনো কি?” তিনি উত্তরে বললেনঃ “না ।” আল্লাহ বললেনঃ “ ওটা মক্কায় রয়েছে । তুমি সেখানে চলে যাও।” হযরত আদম ( আঃ ) আকাশকে বললেনঃ “ তুমি কি আমার সন্তানদেরকে হিফাযত করবে?" আকাশ তা অস্বীকার করলো । তখন যমীনকে ঐ কথা বললেন। যমীনও অস্বীকৃতি জানালো। তারপর তিনি পাহাড়গুলোকে বললেন। তারাও অস্বীকার করলো। তারপর তিনি কাবীলকে ঐ কথা বললে সে বললোঃ “ হাঁ, আমি রক্ষক হয়ে গেলাম । আপনি ফিরে এসে দেখে নেবেন এবং খুশী হবেন।” এখন হাবীল একটি মোটাতাজা মেষ আল্লাহর নামে যবেহ করলেন এবং বড় কাবীল স্বীয় ভূমির শস্যের একটা অংশ আল্লাহর নামে বের করলো। আগুন এসে হাবীলের নযর তত জ্বালিয়ে ফেললো, যা ছিল সে যুগে কুরবানী গৃহীত হওয়ার নিদর্শন, কিন্তু কাবীলের নযর গৃহীত হলো না। তার ভূমির শস্য যা ছিল তা-ই থাকলো। সে ওটাকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করার পর শিষ হতে ভালভাল দানাগুলো ছাড়িয়ে নিয়ে খেয়ে ফেলেছিল। এখন কাবীলের তার বোনকে বিয়ে করার আশার গুড়ে বালি পড়ে গিয়েছিল। তাই সে তার ভাই হাবীলকে হত্যা করার হুমকি দিয়েছিল। তখন হাবীল বলেছিলেনঃ “ আল্লাহ তাআলা মুত্তাকীদের কুরবানীই ককূল করে থাকেন । এতে আমার অপরাধ কি আছে?” একটি বর্ণনায় এও রয়েছে যে, এ মেষটিকেই জান্নাতে পালন করা হয়েছে এবং এটা ঐ মেষ যাকে হযরত ইবরাহীম ( আঃ ) তাঁর পুত্রের বিনিময়ে যবেহ করেছিলেন। আর একটি রিওয়াইয়াতে আছে যে, হাবীল স্বীয় জানোয়ারগুলির মধ্য হতে সবচেয়ে উত্তম ও প্রিয় জন্তু আল্লাহর নামে খুশী মনে কুরবানী করেছিলেন। পক্ষান্তরে কাবীল স্বীয় কৃষিভূমির অত্যন্ত নিকৃষ্ট মানের শস্য আল্লাহর নামে বের করেছিল, সেটাও আবার খুশী মনে বের করেনি। হাবীলের দৈহিক শক্তিও কাবীল অপেক্ষা বেশী ছিল। এতদসত্ত্বেও তিনি আল্লাহর ভয়ে ভীত হয়ে স্বীয় ভ্রাতা কাবীলের অত্যাচার ও বাড়বাড়ি নীরবে সহ্য করলেন এবং ভাইয়ের উপর হাত উঠালেন না। বড় ভাইয়ের কুরবানী যখন ককূল হলো না এবং হযরত আদম ( আঃ ) তাকে এ কথা বললেন তখন সে তাঁকে বললোঃ “ আপনি হাবীলকে ভালবাসেন বলে তার কুরবানী কবূল করবার জন্যে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করেছিলেন, ফলে তার কুরবানী ককূল হয়েছে ।” এখন সে হাবীলকে হত্যা করে ফেলার দৃঢ় সংকল্প করে বসলো। সে সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। একদিন ঘটনাক্রমে হাবীলের বাড়ী আসতে বিলম্ব হয়। তখন হযরত আদম ( আঃ ) তাকে ডেকে আনার জন্যে কাবীলকে প্রেরণ করেন। সে তখন গুপ্তভাবে একটা ছুরি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। পথেই দু’ভাইয়ের সাক্ষাৎ ঘটে। তখন কাবীল তাকে বলেঃ “ আমি তো তোমাকে মেরে ফেলবো । কেননা, তোমার কুরবানী ককূল হয়েছে, আর আমার কুরবানী ককূল হয়নি।” তখন হাবীল বললেনঃ “ আমি উত্তম ও প্রিয় জিনিস আল্লাহর নামে কুরবানী দিয়েছি, আর তুমি খারাপ ও নিকৃষ্ট জিনিস তার নামে কুরবানী দিয়েছে । আল্লাহ তা'আলা মুত্তাকীদেরই কুরবানী কবূল করে থাকেন। এতে সে আরও বিগড়ে গেল এবং পেটে ছুরি ঢুকিয়ে দিল। হাবীল বলতেই থাকলেনঃ “ তুমি আল্লাহকে কি উত্তর দেবে? আল্লাহর কাছে তোমার এ অত্যাচারের প্রতিশোধ জঘন্যভাবে গ্রহণ করা হবে । আল্লাহকে ভয় কর এবং আমাকে হত্যা করো না।” কিন্তু সেই নিষ্ঠুর কাবীল নিজের ভাই হাবীলকে মেরে ফেললো।কাবীল তার যমজ বোনকেই বিয়ে করার আরও একটা কারণ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেঃ “ আমরা দু’জন জান্নাতে জন্মগ্রহণ করেছি, আর এরা দু'জন ( হাবীল ও তার যমজ বোন ) পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেছে । সুতরাং আমার যমজ বোনকে বিয়ে করার হক আমারই রয়েছে।” এও বর্ণিত আছে যে, কাবীল গম বের করেছিল এবং হাবীল গরু কুরবানী করেছিলেন। তখন তো কোন মিস্কীন ছিল না যে, তাকে সাদকা দেয়া যাবে। তাই এ প্রথা চালু ছিল যে, যে সাদকা দেয়া হতো, আকাশ থেকে আগুন এসে তা জ্বালিয়ে দিতো। এটা ছিল সাদকা। কবুল হওয়ার নিদর্শন। ছোট ভাই এ মর্যাদা লাভ করেছিলেন বলে বড় ভাই হিংসার বশবর্তী হয়ে তাকে হত্যা করার সংকল্প করে বসে। তারা যে বিয়ের মতানৈক্য দূর করার উদ্দেশ্যে কুরবানী করেছিল তা নয় বরং এমনিই তারা তা করেছিল। কুরআন কারীমের প্রকাশ্য শব্দ দ্বারা এটাই বুঝা যায় যে, বড় ভাই কাবীলের ছোট ভাই হাবীলের উপর অসন্তুষ্ট হওয়ার একমাত্র কারণ ছিল তার কুরবানী না হওয়া, অন্য আর কোন কারণ ছিল না। আর একটি বর্ণনায় উপরোক্ত বর্ণনাগুলোর বিপরীত কথা রয়েছে। তাতে রয়েছে যে, কাবীল তার যে শস্য আল্লাহর নামে নযর দিয়েছিল তা ককূল হয়েছিল। কিন্তু জানা যাচ্ছে যে, এতে বর্ণনাকারীর স্মরণশক্তি ঠিক নেই এবং এটা প্রসিদ্ধ বিষয়ের উল্টোও বটে। আল্লাহই সবচেয়ে ভাল জানেন।“ আল্লাহ মুত্তাকীদের আমলই কবুল করে থাকেন ।” হযরত মুআয ইবনে জাবাল ( রাঃ ) বলেন যে, লোকেরা কিয়ামতের মাঠে উপস্থিত থাকবে এমন সময় একজন আহ্বানকারী ডাক দিয়ে বলবেনঃ “ মুত্তাকীরা কোথায়?” তখন মুত্তাকীরা আল্লাহর কুদরতী ডানার নীচে দাঁড়িয়ে যাবে । আল্লাহ তাদের থেকে কোনই পর্দাই করবেন না, বরং প্রত্যক্ষভাবে তাদেরকে দেখা দেবেন। হাদীসটিব বর্ণনাকারী আবু আফীফকে জিজ্ঞেস করা হলোঃ “ মুত্তাকী কে?” তিনি উত্তরে বললেনঃ “মুত্তাকী তারাই যারা শির্ক ও মূর্তিপূজা থেকে বেঁচে থাকে এবং খাটি অন্তরে আল্লাহরই ইবাদত করে ।” অতঃপর এসব লোক জান্নাতে চলে যাবে। হাবীল বললেনঃ “ তুমি যদি আমাকে হত্যা করার জন্যে হস্ত প্রসারিত কর তথাপি আমি তোমাকে হত্যা করার জন্যে তোমার দিকে কখনও আমার হাত বাড়াবো না । আমি তো বিশ্বপ্রভু আল্লাহকে ভয় করি।” শক্তিতে তো তিনি ভাই অপেক্ষা উর্ধ্বে ছিলেন। তথাপি সততা, বিনয়, নম্রতা এবং তাকওয়ার কারণেই তিনি এ কথা বললেন। সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে বর্ণিত আছে যে, নবী ( সঃ ) বলেছেনঃ “ যখন দু’জন মুসলমান তরবারি নিয়ে দাঁড়িয়ে যাবে ( একে অপরকে হত্যা করার জন্য ) তখন হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তি উভয়েই জাহান্নামী হবে ।” সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন :“ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! এটা হত্যাকারীর ব্যাপারে প্রযোজ্য হতে পারে, কিন্তু নিহত ব্যক্তি অপরাধী হবে কেন?” তিনি উত্তরে বললেন :“কারণ এই যে, সেও তার প্রতিপক্ষকে হত্যা করার লোভ করেছিল ।” ইমাম আহমাদ ( রঃ ) বাশার ইবন সাঈদ ( রঃ ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, যখন বিদ্রোহীগণ উসমান ( রাঃ )-এর বাড়ী অবরোধ করেছিলেন তখন সা’দ ইবন আবি ওক্কাস ( রাঃ ) বলেছিলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহর রাসূল ( সঃ ) বলেছেনঃ “ অচিরেই হাঙ্গামা লেগে যাবে, সেই সময় উপবিষ্ট ব্যক্তি দণ্ডায়মান ব্যক্তি অপেক্ষা উত্তম হবে, দণ্ডায়মান ব্যক্তি চলমান ব্যক্তি অপেক্ষা উত্তম হবে এবং চলমান ব্যক্তি দৌড়ালু অপেক্ষা উত্তম হবে । কোন একজন জিজ্ঞেস করলেন : “ যদি কোন লোক আমার গৃহে প্রবেশ করে আমাকে হত্যা করতে ইচ্ছে করে ( তাহলে আমি কি করব )?” তিনি উত্তরে বললেন । সে সময় তুমি আদমের পুত্রের মত হয়ে যাও।' একটি রিওয়ায়াতে আছে যে, এরপর রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) এ আয়াতটি তিলাওয়াত করেছিলেন। আইউব সুখইয়ানী বলেন যে, সর্বপ্রথম যিনি এ আয়াতের উপর আমল করেছিলেন তিনি হলেন উসমান ইবন আফফান ( রাঃ )। একদা রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) একটি জন্তুর উপর সওয়ার ছিলেন এবং তার পিছনে বসেছিলেন হযরত আবু যার ( রাঃ )। তিনি বললেনঃ “ হে আবু যার ( রাঃ ) । আচ্ছা বলতো, যখন মানুষ এমন দারিদ্রের সম্মুখীন হবে যে, তারা ( ক্ষুধার কারণে ) বাড়ী হতে মসজিদ পর্যন্তও যেতে পারবে না, তখন তুমি কি করবে?” তিনি উত্তরে বললেনঃ “ আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ( সঃ )-এর যা নির্দেশ হবে তা-ই করবো ।” তিনি বললেনঃ “ যখন পরস্পরের মধ্যে খুনাখুনি শুরু হয়ে যাবে, এমনকি মরুভূমির পাথরও রক্তে রঞ্জিত হয়ে যাবে, তখন কি করবে?" ( হযরত আবু যার রাঃ বলেন ) আমি ঐ উত্তরই দিলাম । তিনি বললেনঃ “ বাড়ীতেই অবস্থান করবে এবং দরজা বন্ধ রাখবে ।” আমি বললাম, আমি যদি তাতে অংশগ্রহণ না করি তবুও কি? তিনি বললেনঃ “ তুমি যাদের অন্তর্ভুক্ত তাদের মধ্যেই চলে যাবে এবং সেখানেই অবস্থান করবে ।” আমি জিজ্ঞেস করলাম, আমি অস্ত্র ধারণ করবো না কেন? তিনি বললেনঃ “ তাহলে তুমিও তাদের মধ্যেই শামিল হয়ে গেলে । বরং যদি কারও তরবারীর ঝলক তোমাকে উদ্বিগ্ন করে তোলে তবে তখনও তুমি তোমার মুখের উপর কাপড় দিয়ে দেবে যাতে সে তোমার ও তার নিজের পাপগুলো নিয়ে যায়।” হযরত রাবঈ ( রঃ ) বলেন, আমরা হযরত হুযাইফা ( রাঃ )-এর জানাযায় হাযির ছিলাম। একজন লোক বললেনঃ আমি এঁর ( হযরত হুযাইফার ) মুখে শুনেছি, তিনি রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) হতে শোনা হাদীসগুলো বর্ণনা করতে গিয়ে বলতেনঃ “ তোমরা যদি পরস্পর লড়াই কর তবে আমি আমার সবচেয়ে দূরের বাড়ীতে চলে যাবো এবং দরজাগুলো বন্ধ করে দিয়ে বসে পড়বো । যদি সেখানেও কেউ ঢুকে পড়ে তবে আমি তাকে বলে দেবো, তুমি তোমার ও আমার পাপরাশি তোমার মাথায় উঠিয়ে নাও। আমি হযরত আদম ( আঃ )-এর দু’পুত্রের মধ্যে যিনি উত্তম ছিলেন তার মতই হয়ে যাবো।”“ আমি চাই যে, তুমি আমার পাপ এবং তোমার পাপ সমস্তই নিজের মাথায় উঠিয়ে নাও” -এ কথা হাবীল কাবীলকে বলেছিলেন । এর ভাবার্থ হচ্ছে-হে কাবীল! তুমি ইতিপূর্বে যে পাপ করেছে তা এবং এখন আমাকে হত্যা করার পাপ, এ সমস্তই নিয়ে তুমি কিয়ামতের দিন উঠবে এটাই আমি চাই। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) এবং হযরত মুজাহিদ ( রহঃ ) হতে এও বর্ণিত আছে যে, আমার নিজের পাপ এবং আমাকে হত্যা করার পাপ এ সবগুলোই তুমি তোমার মাথায় উঠিয়ে নাও। আমি ( ইবনে কাসীর ) বলি যে, সম্ভবতঃ মুজাহিদ ( রহঃ )-এর এ দ্বিতীয় উক্তিটি সাব্যস্ত নয়। এর উপর ভিত্তি করেই কতক লোক বলেন যে, হত্যাকারী নিহত ব্যক্তির সমস্ত পাপ নিজের মাথায় বহন করবে। আর এ অর্থের একটি হাদীসও রয়েছে। কিন্তু এর কোন ভিত্তি নেই। হাফিয আবু বকর আল বায ( রঃ ) হযরত আয়েশা ( রাঃ ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ "বিনা কারণে হত্যা ( নিহত ব্যক্তির ) সমস্ত পাপ মিটিয়ে দেয়।" এ হাদীসটি উপরে বর্ণিত হাদীসের অর্থে না হলেও এটাও বিশুদ্ধ হাদীস নয়। আর এ রিওয়ায়াতের ভাবার্থ এটাও হবে যে, হত্যার কষ্টের কারণে আল্লাহ নিহত ব্যক্তির সমস্ত পাপ ক্ষমা করে থাকেন। এখন ঐ পাপ কি হত্যাকারীর উপর এসে যাবে? এ কথাটি সাব্যস্ত নয়। তবে কতক হত্যাকারী ঐরূপও হতে