কোরান সূরা হাজ্জ আয়াত 33 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Hajj ayat 33 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা হাজ্জ আয়াত 33 আরবি পাঠে(Hajj).
  
   

﴿لَكُمْ فِيهَا مَنَافِعُ إِلَىٰ أَجَلٍ مُّسَمًّى ثُمَّ مَحِلُّهَا إِلَى الْبَيْتِ الْعَتِيقِ﴾
[ الحج: 33]

চতুস্পদ জন্তুসমূহের মধ্যে তোমাদের জন্যে নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত উপকার রয়েছে। অতঃপর এগুলোকে পৌছাতে হবে মুক্ত গৃহ পর্যন্ত। [সূরা হাজ্জ: 33]

Surah Al-Hajj in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Hajj ayat 33


এদের মধ্যে তোমাদের জন্য উপকার রয়েছে এক নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত, তারপর তাদের কুরবানির স্থান হচ্ছে প্রাচীন গৃহের সন্নিকটে।


Tafsir Mokhtasar Bangla


৩৩. যে হাদিগুলোকে তোমরা বাইতুল্লাহের এলাকায় জবেহ করো তাতে মূলতঃ তোমাদেরই ফায়েদা রয়েছে। যেমন: তার পিঠে চড়া, তার পশম, তার বাচ্চা ও দুধ। যা বাইতুল্লাহ তথা যে ঘরকে আল্লাহ জবরদখলকারীদের কবল থেকে রক্ষা করেছেন তার নিকট জবাই করার নির্দিষ্ট সময়ের পূর্ব পর্যন্ত উপভোগ করা যায়।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


( পশু )গুলোতে তোমাদের জন্য নানাবিধ উপকার রয়েছে এক নির্দিষ্ট কালের জন্য; [১] অতঃপর ওগুলির কুরবানীর স্থান প্রাচীন গৃহের নিকট। [২] [১] উক্ত উপকার লাভ হয় সওয়ার হয়ে, তার দুধ পান করে, তার লোম ইত্যাদি সংগ্রহ করে এবং তার বংশ-বিস্তারের মাধ্যমে। নির্দিষ্ট কাল বলতে যবেহ করার সময়, অর্থাৎ যবেহ না হওয়া পর্যন্ত উক্ত উপকার তোমরা গ্রহণ করে থাকো। এখান হতে বুঝা গেল যে, কুরবানীর জন্তু দ্বারা যবেহ না হওয়া পর্যন্ত উপকার নেওয়া যেতে পারে। সহীহ হাদীসেও এর সমর্থন মিলে। এক ব্যক্তি কুরবানীর জন্তু সাথে নিয়ে যাচ্ছিল। নবী ( সাঃ ) তাকে বললেন, " ওর উপর সওয়ার হও। " সে বলল, 'এটি কুরবানীর পশু।' নবী ( সাঃ ) বললেন, " তুমি ওর উপর সওয়ার হও। " ( বুখারী, হজ্জ অধ্যায় ) [২] হালাল বা কুরবানী হওয়ার স্থান, অর্থাৎ যেখানে তা যবেহ করে হালাল বা কুরবানী করা হয়। অর্থাৎ, এই পশুগুলো কা'বাগৃহ ও হারামে পৌঁছে যায় অতঃপর হজ্জের কার্যাদি সম্পন্ন করে সেখানে আল্লাহর নামে কুরবানী করে দেওয়া হয়। সুতরাং উপরোক্ত উপকার গ্রহণের পথ বন্ধ হয়ে যায়। আর যদি তা শুধু মাত্র হারামের জন্য 'হাদ্ই' হয়, তাহলে হারামে পৌঁছেই তা যবেহ করে দেওয়া হয় এবং মক্কার গরীবদের মাঝে তার গোশত বিলি করে দেওয়া হয়।

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


এ সব চতুষ্পদ জন্তুগুলোতে তোমাদের জন্য নানাবিধ উপকার রয়েছে এক নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত []; তারপর তাদের যবাইয়ের স্থান হচ্ছে প্রাচীন ঘরটির কাছে []। [] পূর্বের আয়াতে আল্লাহর নিদর্শনসমূহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং তাকে মনের তাকওয়ার আলামত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর যেহেতু হাদঈ তথা হজ্জ অথবা ওমরাহকারী ব্যক্তি যবেহ করার জন্য যে জন্তু সাথে নিয়ে যায়, তাও হজ্জের একটি নিদর্শন। যেমন কুরআন নিজেই পরবর্তী পর্যায়ে বলছেঃ “ এবং এ সমস্ত হাদঈর উটকে আমরা তোমাদের জন্য আল্লাহর নিদর্শনাবলীর অন্তর্ভুক্ত করেছি ।" [ ৩৬ ] অর্থাৎ হাজীদের সাথে আনা হাদঈর পশুও আল্লাহর নিদর্শনাবলীর অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু তাই বলে কি এ সমস্ত চতুষ্পদ জন্তু থেকে দুধ, সওয়ারী, মাল পরিবহণ ইত্যাদি সর্বপ্রকার উপকার লাভ করা কি হালাল নয়? আল্লাহর নিদর্শনাবলীর প্রতি সম্মান দেখানোর যে হুকুম ওপরে দেয়া হয়েছে তার দাবী কি এই যে, কুরবানীর পশুগুলোকে যখন আল্লাহর ঘরের দিকে নিয়ে যাওয়া হয় তখন তাদেরকে কোন ভাবে ব্যবহার করা যাবে না? তাদের পিঠে চড়া অথবা পিঠে জিনিসপত্র চাপিয়ে দেয়া কিংবা তাদের দুধ পান করা কি আল্লাহর নিদর্শনাবলীর প্রতি সম্মান দেখাবার বিরোধী? আরবের লোকেরা একথাই মনে করতো। তারা এ পশুগুলোকে একেবারেই আরোহীশূন্য অবস্থায় সুসজ্জিত করে নিয়ে যেতো। পথে তাদের থেকে কোন প্রকার লাভবান হওয়া তাদের দৃষ্টিতে ছিল পাপ। এ ভুল ধারণা দূর করার জন্য এখানে বলা হচ্ছে, জবাই করার জায়গায় পৌঁছে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তোমরা এ পশুদের থেকে লাভবান হতে বা উপকার অর্জন করতে পারো। এটা আল্লাহর নিদর্শনালীর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের বিরোধী নয়। এ ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাদীস রয়েছে। [ দেখুন- বুখারীঃ ১৬৯০, মুসলিমঃ ২৩:২৩, ১৩২৪ ] [] এখানে الْبَيْتِ الْعَتِيْقِ ( প্রাচীন গৃহ ) বলতে কা'বা বোঝানো হয়েছে। কিন্তু এর দ্বারা কি শুধু কা'বা উদ্দেশ্য না কি পূর্ণ হারাম উদ্দেশ্য ? যদি শুধু কা'বা উদ্দেশ্য নেয়া হয় তখন এর অর্থ হবে, হজের কর্মকাণ্ড, আরাফায় অবস্থান, পাথর নিক্ষেপ, সায়ী ইত্যাদি সবই বাইতুল্লাহর তাওয়াফে ইফাদার মাধ্যমে শেষ হবে। আর তখন محل শব্দের অর্থ হবে, মুহরিমের জন্য ইহরাম থেকে হালাল হওয়ার স্থান। [ কুরতুবী ] ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে এ তাফসীরটি বর্ণিত আছে। তিনি বলেছেন, কেউ বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করার সাথে সাথে হালাল হয়ে যাবে। তারপর তিনি এ আয়াতাংশ তেলাওয়াত করলেন। [ ইবন কাসীর ] ইবনুল আরাবী এখানে এ অর্থকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। কারণ, আয়াতে স্পষ্টভাবে কা'বার কথা আছে। [ আহকামুল কুরআন; কুরতুবী ] আর যদি 'প্রাচীন গৃহ' বলে পূর্ণ হারাম এলাকা বোঝানো হয়ে থাকে, তখন আয়াতের অর্থ হবে, হাদঈ কা'বার কাছে পৌছতে হবে। আর - অর্থ হাদঈর জন্তুর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার স্থান বা যবেহ করার স্থান বোঝানো হয়েছে। কারণ, হারাম বায়তুল্লাহরই বিশেষ আঙিনা। সে হিসেবে আয়াতের অর্থ এই যে, হাদঈর জন্তু যবেহ করার স্থান বায়তুল্লাহর সন্নিকট; অর্থাৎ সম্পূর্ণ হারাম এলাকা। এতে বোঝা গেল যে, হারাম এলাকার ভিতরে হাদঙ্গ যবোহ করা জরুরী, হারাম এলাকার বাইরে জায়েয নয়। হারাম এলাকার যে কোন স্থানে হাদঈর প্রাণী যবোহ করা যাবে। সে হিসেবে মক্কার হারাম এলাকা, মিনা, মুযদালফার যেখানেই হাদঈর প্রাণী যবোহ করা হোক, তা শুদ্ধ হবে। শুধু কা'বা ঘরের কাছে হতে হবে এমন কথা নেই। আয়াতের অর্থ এই নয় যে, কাবাঘরে বা মসজিদে হারামে হাদঈ জবাই করতে হবে বরং এর অর্থ হচ্ছে হারামের সীমানার মধ্যে হাদঈ জবাই করতে হবে।

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


৩২-৩৩ নং আয়াতের তাফসীর: এখানে আল্লাহর নিদর্শনাবলীর মর্যাদার বর্ণনা দেয়া হচ্ছে, কুরবানীর জন্তুও যার অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তাআলার আহকামের উপর আমল করার অর্থই হলো ওগুলিকে শ্রদ্ধা করা। হযরত ইবনু আব্বাস ( রাঃ ) বলেন যে, নিদর্শনকারীকে শ্রদ্ধা করার অর্থ হলো কুরবানীর জন্তুগুলিকে মোটা তাজা ও সুন্দর করা। হযরত সাহল ( রাঃ ) বলেনঃ “ মদীনায় আমরা কুরবানীর জন্তু গুলিকে লালন পালন করে মোটা তাজা করতাম । সমস্ত মুসলমানের মধ্যে এই প্রচলণই ছিল।” ( এটা ইমাম বুখারী (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ দু'টো কালো বর্ণের জন্তুর রক্ত অপেক্ষা একটি সাদা বর্ণের জন্তুর রক্ত আল্লাহ তাআলার নিকট বেশী প্রিয় ও পছন্দনীয় ।" ( এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ ) ও ইমাম ইলু মাজাহ্ ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত আনাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) সাদা কালো মিশ্রিত রঙ এর বড় বড় শিং বিশিষ্ট দুটো ভেড়া কুরবানী করেন।” ( এ হাদীসটি সহীহ বুখারীতে বর্ণিত হয়েছে )হযরত আবু সাঈদ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) সাদাকালো মিশ্রিত রঙ এর বড় শিং বিশিষ্ট একটি ভেড়া কুরবানী করেন যার মুখের উপর চোখের পার্শ্বে এবং পাগুলির উপর কালো দাগ ছিল। ( এ হাদীসটি সুনান গ্রন্থসমূহে বর্ণিত হয়েছে এবং ইমাম তিরমিযী (রঃ ) এটাকে সঠিক বলেছেন)হযরত আবু রাফে ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) দু'টি খুব মোটা তাজা, চিক্কন, সাদা-কালো রঙ মিশ্রিত অণ্ডকোষ কর্তিত ভেড়া কুরবানী করেন।” ( এ হাদীসটি সুনানে ইবনু মাজাহতে বর্ণিত আছে )হযরত আলী ( রাঃ ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যে, আমরা যেন কুরবানীর জন্তু ক্রয় করার সময় চোখ ও কান ভাল করে দেখে নিই এবং সামনের দিক থেকে কান বিশিষ্ট, লম্বাভাবে ফাটা কান বিশিষ্ট ও ছিদ্র যুক্ত কান বিশিষ্ট জন্তু যেন কুরবানী না করি ।" ( এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ ) ও আহলুস সুনান বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম তিরমিযী ( রঃ )এটাকে বিশুদ্ধ বলেছেন) অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) শিং ভাঙ্গা ও কান কাটা জন্তু কুরবানী করতে নিষেধ করেছেন। এর ব্যাখ্যায় হযরত সাঈদ ইবনু মুসাইয়া ( রঃ ) বলেন যে, যদি অর্ধেক বা অর্ধেকের বেশী কান বা শিং না থাকে ( তবে ঐ জন্তু কুরবানী করা চলবে না, এর কম হলে চলবে )।কোন কোন ভাষাবিদ বলেন যে, কোন জানোয়ারের শিং যদি উপর থেকে ভাঙ্গা থাকে তবে আরবীতে ওটাকে ( আরবী ) বলে। আর নীচে থেকে ভাঙ্গা থাকলে ওটাকে ( আরবী ) বলে হাদীসে ( আরবী ) শব্দ রয়েছে। আর কানের কিছু অংশ কাটা থাকলে ওটাকেও ( আরবী ) বলে। ইমাম শাফেয়ী ( রঃ ) বলেন যে, এরূপ জাননায়ারের কুরবানী জায়েয হবে বটে, কিন্তু মাকরূহ হবে। ইমাম আহমাদ ( রঃ ) বলেন যে, এটার কুরবানী জায়েযই নয়। বাহ্যতঃ এই উক্তিটিই হাদীসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ইমাম মালিক ( রঃ ) বলেন যে, শিং হতে যদি রক্ত প্রবাহিত হয় তবে কুরবানী জায়েয হবে না, অন্যথায় জায়েয হবে। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সর্বাধিক সঠিক জ্ঞানের অধিকারী।রাসূলুল্লাহ( সঃ ) হাদীস রয়েছে যে, চার প্রকারের দোষযুক্ত জন্তু কুরবানীর জন্যে জায়েয নয়। ঐ কানা জন্তু যার চোখের টেরা ভাব প্রকাশিত হয়ে পড়েছে। ঐ খোড়া পশু যার খোড়াত্ব প্রকাশ পেয়েছে। ঐ দুর্বল ও ক্ষীণ পশু যার মজ্জা নষ্ট হয়ে গেছে।” ( এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ ) ও আহলুস সুনান হযরত বারা ( রাঃ ) হতে বর্ণনা করেছেন। ইমাম তিরমিযী ( রঃ ) এটাকে বিশুদ্ধ বলেছেন) এ গুলি এমনই দোষ যার ফলে পশুর গোশত কমে যায়। বকরী তো সাধারণতঃ চরেই খায়। কিন্তু অতি দুর্বলতার কারণে সে ঘাস পাতা পায় না। এ কারণেই এই হাদীসের মর্মানুযায়ী ইমাম শাফেয়ী ( রঃ ) প্রভৃতি মনীষীদের নিকট এই ধরনের পর কুরবানী জায়েয নয়। হাঁ, তবে যেই রুগ্ন পশুর রোগ ততো মারাত্মক নয়, বরং খুবই কম, এরূপ পশুর ব্যাপারে ইমাম শাফেয়ীর ( রঃ ) দুটোই উক্তি রয়েছে।হযরত উবা ইবনু আবদিস সালামী ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) নিষেধ করেছেন সম্পূর্ণ শিং কাটা পশু হতে, শিং ভাঙ্গা পশু হতে, কানা জন্তু হতে সম্পূর্ণরূপে দুর্বল প্রাপ্ত হতে যা দুর্বলতার কারণে বা অতি বার্ধক্যের কারণে সদা পশু পালের পিছনে পড়ে থাকে এবং খোড়া জন্তু। হতে। সুতরাং এই সমুদয় দোষযুক্ত পশুর কুরবানী জায়েয নয়। তবে যদি কুরবানীর জন্যে নিখুঁত জন্তু নির্ধারণ করে দেয়ার পর ঘটনাক্রমে ওর মধ্যে কোন দোষ এসে পড়ে, যেমন খোড়া ইত্যাদি হয়ে যায় তা হলে ইমাম শাফেয়ীর ( রঃ ) মতে এর কুরবানী নিঃসন্দেহে জায়েয। কিন্তু ইমাম আবূ হানীফা ( রঃ ) এর বিপরীত মত পোষণ করেন। ইমাম শাফিয়ীর ( রঃ ) দলীল হলো নিম্নের হাদীসটিঃহযরত আবু সাঈদ ( রাঃ ) বলেনঃ “ আমি কুরবানীর জন্যে একটি ভেড়া ক্রয় করি । ওর উপর একটি নেকড়ে বাঘ আক্রমণ করে এবং ওর একটি রান ভেঙ্গে দেয়। আমি ঘটনাটি রাসূলুল্লাহ( সঃ ) নিকট বর্ণনা করি। তিনি বলেনঃ “ তুমি ওটাকেই কুরবানী করতে পার ।( এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)সুতরাং ক্রয় করার সময় জন্তু মোটা তাজা ও নিখুঁত হতে হবে। যেমন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) নির্দেশ দিয়েছেনঃ “ তোমরা ( কুরবানীর পশু কিনবার সময় ) ওর চোখ, কান দেখে নাও ।”হযরত আবদুল্লাহ ইবনু উমার ফারূক ( রাঃ ) একটি অত্যন্ত সুন্দর উষ্ট্রকে কুরবানীর জন্যে নির্দিষ্ট করেন। জনগণ ওর মূল্যায়ণ করে তিন শ' স্বর্ণমুদ্রা। তখন তিনি রাসূলুল্লাহকে ( সঃ ) জিজ্ঞেস করেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! আমি কুরবানীর নামে একটি উট রেখেছি । লোকেরা ওর মূল্যায়ণ করছে। তিনশ’ স্বর্ণ মুদ্রা। আমি কি ওটা বিক্রী করে ওর মূল্যের বিনিময়ে কয়েকটি কুরবানীর জন্তু ক্রয় করতে পারি ? উত্তরে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ “ না, বরং তুমি ওটাই কুরবানী কর ।( এটাও মুসনাদে আহমদে বর্ণিত হয়েছে )হযরত ইবনু আব্বাস ( রাঃ ) বলেন যে, কুরবানীর উট এর অন্তর্ভুক্ত। মুহাম্মদ ইবনু আবি মূসা ( রঃ ) বলেন যে, আরাফার মাঠে অবস্থান করা, মুযদালাফায় গমন করা, জুমরাকে কংকর মারা, মাথা মুণ্ডন করা এবং কুরবানীর উট, এ সব গুলি ( আরবী ) এর মধ্যে গণ্য। হযরত ইবনু উমার ( রাঃ ) বলেন যে, এসব অপেক্ষা অগ্রগণ্য হলো মক্কা শরীফ। মহান আল্লাহ বলেনঃ এ সমস্ত আনআমে তোমাদের জন্যে নানাবিধ উপকার রয়েছে। যেমন এগুলির পশমে তোমাদের জন্যে উপকরি রয়েছে। তোমরা এগুলির উপর সওয়ার হয়ে থাকে। এগুলির চামড়া তোমরা কাজে লাগিয়ে থাকে। এটা একটা নির্দিষ্ট কালের জন্যে। অর্থাৎ যতদিন পর্যন্ত এই জন্তু গুলিকে তোমরা আল্লাহর নামে না রেখে দাও ততদিন পর্যন্ত তোমরা ওগুলির দুধ পান কর এবং বাচ্চা লাভ কর। যখন কুরবানীর জন্যে এগুলিকে নির্দিষ্ট করে দেবে তখন এগুলি আল্লাহর জিনিস হয়ে যাবে। অন্যান্য বুযুর্গ ব্যক্তিবর্গ বলেন যে, প্রয়োজনবোধে এই সময়েও এগুলির উপর আরোহণ করা চলবে। যেমন হযরত আনাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) একটি লোককে তার কুরবানীর জন্তু হাঁকিয়ে নিয়ে যেতে দেখে তাকে বলেনঃ “ এর উপর সওয়ার হয়ে যাও ।" লোকটি তখন বলেঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! আমি একে কুরবানী করার নিয়ত করেছি ।রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তখন তাকে দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার বলেনঃ “ হায় আফসোস! তুমি এর উপর সওয়ার হচ্ছে না কেন? ( এ হাদীসটি সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে )হযরত জাবির ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “প্রয়োজন হলে তোমরা উত্তম পন্থায় ( কুরবানীর জন্তুর উপর ) সওয়ার হয়ে যাও ।( এ হাদীসটি ইমাম মুসলিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)একটি লোকের কুরবানীর উস্ত্রী বাচ্চা প্রসব করে। তখন হযরত আলী • ( রাঃ ) লোকটিকে বলেনঃ “ বাচ্চাটিকে পেট ভরে দুধপান করাও । যদি এ বাচ্চা বেঁচে থাকে তবে তো ভালই। তুমি একে নিজের কাজে লাগাও। কুরবানীর দিন আসলে এ উষ্ট্রীকে ও এর বাচ্চাকে আল্লাহর নামে যবাহ করে দেবে।এরপর মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ অতঃপর এগুলির কুরবানীর স্থান প্রাচীন গৃহের নিকট। যেমন এক জায়গায় আছেঃ ( আরবী ) এবং অন্য এক স্থানে রয়েছে ( আরবী ) এর অর্থ ইতিপূর্বেই বর্ণিত হয়েছে। সুতরাং সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্যে।হযরত ইবনু আব্বাস ( রাঃ ) বলেন যে, বায়তুল্লাহর তাওয়াফকারী ইহরাম হতে হালাল হয়ে যায়। দলীল হিসেবে তিনি। এটাই পাঠ করেন।

সূরা হাজ্জ আয়াত 33 সূরা

لكم فيها منافع إلى أجل مسمى ثم محلها إلى البيت العتيق

سورة: الحج - آية: ( 33 )  - جزء: ( 17 )  -  صفحة: ( 336 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. যে ভয় করে, সে উপদেশ গ্রহণ করবে,
  2. কিন্তু আল্লাহ তা’আলার খাঁটি বান্দাগণ নয়।
  3. পিতা-মাতা যদি তোমাকে আমার সাথে এমন বিষয়কে শরীক স্থির করতে পীড়াপীড়ি করে, যার জ্ঞান তোমার
  4. তবে যে বাড়াবাড়ি করে এরপর মন্দ কর্মের পরিবর্তে সৎকর্ম করে। নিশ্চয় আমি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
  5. যারা কৃপণতা করে এবং মানুষকে কৃপণতার প্রতি উৎসাহ দেয়, যে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তার জানা
  6. আপনার পালনকর্তাই তাদেরকে একত্রিত করে আনবেন। নিশ্চয় তিনি প্রজ্ঞাবান, জ্ঞানময়।
  7. শপথ সেই ফেরেশতাগণের, যারা ডুব দিয়ে আত্মা উৎপাটন করে,
  8. ইব্রাহীম বললেন, পার্থিব জীবনে তোমাদের পারস্পরিক ভালবাসা রক্ষার জন্যে তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে প্রতিমাগুলোকে উপাস্যরূপে গ্রহণ
  9. মানুষ কি স্মরণ করে না যে, আমি তাকে ইতি পূর্বে সৃষ্টি করেছি এবং সে তখন
  10. তবু তারা উহার পা কেটে দিল। তখন সালেহ বললেন-তোমরা নিজেদের গৃহে তিনটি দিন উপভোগ করে

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা হাজ্জ ডাউনলোড করুন:

সূরা Hajj mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Hajj শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত হাজ্জ  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত হাজ্জ  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত হাজ্জ  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত হাজ্জ  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত হাজ্জ  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত হাজ্জ  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত হাজ্জ  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত হাজ্জ  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত হাজ্জ  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত হাজ্জ  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত হাজ্জ  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত হাজ্জ  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত হাজ্জ  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত হাজ্জ  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত হাজ্জ  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত হাজ্জ  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত হাজ্জ  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত হাজ্জ  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত হাজ্জ  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত হাজ্জ  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত হাজ্জ  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত হাজ্জ  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত হাজ্জ  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত হাজ্জ  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত হাজ্জ  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Wednesday, December 18, 2024

Please remember us in your sincere prayers