কোরান সূরা আম্বিয়া আয়াত 37 তাফসীর
﴿خُلِقَ الْإِنسَانُ مِنْ عَجَلٍ ۚ سَأُرِيكُمْ آيَاتِي فَلَا تَسْتَعْجِلُونِ﴾
[ الأنبياء: 37]
সৃষ্টিগত ভাবে মানুষ ত্বরাপ্রবণ, আমি সত্তরই তোমাদেরকে আমার নিদর্শনাবলী দেখাব। অতএব আমাকে শীঘ্র করতে বলো না। [সূরা আম্বিয়া: 37]
Surah Al-Anbiya in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Anbiya ayat 37
মানুষ সৃষ্ট হয়েছে ব্যস্তসমস্ত ছাঁদে। আমি শীঘ্রই তোমাদের দেখাব আমার নিদর্শন সমূহ, সুতরাং তোমারা আমাকে তাড়াতাড়ি করতে বলো না।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৩৭. বস্তুতঃ মানুষকে তাড়াহুড়ার মানসিকতা দিয়েই সৃষ্টি করা হয়েছে। তাই সে কোন কিছু সংঘটিত হওয়ার আগেই তা দ্রæত কামনা করে। যেগুলোর একটি হলো মুশরিকদের দ্রæত শাস্তি কামনা। হে আমার শাস্তির দ্রæত কামনাকারীরা! আমি অচিরেই তোমাদেরকে সেই শাস্তি দেখাবো যা তোমরা দ্রæত কামনা করেছো। অতএব, তোমরা তা আর দ্রæত কামনা করো না।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
মানুষ সৃষ্টিগতভাবে ত্বরা-প্রবণ, শীঘ্রই আমি তোমাদেরকে আমার নিদর্শনাবলী দেখাব; সুতরাং তোমরা আমাকে তাড়াতাড়ি করতে বলো না। [১] [১] এ কথা কাফেরদের আযাব চাওয়ার উত্তরে বলা হয়েছে। যেহেতু মানুষের প্রকৃতিই হল জলদি ও তাড়াহুড়ো করা, সেহেতু তারা নবীর সঙ্গেও জলদি করতে চায় যে, তোমার আল্লাহকে বলে আমাদের উপর অতি শীঘ্র আযাব অবতীর্ণ করা হোক। আল্লাহ বললেন, জলদি করো না, আমি অবশ্যই তোমাদেরকে নিজ নির্দশনাবলী দেখাব। এখানে নির্দশন বলতে আযাবও হতে পারে অথবা রসূল ( সাঃ )-এর সত্যতার দলীল-প্রমাণাদিও হতে পারে।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
মানুষ সৃষ্টিগতভাবে ত্বরাপ্রবন [ ১ ] শীঘ্রই আমি তোমাদেরকে আমার নিদর্শনাবলী দেখাব; কাজেই তোমরা তাড়াহুড়া কামনা করো না। [ ১ ] ত্বরাপ্রবণতার স্বরূপ হচ্ছে, কোন কাজ সময়ের পূর্বেই করা। এটা স্বতন্ত্র দৃষ্টিতে নিন্দনীয়। কুরআনের অন্যত্রও একে মানুষের দুর্বলতারূপে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছেঃ “ মানুষ অত্যন্ত ত্বরাপ্রবন” [ সূরা আল-ইসরাঃ, ১১ ] আলোচ্য আয়াতের উদ্দেশ্য এই যে, মানুষের মজ্জায় যেসব দুর্বলতা নিহিত রয়েছে, তন্মধ্যে এক দুর্বলতা হচ্ছে ত্বরা-প্রবণতা । স্বভাবগত ও মজ্জাগত বিষয়কে আরবরা এরূপ ভঙ্গিতেই ব্যক্ত করে। উদাহরণতঃ কারও স্বভাবে ক্ৰোধ প্রবল হলে আরবরা বলেঃ লোকটি ক্রোধ দ্বারা সৃজিত হয়েছে। ঠিক তেমনি এখানে অর্থ করা হবে যে, ত্বরাপ্রবণতা মানুষের প্রকৃতিগত বিষয়। [ দেখুন, কুরতুবী ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৩৬-৩৭ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তাআলা স্বীয় নবীকে ( সাঃ ) সম্বোধন করে বলেনঃ হে নবী ( সঃ )! কাফিররা যখন তোমাকে দেখে অর্থাৎ কুরায়েশ কাফিররা, যেমন আবু জেহেল প্রভৃতি, তখন তারা তোমাকে শুধু বিদ্রুপের পাত্র রূপেই গ্রহণ করে এবং তোমার সাথে বেআদবী শুরু করে দেয়। তারা পরস্পর বলাবলি করেঃ দেখো, এই কি ঐ ব্যক্তি, যে আমাদের দেবদেবীগুলির সমালোচনা করে? একে তো এটা তাদের হঠকারিতা, দ্বিতীয়তঃ তারা নিজেরাই 'রহমান' ( দয়াময় আল্লাহ ) এর উল্লেখের বিরোধিতাকারী ও তাঁর রাসূলকে ( সঃ ) অস্বীকারকারী। যেমন আল্লাহ তাআলা অন্য জায়গায় বলেছেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ তারা যখন তোমাকে দেখে তখন তারা তোমাকে শুধু ঠাট্টা বিদ্রুপের পাত্ররূপে গণ্য করে এবং বলেঃ এই কি সে, যাকে আল্লাহ রাসূল করে পাঠিয়েছেন? সে তো আমাদেরকে আমাদের দেবতাগণ হতে সরিয়েই দিতে যদি না আমরা তাদের আনুগত্যে দৃঢ়-প্রতিষ্ঠিত থাকতাম; যখন তারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে তখন তারা জানবে কে সর্বাধিক পথভ্রষ্ট ।” ( ২৫:৪১-৪২ )।