পারে। কিয়ামতের মাঠে নিহত ব্যক্তি হত্যাকারীকে খুঁজতে থাকবে এবং তার অত্যাচার মোতাবেক তার পুণ্য নিতে থাকবে। পুণ্য নেয়ার পরেও যদি অত্যাচার শেষ না হয় তবে নিহত ব্যক্তির পাপ হত্যাকারীর উপর চাপিয়ে দেয়া হবে। তাহলে হতে পারে যে, নিহত ব্যক্তির সমস্ত পাপই কতক হত্যাকারীর মাথার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে। কেননা, অত্যাচারের এভাবে বদলা নেয়ার কথা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। আর এটা স্পষ্ট কথা যে, হত্যা সবচেয়ে বড় অত্যাচার এবং অতি জঘন্য কাজ। আল্লাহ তা'আলাই সবেচেয়ে ভাল জানেন।ইমাম ইবনে জারীর ( রঃ ) বলেন যে, এ বাক্যের বিশুদ্ধতম অর্থ হচ্ছে- হে কাবীল! আমি চাই যে, তুমি নিজের পাপ এবং আমাকে হত্যা করার পাপ এ সমস্তই নিজের উপর নিয়ে নেবে। তোমার অন্যান্য পাপের সাথে এই একটি পাপও বেড়ে যাক। আমার পাপও তোমার ঘাড়ে চেপে বসুক-এ বাক্যের ভাবার্থ কখনও এটা হতে পারবে না। কেননা, আল্লাহ পাক বলেনঃ প্রত্যেক আমলকারীকে তার আমলের প্রতিদান ও শাস্তি দেয়া হবে। তাহলে এটা কিরূপে সম্ভব হবে যে, নিহত ব্যক্তির সারা জীবনের পাপ হত্যাকারীর স্কন্ধে চাপিয়ে দেয়া হবে? এখন বাকী থাকছে এই কথা যে, হাবীল তার ভাইকে এ কথা কেন বললেন? এর উত্তর এই যে, তিনি শেষবারের মত তাকে উপদেশ দেন এবং ভয় প্রদর্শন করেন যে, সে যেন এ কাজ থেকে বিরত থাকে, নতুবা সে পাপী হয়ে জাহান্নামবাসী হয়ে যাবে। কারণ, তিনি তো তার মোকাবিলা করছেন না। সুতরাং সমস্ত পাপের বোঝা তার উপরই পড়বে এবং সেই অত্যাচারী সাব্যস্ত হবে। আর অত্যাচারীদের বাসস্থান হচ্ছে জাহান্নাম। ( এই উপদেশ সত্ত্বেও ) তার প্রবৃত্তি তাকে স্বীয় ভ্রাতৃহত্যার প্রতি উদ্বুদ্ধ করলো। সুতরাং সে তাকে হত্যা করেই ফেললল, ফলে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল। অর্থাৎ শয়তান কাবীলকে তার ভাই এর হত্যার প্রতি উত্তেজিত করলো এবং সে স্বীয় নাফসে আম্মারার অনুসরণ করলো আর লোহা দ্বারা তাকে মেরে ফেললো। একটি বর্ণনায় আছে যে, হাবীল স্বীয় পশুপাল নিয়ে পাহাড়ের উপর উঠে গিয়েছিলেন, আর এদিকে কাবীল তাঁকে খুঁজতে খুঁজতে ওখানে গিয়ে পৌছে যায়। সে একটি ভারী পাথর উঠিয়ে নিয়ে তাঁর মাথায় মেরে দেয়। ঐ সময় তিনি ঘুমিয়েছিলেন। কেউ কেউ বলেন যে, চতুষ্পদ জন্তুর মত তাকে গলা টিপে মেরে ফেলেছিল বা তাঁর গলা কেটে নিয়েছিল। এ কথাও বলা হয়েছে যে, ঐ শয়তানের হত্যা করার নিয়ম জানা ছিল না, তাই সে তাঁর গলা মোচড়াচ্ছিল। অতঃপর সে একটা জন্তুকে ধরে তার মাথাটি একটি পাথরের উপর রাখলো। তারপর একটি পাথর সজোরে তার মাথায় মেরে দিলো। তৎক্ষণাৎ জন্তুটি মারা গেল। এই দেখে সে তার ভাইয়ের সাথেও ঐ ব্যবহার করলো। এও বর্ণিত আছে যে, যেহেতু তখন পর্যন্ত ভূ-পৃষ্ঠে কোন হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়নি, ফলে কাবীল কখনও বা তার ভাইয়ের চক্ষুগুলো বন্ধ করতো এবং কখনও বা থাপ্পড় ঘুষি মারতো। এই দেখে অভিশপ্ত ইবলীস তার কাছে এসে বললো, “ একটা পাথর নিয়ে এসো এবং তা দিয়ে তার মাথা থেতলিয়ে দাও ।” সে তাই করলো। তখন সেই মালউন দৌড়িয়ে হযরত হাওয়া ( আঃ )-এর কাছে এসে বললোঃ “ কাবীল হাবীলকে হত্যা করে ফেলেছে ।” তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ “ হত্যা কিরূপে হয়?" সে উত্তরে বললোঃ “এখন সে না পানাহার করতে পারবে, কথা বলতে এবং না নড়াচড়া করতে পারবে ।” তিনি তখন বললেনঃ “ সম্ভবতঃ তার মৃত্যু হয়ে গেছে ।” সে বললোঃ “ হ্যা, এটাই মৃত্যু । তখন তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন। ইতিমধ্যে হ্যরত আদম ( আঃ ) এসে পড়লেন এবং তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ “ ব্যাপার কি?” কিন্তু শোকে দুঃখে তার মুখে কোন কথা সরলো না । তখন তিনি বললেনঃ “ তাহলে তুমি তোমার কন্যাগণসহ হা-হুতাশ করতে থাক । আর আমিও আমার পুত্রগণ এ থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। কাবীল ক্ষগ্রিস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল। সে দুনিয়া ও আখিরাত দুটোকেই নষ্ট করলো। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে নিহত হয় তার খুনের বোঝা হযরত আদম ( আঃ )-এর ঐ সন্তানের উপরই পতিত হয় । কেননা, সে-ই সর্বপ্রথম ভূ-পৃষ্ঠে অন্যায়ভাবে রক্ত বইয়েছিল।" মুজাহিদ ( রহঃ )-এর উক্তি এই যে, ঐ হত্যাকারীর একটি পায়ের গোছাকে উরুর সাথে লটকানো হয়েছে এবং তার মুখটা সূর্যের দিকে করে দেয়া হয়েছে। ওর ঘুরার সাথে সাথে সেও ঘুরতে রয়েছে। শীতকালে ও গ্রীষ্মকালে আগুন ও বরফের গর্তে থাকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে। সবচেয়ে বড় শাস্তি প্রাপ্ত ব্যক্তি সে-ই। ভূ-পৃষ্ঠে সমস্ত হত্যাকাণ্ডের জন্যে সে-ই দায়ী। ইমাম নাখঈ ( রঃ ) বলেন যে, সমস্ত অন্যায় খুনের বোঝা তার উপর ও শয়তানের উপর পড়ে থাকে।তাঁকে হত্যা করে দেয়ার পর কি করতে হবে, মৃতদেহ কিভাবে ঢাকতে হবে সে ব্যাপারে তার কিছুই জানা ছিল না। তখন আল্লাহ তা'আলা দু'টি কাক প্রেরণ করলেন যারা একে অপরের ভাই ছিল। তারা তার সামনে লড়তে লাগলো। অবশেষে একে অপরকে মেরে ফেললো। তারপর জীবিত কাকটি একটি গর্ত খনন করলো এবং মত কাকটিকে ওর মধ্যে রেখে দিয়ে মাটি চাপিয়ে দিলো। এ দেখে কাবীলের বুদ্ধি জেগে গেল এবং সে-ও ঐরূপ করলো। হযরত আলী ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, নিজে নিজেই মৃত একটি কাককে অপর একটি কাক এভাবে গর্ত খনন করে দাফন করে দিয়েছিল। এও বর্ণিত আছে যে, কাবীল এক বছর পর্যন্ত তার মৃত ভাইয়ের মৃতদেহ স্বীয় স্কন্ধে বহন করে ফিরছিল। অতঃপর কাকটিকে ঐরূপ করতে দেখে সে নিজেকে ভৎসনা করে বলতে লাগলো-“ হায়! আমি এ কাকটির মত কাজও করতে পারলাম না ।” একথাও বর্ণিত আছে যে, সে ভাইকে মেরে ফেলার পর খুবই অনুতপ্ত হয়েছিল এবং মৃতদেহ কোলে নিয়ে বসে পড়েছিল। আর তা এ জন্যও ছিল যে, ভূ-পৃষ্ঠে প্রথম মৃত ও প্রথম হত্যা ওটাই ছিল। তাওরাত ধারীরা বলে যে, যখন কাবীল তার ভাই হাবীলকে হত্যা করলো তখন আল্লাহ তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ “ হে কাবীল! তোমার ভাই হাবীল কোথায়? সে উত্তরে বললোঃ আমি জানি না । আমি তার প্রহরী ছিলাম না। আল্লাহ পাক তখন বললেনঃ “ এখন তোমার ভাইয়ের রক্ত যমীন হতে আমাকে ডাক দিচ্ছে । যে যমীনের মুখ খুলে দিয়ে তুমি ওর মুখে তোমার নিস্পাপ ভাইয়ের রক্ত ঢেলে দিয়েছ সেই ভূমি তোমাকে লানত করছে। তুমি এ যমীনে যে চাষাবাদ করবে তাতে তুমি কোন ফসল পাবে না যে পর্যন্ত না তুমি চিন্তান্বিত হবে। সে তখন ঐ কাজই করলো।অতঃপর সে খুব লজ্জিত হলো এবং অনুতাপ করতে থাকলো! ওটা যেন শাস্তির উপরে শাস্তি ছিল। এ কাহিনীতে মুফাসৃসিরগণ এ ব্যাপারে তো একমত যে, এ দু’জন হযরত আদম ( আঃ )-এর ঔরসজাত পুত্র ছিল এবং কুরআন কারীমের শব্দগুলো দ্বারা বাহ্যতঃ এটাই বুঝা যাচ্ছে। আর হাদীসেও রয়েছে যে, যমীনের বুকে যেসব হত্যাকাণ্ড চলছে তার এক অংশের বোঝা ও পাপ হযরত আদম ( আঃ )-এর এ প্রথম পুত্রের উপর পড়েছে। কেননা সে-ই সর্বপ্রথম হত্যার পদ্ধতি আবিষ্কার করেছে। কিন্তু হযরত হাসান বসরী ( রাঃ ) বলেন যে, এ দু’জন বানী ইসরাঈলের অন্তর্ভুক্ত ছিল। কুরবানী সর্বপ্রথম তাদের মধ্যেই চালু হয়েছিল। পৃথিবীর বুকে সর্বপ্রথম আদম ( আঃ ) মৃত্যুবরণ করেছিলেন। কিন্তু এ উক্তিটির ব্যাপারে চিন্তা ভাবনার অবকাশ আছে। তাছাড়া এর ইসনাদও সঠিক নয়। একটি মারফু হাদীসে রয়েছে যে, এ ঘটনাটি একটা দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মানুষ যেন এর মধ্য থেকে ভালটি গ্রহণ করে এবং মন্দটি পরিত্যাগ করে। ( ইবনে জারীর (রঃ ) হাসান বসরী ( রঃ ) হতে এটা মারফু’রূপে তাখরীজ করেছেন) এ হাদীসটি মুরসাল। কথিত আছে যে, এ আকস্মিক দুর্ঘটনায় হযরত আদম ( আঃ ) শশাকে অভিভূত হয়ে পড়েন এবং এক বছর ধরে তার মুখে হাসি ফুটেনি। অবশেষে ফেরেশতাগণ তার দুঃখ দূর হওয়ার ও মুখে হাসি আসার জন্যে আল্লাহ পাকের নিকট প্রার্থনা করেন। হযরত আদম ( আঃ ) ঐ সময় শোকে ও দুঃখে এ কথাও বলেছিলেন যে, শহর ও শহরের সবকিছু বদলে গেছে, পৃথিবীর রং -এর পরিবর্তন ঘটেছে এবং ওর চেহারা অত্যন্ত খারাপ হয়ে গেছে। সব জিনিসেরই রং ও স্বাদ বিদায় নিয়েছে এবং আকর্ষণীয় চেহারাগুলোর সৌন্দর্য লোপ পেয়েছে। জবাবে বলা হলো যে, ঐ মৃত ব্যক্তির সাথে এ জীবিত ব্যক্তিও যেন নিজেকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে এবং যে অন্যায়ভাবে হত্যা করেছিল ওর বোঝা তার উপর এসে গেছে। প্রকাশ্যভাবে জানা যাচ্ছে যে, কাবীলকে তখনই কোন শাস্তি দেয়া হয়েছে। যেহেতু বলা হয়েছে যে, তার পায়ের গোছাকে তার উরুর সাথে লটকিয়ে দেয়া হয়েছে এবং তার মুখমণ্ডল সূর্যের দিকে করে দেয়া হয়েছে। ওর সাথে সাথেই সে ঘুরতে ছিল। অর্থাৎ সূর্য যেদিকেই থাকতো সেদিকেই তার মুখখানা ঘুরে যেতো। হাদীস শরীফে এসেছে যে, নবী ( সঃ ) বলেছেনঃ “ যতগুলো গুনাহ এরই উপযুক্ত যে, আল্লাহ তাড়াতাড়ি করে ও শাস্তি দুনিয়াতেই প্রদান করবেন এবং পরকালেও তার জন্যে ভীষণ শাস্তি জমা রাখবেন, ওগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় গুনাহ হচ্ছে সমসাময়িক শাসনকর্তার বিরুদ্ধাচরণ করা এবং পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া!” কাবীলের মধ্যে এ দু'টো পাপই জমা হয়েছিল । ( আরবী ) ‘নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহরই জন্যে এবং নিশ্চয়ই আমরা তাঁরই নিকট প্রত্যাবর্তনকারী।' ( ২:১৫৬ )
সূরা মায়িদা আয়াত 31 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- এবং তার বংশধরদেরকেই আমি অবশিষ্ট রেখেছিলাম।
- অতএব, তোমরা উভয়ে তোমাদের পালনকর্তার কোন কোন অবদানকে অস্বীকার করবে?
- অতঃপর তাদের পশ্চাতে প্রেরণ করব পরবর্তীদেরকে।
- আর যখন তাদেরকে বলা হয়, অন্যান্যরা যেভাবে ঈমান এনেছে তোমরাও সেভাবে ঈমান আন, তখন তারা
- নিশ্চয় আমি মানুষকে শ্রমনির্ভররূপে সৃষ্টি করেছি।
- আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন, যারা তাঁর পথে সারিবদ্ধভাবে লড়াই করে, যেন তারা সীসাগালানো প্রাচীর।
- লূত বললেন, আমি তোমাদের এই কাজকে ঘৃণা করি।
- অন্ধের জন্যে দোষ নেই, খঞ্জের জন্যে দোষ নেই, রোগীর জন্যে দোষ নেই, এবং তোমাদের নিজেদের
- এখন তারা বলবেঃ আল্লাহ। বলুন, তবুও কি তোমরা ভয় করবে না?
- যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছিল এবং পরহেযগার ছিল, তাদেরকে আমি উদ্ধার করেছি।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা মায়িদা ডাউনলোড করুন:
সূরা Maidah mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Maidah শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers