কোরান সূরা আ'রাফ আয়াত 31 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Araf ayat 31 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা আ'রাফ আয়াত 31 আরবি পাঠে(Araf).
  
   

﴿۞ يَا بَنِي آدَمَ خُذُوا زِينَتَكُمْ عِندَ كُلِّ مَسْجِدٍ وَكُلُوا وَاشْرَبُوا وَلَا تُسْرِفُوا ۚ إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُسْرِفِينَ﴾
[ الأعراف: 31]

হে বনী-আদম! তোমরা প্রত্যেক নামাযের সময় সাজসজ্জা পরিধান করে নাও, খাও ও পান কর এবং অপব্যয় করো না। তিনি অপব্যয়ীদেরকে পছন্দ করেন না। [সূরা আ'রাফ: 31]

Surah Al-Araf in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Araf ayat 31


হে আদম-সন্তানরা! তোমাদের বেশভূষা গ্রহণ করো প্রত্যেক সিজদাস্থলে, আর খাও ও পান করো, কিন্তু অপচয় করো না, নিঃসন্দেহ তিনি অমিতব্যয়ীদের ভালোবাসেন না।


Tafsir Mokhtasar Bangla


৩১. হে আদম সন্তান! তোমরা নিজেদের লজ্জাস্থান আবৃত করতে পারে এমন পোশাক পরো এবং যে পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন পোশাকের মাধ্যমে তোমরা সালাত ও তাওয়াফের সময় সুসজ্জিত হও তাও পরো। আর আল্লাহর হালালকৃত পবিত্র বস্তুসমূহ থেকে তোমরা যা ইচ্ছা তা খাও ও পান করো। এ ক্ষেত্রে কখনো তোমরা ভারসাম্যতার সীমা অতিক্রম করো না। এমনকি তোমরা হালালকে অতিক্রম করে হারামের দিকে ধাবিত হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা ভারসাম্যতার সীমারেখা অতিক্রমকারীদেরকে পছন্দ করেন না।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


হে আদমের বংশধরগণ! তোমরা প্রত্যেক নামাযের সময় সুন্দর পরিচ্ছদ পরিধান কর।[১] পানাহার কর, কিন্তু অপচয় করো না। নিশ্চয় তিনি অপচয়কারীদেরকে পছন্দ করেন না। [২] [১] আয়াতে زِينَة ( সৌন্দর্য ) বলতে পোশাক বুঝানো হয়েছে। এই আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার কারণও হল মুশরিকদের উলঙ্গ তাওয়াফ করা। তাই তাদেরকে বলা হল, পোশাক পরে আল্লাহর ইবাদত ও তাওয়াফ কর। [২] إِسْرَافٌ ( অপচয় করা ) প্রত্যেক জিনিসেই এমন কি পানাহারেও অপছন্দনীয়। একটি হাদীসে নবী করীম ( সাঃ ) বলেছেন, " যা ইচ্ছা খাও, যা ইচ্ছা পরিধান কর। তবে দু'টি জিনিস থেকে অবশ্যই বেঁচে থাক। অপচয় ও অহংকার থেকে। " ( বুখারী, লিবাস অধ্যায় ) কোন কোন সালাফের উক্তি হল, মহান আল্লাহ{وَكُلُوْا وَاشْرَبُوْا وَلاَ تُسْرِفُوْا} ( পানাহার কর এবং অপচয় করো না ) এই অর্ধেক আয়াতে সমস্ত চিকিৎসা-বিদ্যাকে একত্রিত করে দিয়েছেন। ( ইবনে কাসীর ) কেউ কেউ বলেছেন, زِينَة হল এমন পোশাক, যা সৌন্দর্যের জন্য পরা হয়। তাঁদের এই উক্তি অনুযায়ী নামাযে ও তাওয়াফে সাজ-সজ্জা করার নির্দেশও পাওয়া যায়। পক্ষান্তরে এই আয়াত দ্বারা নামাযে লজ্জাস্থান ঢাকা ওয়াজেব হওয়ার কথাও প্রমাণ করা হয়েছে। বরং হাদীসসমূহের আলোকে লজ্জাস্থান ( পুরুষের নাভি থেকে নিয়ে হাঁটু পর্যন্ত অংশকে ) ঢাকা প্রত্যেক অবস্থায় জরুরী। এমন কি মানুষ নির্জনে একাকী থাকলেও। ( ফাতহুল ক্বাদীর ) জুমআহ এবং ঈদের দিনে সুগন্ধি ব্যবহার করাও মুস্তাহাব। কেননা, এটাও زِينَة তথা সাজ-সজ্জারই অংশ। ( ইবনে কাসীর )

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


হে বনী আদম! প্রত্যেক সালাতের সময় তোমরা সুন্দর পোষাক গ্রহণ কর []। আর খাও এবং পান কর কিন্তু অপচয় কর না [] নিশ্চয় তিনি অপচয়কারীদেরকে পছন্দ করেন না। [] আয়াতে পোষাককে ‘যীনাত’ বা ‘সাজ-সজ্জা’ শব্দের মাধ্যমে এ জন্যই ব্যক্ত করা হয়েছে যে, সালাতে শধু গুপ্ত অঙ্গ আবৃত করা ছাড়াও সামথ্য অনুযায়ী সাজ-সজ্জার পোষাক পরিধান করা শ্ৰেয়। হাসান রাদিয়াল্লাহু আনহু সালাতের সময় উত্তম পোষাক পরিধানে অভ্যস্ত ছিলেন। তিনি বলতেনঃ ‘আল্লাহ্ তা'আলা সৌন্দর্য পছন্দ করেন, তাই আমি প্রতিপালকের সামনে সুন্দর পোষাক পরে হাজির হই।’ যে গুপ্ত-অঙ্গ সর্বাবস্থায় বিশেষতঃ সালাত ও তাওয়াফে আবৃত করা ফরয, তার সীমা কি? কুরআনুল কারম সংক্ষেপে গুপ্ত-অঙ্গ আবৃত করার নির্দেশ দিয়ে এর বিবরণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিশদভাবে বর্ণনা করেছেন যে, পুরুষের গুপ্তাঙ্গ নাভী থেকে হাটু পর্যন্ত এবং মহিলাদের গুপ্তাঙ্গ মুখমন্ডল, হাতের তালু এবং পদযুগল ছাড়া সমস্ত দেহ। হাদীসসমূহে এসব বিবরণ বর্ণিত রয়েছে। এ হচ্ছে গুপ্ত অঙ্গের ফরয সম্পর্কিত বিধান। এটি ছাড়া সালাতই হয় না। সালাতে শুধু গুপ্ত অঙ্গ আবৃত করাই কাম্য নয়; বরং সাজ-সজ্জার পোষাক পরিধান করতেও বলা হয়েছে। যেমন সাদা পোষাক, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের পোষাকাদির মধ্যে সাদা পোষাক পরিধান কর। কেননা, পোষাকাদির মধ্যে তাই উত্তম পোষাক। আর এতে তোমাদের মৃতদেরকে কাফনও দাও। [ আবু দাউদঃ ৩৮৭৮, তিরমিয়ীঃ ৯৯৪, ইবন মাজাহঃ ১৪৭২ ] অনেকে সাজসজ্জার পোষাক পরাকে অহংকারী পোষাক মনে করে থাকে এটা আসলে ঠিক নয়। এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যার অন্তরে অনু পরিমাণ অহংকার থাকবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। এক লোক বললঃ কোন লোক পছন্দ করে তার পোষাক উত্তম হোক, তার জুতা সুন্দর হোক। রাসূল বললেনঃ “ অবশ্যই আল্লাহ সুন্দর, সুন্দরকে ভালবাসেন । ”অহংকার হল, হককে না মানা, মানুষকে অবজ্ঞা করা। [ মুসলিমঃ ১৪৭ ] আবার অহংকার হয় এমন পোষাকও পরা যাবে না যদিও তাতে কারো কারো নিকট বাহ্যিক সুন্দর রয়েছে। যেমনঃ টাখনুর নীচে কাপড় পরা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘যে অহংকার বশে কাপড় টাখনুর নীচে ছেড়ে দিবে আল্লাহ তার দিকে তাকাবেন না।’ [ বুখারীঃ ৫৭৮৩ ] আয়াতের শানে নুযুল হিসেবে এসেছে যে, আরবের মুশরিকরা জাহেলিয়াতে মাসজিদে হারামে কাবার তাওয়াফ করার সময় উলঙ্গ হয়ে তাওয়াফ করত। এ ব্যাপারে তাদের দর্শন ছিল, যে কাপড় পরে গুণাহ করেছি তা দিয়ে তাওয়াফ করা যাবে না। বিশেষতঃ কুরাইশরা এ বিধিবিধানের প্রবর্তন করে। তারাই শুধু তাওয়াফের জন্য কাপড় দিতে পারবে। এতে করে তারা কিছু বাড়তি সুবিধা আদায় করতে পারত। এমনকি মহিলারাও উলঙ্গ তাওয়াফ করত। শয়তান তাদেরকে এভাবে ইবাদাত করতে উদ্বুদ্ধ করত এবং এ কাজকে তাদের মনে সৌন্দর্যমণ্ডিত করে দিত। আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেনঃ মহিলা উলঙ্গ অবস্থায় কাবার তাওয়াফ করত আর বলত, কে আমাকে তাওয়াফের কাপড় ধার দেবে? যা তার লজ্জাস্থানে রাখবে। আরও বলতঃ আজ হয় কিছু অংশ প্রকাশ হয়ে পড়বে নয়ত পুরোটাই। আর যা আজ প্রকাশিত হবে তা আর হালাল করব না। তখন এ আয়াত নাযিল হয়- “ তোমরা তোমাদের মাসজিদ তথা ইবাদাতের স্থানে সুন্দর পোষাক পরবে ।” [ মুসলিমঃ ৩০২৮ ] [] এ আয়াত থেকে একটি মাসআলা এরূপ বুঝা যায় যে, জগতে পানাহারের যত বস্তু রয়েছে সেগুলো সব হালাল ও বৈধ। যতক্ষণ পর্যন্ত কোন বিশেষ বস্তুর অবৈধতা ও নিষিদ্ধতা শরীআতের কোন দলীল দ্বারা প্রমাণিত না হয়, ততক্ষণ প্রত্যেক বস্তুকে হালাল ও বৈধ মনে করা হবে। আয়াতে ( وَلَاتُسْرِفُوْا ) বলে পানাহারের অনুমতি বরং নির্দেশ থাকার সাথে সাথে অপব্যয় করার নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে। আয়াতে ব্যবহৃত ( اسراف ) শব্দের অর্থ সীমালংঘন করা। সীমালংঘন কয়েক প্রকারের হতে পারে। ( এক ) হালালকে অতিক্রম করে হারাম পর্যন্ত পৌঁছা এবং হারাম বস্তু পানাহার করতে থাকা। এ সীমালংঘন যে হারাম তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ( দুই ) আল্লাহর হালালকৃত বস্তুসমূহকে শরীআত সম্মত কারণ ছাড়াই হারাম মনে করে বর্জন করা। হারাম বস্তু ব্যবহার করা যেমন অপরাধ ও গোনাহ, তেমনি হালালকে হারাম মনে করাও আল্লাহর আইনের বিরোধিতা ও কঠোর গোনাহ। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কম খেয়ে দুর্বল হয়ে পড়া, ফলে ফরয কর্ম সম্পাদনের শক্তি না থাকা- এটাও সীমালংঘনের মধ্যে গণ্য। উল্লেখিত উভয় প্রকার অপব্যয় নিষিদ্ধ করার জন্য কুরআনুল কারমের এক জায়গায় বলা হয়েছেঃ “ অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই ।” [ সূরা আল-ইসরাঃ ২৭ ] অন্যত্র বলা হয়েছেঃ আল্লাহ তাদেরকে পছন্দ করেন, যারা ব্যয় করার ক্ষেত্রে মধ্যবর্তিতা অবলম্বন করে- প্রয়োজনের চাইতে বেশী ব্যয় করে না এবং কমও করে না ।" [ সূরা আল-ফুরকানঃ ৬৭ ] এ আয়াতে পানাহার সম্পর্কে যে মধ্যবর্তিতার নির্দেশ বর্ণিত হয়েছে, তা শুধু পানাহারের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং পরিধান ও বসবাসের প্রত্যেক কাজেই মধ্য পন্থা পছন্দনীয় ও কাম্য। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সীমালংঘন ও অহংকার না করে খাও, দান কর এবং পরিধান কর। [ নাসাঈঃ ৫/৭৯, ইবন মাজাহঃ ৩৬০৫ ] অনুরূপভাবে ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেনঃ যা ইচ্ছা পানাহার কর এবং যা ইচ্ছা পরিধান কর, তবে শুধু দুটি বিষয় থেকে বেঁচে থাক। ( এক ) তাতে অপব্যয় অর্থাৎ প্রয়োজনের চাইতে বেশী না হওয়া চাই এবং ( দুই ) গর্ব ও অহংকার না থাকা চাই। [ বুখারী ] অন্যত্র এটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকেও বর্ণিত হয়েছে। [ নাসায়ী: ২৫৫৯ ] তবে এ ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি স্বাভাবিক সীমা দিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেনঃ ‘আদম সন্তান যে সমস্ত ভাণ্ডার পূর্ণ করে, তন্মধ্যে পেট হল সবচেয়ে খারাপ। আদম সন্তানের জন্য স্বল্প কিছু লোকমাই যথেষ্ট, যা দিয়ে সে তার পিঠ সোজা রাখতে পারে। এর বেশী করতে চাইলে এক-তৃতীয়াংশ খাবারের জন্য, এক-তৃতীয়াংশ পানীয়ের জন্য এবং এক-তৃতীয়াংশ নিঃশ্বাসের জন্য নির্দিষ্ট করে।’ [ তিরমিযীঃ ২৩৮০, ইবন মাজাহঃ ৩৩৪৯, মুসনাদে আহমাদঃ ৪/১৩২ ] ( وَّكُلُوْا وَاشْرَبُوْا وَلَا تُسْرِفُوْا ) আয়াত থেকে বেশ কয়েকটি মাসআলা জানা যায়। ( এক ) যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু পানাহার করা ফরয। ( দুই ) শরীআতের কোন দলীল দ্বারা কোন বস্তুর অবৈধতা প্রমানিত না হওয়া পর্যন্ত সব বস্তুই হালাল। ( তিন ) আল্লাহ্ তা'আলা ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক নিষিদ্ধ বস্তুসমূহকে ব্যবহার করা অপব্যয় ও অবৈধ ৷ ( চার ) যেসব বস্তু আল্লাহ্ তাআলা হালাল করেছেন, সেগুলোকে হারাম মনে করাও অপব্যয় এবং মহাপাপ। ( পাঁচ ) পেট ভরে খাওয়ার পরও আহার করা সমীচীন নয়। ( ছয় ) এতটুকু কম খাওয়াও অবৈধ, যদ্দরুন দুর্বল হয়ে ফরয কর্ম সম্পাদন করতে অক্ষম হয়ে পড়ে। দেখুন, [ কুরতুবী; ফাতহুল কাদীর ]

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


এই আয়াতে মুশরিকদের কাজের প্রতিবাদ করা হচ্ছে যে, তারা উলঙ্গ হয়ে বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করতো। এটাকেই শরীয়তের বিধান বলে বিশ্বাস করতো। দিনে পুরুষ লোকেরা এবং রাত্রে স্ত্রীলোকেরা কাপড় খুলে ফেলে তাওয়াফ করতো। তাই আল্লাহ পাক ঘোষণা করেছেন- তোমরা প্রত্যেক নামাযের সময় ( যার মধ্যে বায়তুল্লাহর তাওয়াফের ইবাদতও রয়েছে ) শরীরকে উলঙ্গ অবস্থা থেকে রক্ষা কর এবং গুপ্তাঙ্গকে আবৃত করে ফেল। তাছাড়া নিজেদেরকে সুন্দর সুন্দর সাজে সজ্জিত কর। পূর্ববর্তী মনীষীগণ এটাই লিখেছেন যে, এ আয়াতটি মুশরিকদের উলঙ্গ হয়ে বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করা সম্পর্কেই অবতীর্ণ হয়েছে। হযরত আনাস ( রাঃ ) হতে মারফরূপে বর্ণিত আছে যে, এটা নামাযের সময় জুতা পরিধান করা সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। কিন্তু এর বিশুদ্ধতার ব্যাপারে চিন্তাভাবনার অবকাশ রয়েছে। এর উপর ভিত্তি করেই হাদীসে বলা হয়েছে যে, নামাযের সময় সুন্দর সুন্দর সাজে সজ্জিত হওয়া মুসতাহাব, বিশেষ করে জুমআ’ ও ঈদের দিন সুগন্ধি ব্যবহার করাও উত্তম। কেননা, এটাও সৌন্দর্যেরই অন্তর্ভুক্ত।সবচেয়ে উত্তম পোশাক হচ্ছে সাদা পোশাক। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ তোমরা সাদা পোশাক পরিধান কর, কেননা, এটাই হচ্ছে সবচেয়ে উত্তম পোশাক। নিজেদের মৃতদেরকেও এই কাপড়ের কাফন পরাও। তোমরা চোখে সুরমা ব্যবহার কর। কেননা, এটা দৃষ্টিশক্তিকে তীক্ষ করে এবং ভ্র গজিয়ে থাকে।” এ হাদীসটির ইসনাদ খুবই উত্তম। তামীম দারী ( রঃ ) এক হাজার দিরহামের বিনিময়ে একটি চাদর ক্রয় করেছিলেন এবং ওটা পরিধান করে নামায পড়তেন। আল্লাহ পাক বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ“ তোমরা খাও ও পান কর, কিন্তু অপব্যয় ও অমিতাচার করো না' । এ আয়াতে সুরুচি সম্পন্ন ও পবিত্র সমুদয় জিনিসই অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেন যে, এর ভাবার্থ হচ্ছে- তোমরা যা ইচ্ছা খাও এবং যা ইচ্ছা পান কর, তোমাদের উপর কোনই দোষারোপ করা হবে না। কিন্তু দু'টি জিনিস নিন্দনীয় বটে। একটি হচ্ছে অপব্যয় ও অমিতাচার এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে দর্প ও অহংকার। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ তোমরা খাও, পর এবং অপরকেও দাও । কিন্তু অপব্যয় করো না এবং তোমাদের মধ্যে যেন অহংকার প্রকাশ না পায়। আল্লাহ তা'আলা তোমাদের উপর স্বীয় নিয়ামতরাশি প্রতীয়মান দেখতে চান।” এটা হচ্ছে পরিধান সম্পর্কীয় কথা। এখন খাওয়া সম্পর্কীয় কথা এই যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ ঐ পাত্র অপেক্ষা জঘন্য পাত্র আর নেই যে পাত্রের আহার্য পেট পূর্ণ করে ভক্ষণ করা হয় । মানুষের জন্যে তো এমন কয়েক গ্রাস খাদ্যই যথেষ্ট যা তাকে স্বীয় অবস্থায় কায়েম রাখতে সক্ষম হয়। আর যদি সে আরও কিছু খেতে চায় তবে যেন পেটের এক তৃতীয়াংশে খাবার দেয়, এক তৃতীয়াংশে পানি রাখে এবং বাকী এক তৃতীয়াংশ সহজভাবে শ্বাস লওয়ার জন্যে ফাকা রেখে দেয়।” রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আরও বলেছেনঃ “ ইসরাফ’ বা অপব্যয় হচ্ছে এই যে, মানুষ মনে যা চাইবে তাই খাবে ।” সুদ্দী ( রঃ ) বলেন যে, যে লোকেরা উলঙ্গ হয়ে বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করতো তারা হজ্বের মৌসুমে নিজেদের উপর চর্বি হারাম করে নিতো। এ জন্যেই আল্লাহ পাক বলেনঃ “ চর্বি হারাম নয় । তোমরা খাও, পান কর এবং চর্বিকে হারাম করে নেয়ার ব্যাপারে যে বাড়াবড়ি করেছে তা আর করো না।” মুজাহিদ ( রঃ ) বলেন যে, এর ভাবার্থ হচ্ছে- ‘আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে যা কিছু দিয়েছেন তা তোমরা খাও এবং পান কর। আব্দুর রহমান ইবনে যায়েদ ( রঃ ) বলেনঃ ( আরবী ) -এর ভাবার্থ হচ্ছে- তোমরা খাও কিন্তু হারাম খেয়ো না। কেননা এটা বাড়াবাড়ি । হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেন যে, এর দ্বারা বুঝানো হয়েছেতোমরা খাও পান কর, কিন্তু অতিরিক্ত পানাহার করো না। কেননা এটাই হচ্ছে ‘ইসরাফ’ বা অপব্যয়আল্লাহ তা'আলা অপব্যয়কারীকে ভালবাসেন না।। শব্দ দ্বারা বা সীমালংঘনকারীকে বুঝানো হয়েছে। যেমন আল্লাহ পাক বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলা সীমালংঘন কারীদেরকে ভালবাসেন না । কেননা, লোকেরা বাড়াবাড়ি করে সাবধানতা অবলম্বন করতঃ হালালকেও হারাম করে নিতো অথবা হারামকেও হালাল বানিয়ে নিতো। আল্লাহ পাকের অভিপ্রায় হচ্ছে- “ তোমরা হালালকে হালাল রাখ এবং হারামকে হারাম রাখ । এটাই হচ্ছে ন্যায়পরায়ণতা এবং এরই নির্দেশ দেয়া হয়েছে।”

সূরা আ'রাফ আয়াত 31 সূরা

يابني آدم خذوا زينتكم عند كل مسجد وكلوا واشربوا ولا تسرفوا إنه لا يحب المسرفين

سورة: الأعراف - آية: ( 31 )  - جزء: ( 8 )  -  صفحة: ( 154 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. তারা বলবে, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদের প্রতি তাঁর ওয়াদা পূর্ণ করেছেন এবং আমাদেরকে এ
  2. সুতরাং এভাবে প্রকাশ হয়ে গেল সত্য বিষয় এবং ভুল প্রতিপন্ন হয়ে গেল যা কিছু তারা
  3. আর যখন আপনি তাদের নিকট কোন নিদর্শন নিয়ে না যান, তখন তারা বলে, আপনি নিজের
  4. যে কেউ আল্লাহ ও রসূলের অবাধ্যতা করে এবং তার সীমা অতিক্রম করে তিনি তাকে আগুনে
  5. যাকাত হল কেবল ফকির, মিসকীন, যাকাত আদায় কারী ও যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদে হক
  6. আমার বান্দাদেরকে বলে দিন যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে, তারা নামায কায়েম রাখুক এবং আমার দেয়া
  7. এর কারণ এই যে, তাদের কাছে তাদের রসূলগণ সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী নিয়ে আগমন করত, অতঃপর তারা
  8. আমি এই পৃথিবীতে অভিশাপকে তাদের পশ্চাতে লাগিয়ে দিয়েছি এবং কেয়ামতের দিন তারা হবে দুর্দশাগ্রস্ত।
  9. আপনি বলে দিনঃ যা কিছু বিধান ওহীর মাধ্যমে আমার কাছে পৌঁছেছে, তন্মধ্যে আমি কোন হারাম
  10. হয় আল্লাহ তাদের ক্ষমা করবেন কিংবা তাদেরকে আযাব দেবেন। এ ব্যাপারে আপনার কোন করণীয় নাই।

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা আ'রাফ ডাউনলোড করুন:

সূরা Araf mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Araf শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত আ'রাফ  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত আ'রাফ  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত আ'রাফ  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত আ'রাফ  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত আ'রাফ  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত আ'রাফ  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত আ'রাফ  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত আ'রাফ  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত আ'রাফ  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত আ'রাফ  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত আ'রাফ  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত আ'রাফ  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত আ'রাফ  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত আ'রাফ  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত আ'রাফ  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত আ'রাফ  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত আ'রাফ  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত আ'রাফ  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত আ'রাফ  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত আ'রাফ  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত আ'রাফ  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত আ'রাফ  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত আ'রাফ  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত আ'রাফ  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত আ'রাফ  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Wednesday, December 18, 2024

Please remember us in your sincere prayers