মহান আল্লাহ বলেনঃ ‘মানুষ সৃষ্টিগতভাবে ত্বরা প্রবণ। যেমন অন্য আয়াতে আছেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ মানুষ তো অতিমাত্রায় ত্বরা প্রিয় ।” ( ১৭:১১ ) হযরত মুজাহিদ ( রঃ ) বলেন যে, আল্লাহ তাআলা সমস্ত মানুষকে সৃষ্টি করার পর হযরত আদমকে ( আঃ ) সৃষ্টি করতে শুরু করেন। সন্ধ্যায় নিকটবর্তী সময়ে যখন তার মধ্যে রূহ্ ফুঁক দেয়া হয়, মাথা, চক্ষু ও জিহ্বায় যখন রূহ্ চলে আসে তখন তিনি বলে ওঠেনঃ “ হে আমার প্রতিপালক! মাগরিব হওয়ার পূর্বেই তাড়াতাড়ি করে আমার সৃষ্টিকার্য সমাপ্ত করুন ।”হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ সমস্ত দিনের মধ্যে সর্বোত্তম দিন হচ্ছে শুক্রবারের দিন । ঐ দিনেই হযরত আদমকে ( আঃ ) সৃষ্টি করা হয়। সেই দিনেই তিনি জান্নাতে প্রবেশ করেন। ঐদিনেই তাঁকে জান্নাত হতে বের করে দুনিয়ায় নামিয়ে দেয়া হয়। ঐ দিনেই কিয়ামত সংঘটিত হবে। ঐদিনের মধ্যে এমন এক সময় রয়েছে যে, ঐ সময়ে যে বান্দা নামাযে থেকে আল্লাহ তাআলার নিকট যা চায় তিনি তাকে তা প্রদান করে থাকেন।” রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাঁর অঙ্গুলীগুলি দ্বারা ইশারা করে বলেনঃ “ ওটা অতি অল্প সময় ।” হযরত আবদুল্লাহ ইবনু সালাম ( রাঃ ) বলেনঃ “ ঐ সময়টুকু কোন সময় তা আমার জানা আছে । ওটা হলো জুমআর দিনের শেষ সময়টুকু। ঐ সময়েই আল্লাহ তাআলা হযরত আদমকে ( আঃ ) সৃষ্টি করেন। অতঃপর তিনি এই আয়াতটিই পাঠ করেন। ( এ হাদীসটি ইনু আবি হাতিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন) প্রথম আয়াতে কাফিরদের হঠকারিতার বর্ণনা দেয়ার পর পরই দ্বিতীয় আয়াতে আল্লাহ তাআলা মানব জাতির ত্বরা প্রবণতার বর্ণনা দিয়েছেন। এতে নিপুণতা এই রয়েছে যে, কাফিরদের হঠকারিতার ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ কাজ দেখা মাত্রই মুসলমানরা প্রতিশোধ গ্রহণের জন্যে উত্তেজিত হয়ে ওঠে এবং তারা অতি তাড়াতাড়ি বদলা নেয়ার ইচ্ছা করে। কেননা, মানুষ সৃষ্টিগত ভাবেই ত্বরা প্রবণ। কিন্তু মহান আল্লাহর নীতি এই যে, তিনি অত্যাচারীদেরকে অবকাশ দিয়ে থাকেন। অতঃপর যখন তাদেরকে পাকড়াও করেন তখন আর ছেড়ে দেন না। এজন্যেই তিনি বলেনঃ আমি তোমাদেরকে আমার নিদর্শনাবলী দেখাবো। তাদের শাস্তি কত কঠোর তা তোমরা অবশ্যই দেখতে পাবে। তোমরা অপেক্ষা করতে থাকে এবং আমাকে তাদের শাস্তির ব্যাপারে ত্বরা করতে বলো না।
সূরা আম্বিয়া আয়াত 37 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- আল্লাহ দিন ও রাত্রির পরিবর্তন ঘটান। এতে অর্ন্তদৃষ্টি-সম্পন্নগণের জন্যে চিন্তার উপকরণ রয়েছে।
- তারা আপনাকে পাহাড় সম্পর্কে প্রশ্ন করা। অতএব, আপনি বলুনঃ আমার পালনকর্তা পহাড়সমূহকে সমূলে উৎপাটন করে
- অতঃপর আমি বলেছি, তোমরা সেই সম্প্রদায়ের কাছে যাও, যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা অভিহিত করেছে। অতঃপর
- আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
- বলুন, আমিও তোমাদের মতই মানুষ, আমার প্রতি ওহী আসে যে, তোমাদের মাবুদ একমাত্র মাবুদ, অতএব
- সেই অবধারিত সময় উপস্থিত হওয়ার দিন পর্যন্ত।
- যাতে আছে, সঠিক বিষয়বস্তু।
- আল্লাহর পরিবর্তে সে যার এবাদত করত, সেই তাকে ঈমান থেকে নিবৃত্ত করেছিল। নিশ্চয় সে কাফের
- যদি তোমরা গৃহে কাউকে না পাও, তবে অনুমতি গ্রহণ না করা পর্যন্ত সেখানে প্রবেশ করো
- তারা বিস্ময়বোধ করে যে, তাদেরই কাছে তাদের মধ্যে থেকে একজন সতর্ককারী আগমন করেছেন। আর কাফেররা
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা আম্বিয়া ডাউনলোড করুন:
সূরা Anbiya mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Anbiya শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers