কোরান সূরা দুখান আয়াত 37 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Ad Dukhaan ayat 37 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা দুখান আয়াত 37 আরবি পাঠে(Ad Dukhaan).
  
   

﴿أَهُمْ خَيْرٌ أَمْ قَوْمُ تُبَّعٍ وَالَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ ۚ أَهْلَكْنَاهُمْ ۖ إِنَّهُمْ كَانُوا مُجْرِمِينَ﴾
[ الدخان: 37]

ওরা শ্রেষ্ঠ, না তুব্বার সম্প্রদায় ও তাদের পূর্ববর্তীরা? আমি ওদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছি। ওরা ছিল অপরাধী। [সূরা দুখান: 37]

Surah Ad-Dukhaan in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Ad Dukhaan ayat 37


এরাই কি ভাল, না তুব্বার লোকেরা, এবং যারা এদের পূর্ববর্তী ছিল? আমরা তাদের ধ্বংস করেছিলাম, কারণ তারা ছিল অপরাধী।


Tafsir Mokhtasar Bangla


৩৭. হে রাসূল! আপনার প্রতি মিথ্যারোপকারী এ সব মুশরিক কি ক্ষমতা ও প্রতিরক্ষায় ভালো, না কি তুব্বা ও তাদের পূর্ববর্তী আদ ও সামূদ জাতি। যাদের সবাইকে আমি ধ্বংস করেছি। তারা ছিলো সত্যিই অপরাধী।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


ওরা কি শ্রেষ্ঠ, না তুব্বা’ সম্প্রদায় ও তাদের পূর্ববর্তীরা; আমি ওদেরকে ধ্বংস করেছিলাম, নিশ্চয় ওরা ছিল অপরাধী। [১] [১] অর্থাৎ, মক্কার এই কাফেররা তুববা' এবং তাদের পূর্বের সম্প্রদায় আ'দ ও সামুদ ইত্যাদিদের থেকেও বেশী শ্রেষ্ঠ নাকি? যখন আমি তাদেরকে তাদের পাপের কারণে এদের থেকেও বেশী শক্তিশালী হওয়া সত্ত্বেও ধ্বংস করে দিয়েছি, তখন এরা আবার কি এমন মর্যাদা রাখে? তুব্বা' বলতে সাবা' সম্প্রদায়কে বুঝানো হয়েছে। সাবা'য় হিময়ার নামক এক গোত্র ছিল। এরা তাদের বাদশাহকে তুব্বা' বলত। যেমন, রোমক রাজাদেরকে কায়সার, পারস্যের রাজাদেরকে কিসরা, মিশরের শাসকদেরকে ফিরআউন এবং হাবশার রাজাদেরকে নাজাশী বলা হত। ঐতিহাসিকগণ এ ব্যাপারে একমত যে, তুব্বা'দের মধ্যে কোন কোন তুব্বা' বড় বিজয়-আধিপত্য অর্জন করে। কোন কোন ঐতিহাসিক তো এতদূর পর্যন্ত বলেছেন যে, তারা দেশসমূহ জয় করতে করতে সমরকন্দ পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল। এইভাবে আরো কয়েকজন প্রতাপশালী বাদশাহ এই জাতির মধ্যে অতিবাহিত হয়েছে এবং তারা তাদের যুগের এক বৃহত্তম সম্প্রদায় ছিল; যারা শক্তি-ক্ষমতা, প্রভাব-প্রতিপত্তি এবং সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের দিক দিয়ে পৃথক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ছিল। কিন্তু যখন এ জাতিও নবীদেরকে মিথ্যাজ্ঞান করল, তখন তাদেরকেও ধ্বংস করে শেষ করে দেওয়া হল। ( বিস্তারিত জানার জন্য দ্রষ্টব্য, সূরা সাবা'র এ ব্যাপারে আলোচনার আয়াতসমূহ ) হাদীসে এক তুব্বা'র ব্যাপারে এসেছে যে, সে মুসলিম হয়ে গিয়েছিল। তাকে গালিগালাজ করো না। (মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৮ / ১৪৫, সহীহুল জা'মে ১৩১৯নং ) তবে তাদের অধিকাংশরাই ছিল অবাধ্য; যার ফলে তাদের ভাগ্যে নেমে এসেছিল ধ্বংস।

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


তারা কি শ্রেষ্ঠ না তুব্বা’ সম্প্রদায় [] ও তাদের পূর্বে যারা ছিল তারা? আমারা তাদেরকে ধ্বংস করেছিলাম। নিশ্চয় তারা ছিল অপরাধী। [] কুরআনে দু’জায়গায় তুব্বার উল্লেখ রয়েছে- এখানে এবং সুরা ক্বাফে। কিন্তু উভয় জায়গায় কেবল নামই উল্লেখ করা হয়েছে-কোন বিস্তারিত ঘটনা বিবৃত হয়নি। তাই এরা কোন জনগোষ্ঠী এ সম্পর্কে তফসীরবিদগণ বিভিন্ন উক্তি করেছেন। বাস্তবে তুব্বা কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তির নাম নয়, বরং এটা ইয়ামনের হিমইয়ারী সম্রাটদের উপাধিবিশেষ। তারা দীর্ঘকাল পর্যন্ত ইয়ামনের পশ্চিমাংশকে রাজধানী করে আরব, শাম, ইরাক ও আফ্রিকার কিছু অংশ শাসন করেছে। এই সমাটগণকে তাবাবি’য়ায়ে-ইয়ামন বলা হয়। কোন কোন মুফাসসির বলেন, এখানে তাদের মধ্যবর্তী এক সম্রাটকে উদ্দেশ্য করা হয়েছে, যার নাম আসা’আদ আবু কুরাইব ইবনে মাদিকারেব। যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নবুওয়াত লাভের কমপক্ষে সাত’শ বছর পূর্বে অতিক্রান্ত হয়েছে। হিমইয়ারী সম্রাটদের মধ্যে তার রাজত্বকাল সর্বাধিক ছিল। সে তার শাসনামলে অনেক দেশ জয় করে সমরকন্দ পর্যন্ত পৌঁছে যায়। মুহাম্মদ ইবনে ইসহাক বৰ্ণনা করেন, এই দিগ্বিজয়কালে একবার সে মদীনা মুনাওয়ারার জনপদ অতিক্রম করে এবং তা করায়ত্ত করার ইচ্ছা করে। মদীনাবাসীরা দিনের বেলায় তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করত এবং রাত্ৰিতে তার আতিথেয়তা করত। ফলে সে লজ্জিত হয়ে মদীনা জয়ের ইচ্ছা পরিত্যাগ করে। এ সময়েই মদীনার দু’জন ইহুদী আলেম তাকে হুশিয়ার করে দেয় যে, এই শহর সে করায়ত্ত করতে পারবে না; কারণ, এটা শেষ নবীর হিজরতভূমি। সম্রাট ইহুদী আলেমাদ্বয়কে সাথে নিয়ে ইয়ামন প্ৰব্যাবর্তন করে এবং তাদের শিক্ষা ও প্রচারে মুগ্ধ হয়ে ইসলাম গ্ৰহণ করে। অতঃপর তার সম্প্রদায়ও সে দ্বীন গ্রহণ করে। কিন্তু তার মৃত্যুর পর তারা আবার মূর্তিপূজা ও অগ্নিপূজা শুরু করে দেয়। ফলে তাদের উপর আল্লাহর গযব নাযিল হয়। এ থেকে জানা যায় যে, তুব্বার সম্প্রদায় ইসলাম গ্ৰহণ করেছিল, কিন্তু পরে পথভ্রষ্ট হয়ে আল্লাহর গযবে পতিত হয়েছিল। এ কারণেই কুরআনের উভয় জায়গায় তুব্বার সম্প্রদায় উল্লেখ করা হয়েছে; শুধু তুব্বা উল্লেখিত হয়নি? [ দেখুন, তাবারী, ইবন কাসীর, কুরতুবী ] কোন কোন হাদীস থেকে এর সমর্থন পাওয়া যায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: তোমরা তুব্বাকে মন্দ বলো না; কারণ সে ইসলাম গ্ৰহণ করেছিল। [ মুসনাদে আহমাদ: ৫/৩৪০ ]

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


৩৪-৩৭ নং আয়াতের তাফসীর: এখানে আল্লাহ তাআলা মুশরিকদের কিয়ামতকে অস্বীকারকরণ এবং এর দলীলের বর্ণনা দেয়ার পর এটাকে খণ্ডন করেন। তাদের ধারণা ছিল এই যে, কিয়ামত হবে না এবং মৃত্যুর পর পুনর্জীবনও নেই। আর হাশর নশর ইত্যাদি সবই মিথ্যা। তারা দলীল এই পেশ করে যে, তাদের পিতা-মাতা তো মারা গেছে, তারা জীবিত হয়ে পুনরায় ফিরে আসে না কেন? তাদের এই দলীল কতইনা বাজে, অর্থহীন এবং নির্বুদ্ধিতাপূর্ণ! পুনরুত্থান ও মৃত্যুর পর পুনর্জীবন লাভ এটা তো হবে কিয়ামতের সময়। এর অর্থ এটা নয় যে, জীবিত হয়ে পুনরায় দুনিয়ায় ফিরে আসবে। ঐদিন এই যালিমরা জাহান্নামের ইন্ধন হবে। ঐ সময় উম্মতে মুহাম্মাদ ( সঃ ) পূর্বের উম্মতদের উপর সাক্ষী হবে এবং তাদের উপর তাদের নবী ( সঃ ) সাক্ষী হবেন। এরপর আল্লাহ তা'আলা এদেরকে ভীতি প্রদর্শন করছেন যে, এদের এই পাপেরই কারণে এদের পূর্ববর্তীদের উপর যে শাস্তি এসেছিল ঐ শাস্তিই না জানি হয় তো এদের উপরও এসে পড়বে এবং তাদের ন্যায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তাদের ঘটনাবলী সূরায়ে সাবার মধ্যে গত হয়েছে। তারা ছিল কাহতানের আরব এবং এরা হলো আদনানের আরব।সাবার হুমায়েরগণ তাদের বাদশাহকে ‘তুব্বা বলতো, যেমন পারস্যের বাদশাহকে ‘কিসরা', রোমের বাদশাহকে কায়সার, মিসরের বাদশাহকে ফিরাউন' এবং হাবশের বাদশাহকে নাজ্জাসী’ বলা হতো। তাদের মধ্যে একজন তুব্বা ইয়ামন হতে বের হয় এব চরণ করতে থাকে। সে সমরকন্দে পৌছে যায় এবং সব দেশের বাদশাদেরকে পরাজিত করতে থাকে এবং নিজের সাম্রাজ্য বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত করে। নিজ সেনাবাহিনী এবং অসংখ প্রজা তাঁর অধীনস্থ ছিল। সে-ই হীরা নামক শহরটি স্থাপন করে। তার যুগে সে মদীনাতেও এসেছিল। তথাকার অধিবাসীদের সাথে সে যুদ্ধও করেছিল। কিন্তু জনগণ তাকে বাধা দেয়। মদীনাবাসীরা তার সাথে এই আচরণ করে যে, দিনে তার সাথে যুদ্ধ করতো, আবার রাত্রে তার মেহমানদারী করতো। শেষে সেও লজ্জা পায় এবং যুদ্ধ বন্ধ করে দেয়। তথাকার দু’জন ইয়াহুদী আলেম তার সঙ্গী হয়েছিলেন যারা হযরত মূসা ( আঃ )-এর সত্য দ্বীনের উপর ছিলেন। তাঁরা সদা-সর্বদা তাকে ভাল-মন্দ সম্পর্কে উপদেশ দিতে থাকতেন। তারা তাকে বলেনঃ “ আপনি মদীনা ধ্বংস করতে পারেন না । কেননা, এটা হলো শেষ নবীর হিজরতের জায়গা।” সুতরাং সে সেখান হতে ফিরে যায় এবং ঐ দু’জন আলেমকেও সঙ্গে নেয়। যখন সে মক্কায় পৌঁছে তখন সে বায়তুল্লাহ শরীফকে ভেঙ্গে দেয়ার ইচ্ছা করে। কিন্তু ঐ দু’জন আলেম তাকে ঐ কাজ হতে বিরত রাখেন এবং ঐ পবিত্র ঘরের শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদার কথা তার সামনে পেশ করেন। তারা তাকে বুঝিয়ে বলেন যে, এ ঘরের ভিত্তি স্থাপনকারী ছিলেন হযরত ইবরাহীম ( আঃ ) এবং শেষ নবী। ( সঃ )-এর হাতে এ ঘরের মূল শ্রেষ্ঠত্ব ও সম্মান প্রকাশ পাবে। ঐ বাদশাহ তুব্বা তাদের এ কথা শুনে স্বীয় সিদ্ধান্ত পরিত্যাগ করে। এমনকি নিজেই সে বায়তুল্লাহ শরীফের খুব সম্মান করে, ওর তাওয়াফ করে এবং ওর উপর গেলাফ চড়িয়ে দেয়। অতঃপর সে সেখান হতে ইয়ামনে ফিরে যায়। স্বয়ং সে হযরত মূসা ( আঃ )-এর ধর্মে প্রবেশ করে এবং সমগ্র ইয়ামনে এ ধর্মই ছড়িয়ে দেয়। তখন পর্যন্ত হযরত ঈসা ( আঃ )-এর আবির্ভাব ঘটেনি এবং ঐ যুগের লোকদের জন্যে হযরত মূসা ( আঃ )-এর ঐ সত্য ধর্মই পালনীয় ছিল। ঐ তুব্বা বাদশাহর ঘটনা সীরাতে ইবনে ইসহাকের মধ্যে বিস্তারিতভাবে লিপিবদ্ধ রয়েছে এবং হাফিয় ইবনে আসাকিরও ( রঃ ) স্বীয় কিতাবে সুদীর্ঘভাবে আনয়ন করেছেন। তাতে রয়েছে যে, ঐ তুব্বার সিংহাসন দামেস্কে ছিল। তার সেনাবাহিনীর সারি দামেস্ক হতে ইয়ামন পর্যন্ত পৌঁছেছিল। হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী ( সঃ ) বলেছেনঃ ( অপরাধীকে ) হদ লাগানো বা নির্ধারিত শাস্তি প্রদানের পর ঐ শাস্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তির গুনাহ মাফ হয়ে যায় কি-না তা আমি জানি না, আর তুব্বা ( বাদশাহ ) অভিশপ্ত ছিল কি-না সেটাও আমার জানা নেই এবং যুলকারনাইন নবী ছিল কি বাদশাহ ছিল এখবরও আমি রাখি না । অন্য রিওয়াইয়াতে আছে যে, নবী ( সঃ ) এ কথাও বলেনঃ হযরত উযায়ের নবী ছিল কি-না এটাও আমি জানি না ।" ( এ হাদীসটি ইমাম ইবনে আবি হাতিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)ইমাম দারকুতনী ( রঃ ) বলেন যে, এ হাদীসটি শুধু আবদুর রাযযাক ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন। অন্য সনদে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ হযরত উযায়ের নবী ছিলেন কি-না তা আমার জানা নেই এবং তুব্বার উপর লা'নত করা হয়েছে কি-না এটাও আমি জানি না ।” এ হাদীসটি আনয়নের পর হাফিয ইবনে আসাকির ( রঃ ) ঐ দু'টি রিওয়াইয়াত এনেছেন যাতে তুব্বাকে গালি দিতে ও লা'নত করতে নিষেধ করা হয়েছে, যেমন আমরাও বর্ণনা করবো ইনশাআল্লাহ। জানা যাচ্ছে যে, সে পূর্বে কাফির ছিল এবং পরে মুসলমান হয়েছিল, অর্থাৎ হযরত মূসা ( আঃ )-এর দ্বীনে প্রবেশ করেছিল। ঐ যুগের আলেমদের হাতে সে ঈমান ককূল করেছিল। এটা হযরত ঈসা ( আঃ )-এর আবির্ভাবের পূর্বের ঘটনা। জুরহুমের যুগে সে বায়তুল্লাহর হজ্ব করেছিল এবং বায়তুল্লাহর উপর গেলাফও উঠিয়েছিল। এইভাবে সে বায়তুল্লাহ শরীফের প্রতি অত্যন্ত সম্মান প্রদর্শন করেছিল। আল্লাহর নামে সে ছয় হাজার উট কুরবানী করেছিল। আরো খুব দীর্ঘ ঘটনা রয়েছে যা হযরত উবাই ইবনে কা'ব ( রাঃ ), হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম ( রাঃ ) এবং হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে। মূল ঘটনার স্থিতি হযরত কা'ব আহবার ( রাঃ ) এবং হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম ( রাঃ )-এর উপর নির্ভরশীল। অহাব ইবনে মুনাব্বাহও ( রঃ ) এ কাহিনী এনেছেন! হাফিয ইবনে আসাকির ( রঃ ) এই তুব্বার কাহিনীর সাথে অন্য তুব্বার কাহিনীও মিলিয়ে দিয়েছেন যে এর বহু পরে ছিল। এই তুব্বার কওম তো এর হাতে মুসলমান হয়েছিল। এর ইন্তেকালের পর তারা কুফরীর দিকে পুনরায় ফিরে যায় এবং আবার আগুনের ও মূর্তির পূজা শুরু করে দেয়। যেমন এটা সূরায়ে সাবায় বর্ণিত হয়েছে। ওর তাফসীরে আমরাও সেখানে এর পূর্ণ ব্যাখ্যা দিয়েছি। সুতরাং সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই প্রাপ্য।হযরত সাঈদ ইবনে জুবাইর ( রঃ ) বলেন যে, এই ঠুব্বা কা'বার উপর গেলাফ চড়িয়েছিল। হযরত সাঈদ ( রঃ ) জনগণকে বলতেনঃ “ তোমরা তুব্বাকে মন্দ বলো না ।' এ হলো মাঝামাঝির তুব্বা। তার নাম ছিল আসআদ আবু কুরায়েব ইবনে মুলাইকারব ইয়ামানী। তার রাজত্ব তিনশ’ ছাব্বিশ বছর পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। তখনকার রাজাদের মধ্যে কেউই তার মত এতো দীর্ঘস্থায়ী রাজত্ব পায়নি। রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর নবুওয়াতের প্রায় সাতশ' বছর পূর্বে সে মারা যায়। ঐতিহাসিকরা এটাও বর্ণনা করেছেন যে, মদীনা নগরী শেষ নবী ( সঃ )-এর হিজরতের জায়গা হওয়ার কথা যখন মদীনাবাসী ঐ দু'জন আলেম তাকে নিশ্চিতরূপে জানিয়ে দেন তখন সে একটি কবিতা রচনা করে এবং আমানত হিসেবে মদীনাবাসীর কাছে তা রেখে যায়। আর ওটা উত্তরাধিকার সূত্রে পরস্পর হস্তান্তর হতে থাকে। সনদসহ ওর রিওয়াইয়াত বরাবরই আসতে থাকে। শেষ পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর হিজরতের সময় ওর হাফিয ছিলেন হযরত আবু আইয়ুব খালেদ ইবনে যায়েদ ( রাঃ )! ঘটনাক্রমে, বরং আল্লাহর নির্দেশক্রমে রাসূলুল্লাহ( সঃ )-এর অবতরণস্থল হয়েছিল তার বাড়ীটিই। কবিতার পংক্তিগুলো নিম্নরূপঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত আহমাদ ( সঃ )আল্লাহর রাসূল যিনি সমস্ত প্রাণীর সৃষ্টিকর্তা । আমি যদি তার যুগ পর্যন্ত জীবিত থাকি তবে অবশ্যই তাঁর মন্ত্রী ও তার চাচাতো ভাই হিসেবে থাকবো ( এবং তাঁকে সাহায্য করবো )। আর আমি তার শত্রুদের বিরুদ্ধে তরবারী দ্বারা জিহাদ করবো এবং তার অন্তর হতে সমস্ত চিন্তা-দুঃখ দূর করে দিবো।” বর্ণিত আছে যে, ইসলামের যুগে সানআ নামক শহরে একটি কবর খনন করা হয়, তখন দেখা যায় যে, তাতে দু’টি মহিলা সমাধিস্থ রয়েছে, যাদের দেহ সম্পূর্ণরূপে সহীহ সালিম এবং অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। তাদের শিয়রে একটি চাদির ফালি লেগে রয়েছে। তাতে স্বর্ণাক্ষরে লিখিত রয়েছেঃ “ এ হচ্ছে হাই ও তামীসের কবর ।” আর একটি রিওয়াইয়াতে আছে যে, তাদের নাম ছিল হাই ও তামাযুর। মহিলা দু’টি তুব্বার ভগ্নী ছিল। মহিলা দু’টি মৃত্যু পর্যন্ত এ সাক্ষ্য দিয়ে গিয়েছিল যে, আল্লাহ ছাড়া কেউই ইবাদতের যোগ্য নেই। তারা আল্লাহর সাথে কাউকেও শরীক করেনি। তাদের পূর্ববর্তী সমস্ত সৎ লোকই এই সাক্ষ্যদান অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছিল। সূরায়ে সাবার মধ্যে আমরা এই ঘটনা সম্পর্কে সাবার কবিতাগুলোও বর্ণনা করেছি। হযরত কা'ব ( রঃ ) বলতেনঃ “ কুরআন কারীম দ্বারা তুব্বার প্রশংসা এভাবে জানা যায় যে, আল্লাহ তাআলা তার কওমের নিন্দে করেছেন, তার নয় । হযরত আয়েশা ( রাঃ ) বলতেন ? “ তোমরা তুব্বাকে মন্দ বলো না, সে সৎ লোক ছিল ।”হযরত সা'দ সায়েদী ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ তোমরা তুব্বাকে গালি দিয়ো না, সে মুসলমান হয়েছিল ।( এ হাদীসটি ইমাম ইবনে আবি হাতিম (রঃ ), ইমাম আহমাদ ( রঃ ) এবং ইমাম বিতরানী ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ তুব্বা নবী ছিল কি-না তা আমি জানি না । ( এ হাদীসটি আবদুর রাযযাক (রঃ ) বর্ণনা করেছেন) আর একটি রিওয়াইয়াত গত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ তুব্বা অভিশপ্ত ছিল কি-না তা আমার জানা নেই । এসব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সবচেয়ে ভাল জানেন। এই রিওয়াইয়াতটিই হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতেও বর্ণিত আছে। হযরত আতা ইবনে আবি রাবাহ ( রঃ ) বলেনঃ “ তোমরা তুব্বাকে গালি দিয়ো না । রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাকে মন্দ বলতে নিষেধ করেছেন। এসব ব্যাপারে সঠিক জ্ঞানের অধিকারী একমাত্র আল্লাহ

সূরা দুখান আয়াত 37 সূরা

أهم خير أم قوم تبع والذين من قبلهم أهلكناهم إنهم كانوا مجرمين

سورة: الدخان - آية: ( 37 )  - جزء: ( 25 )  -  صفحة: ( 497 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. যুদ্ধে অনুমতি দেয়া হল তাদেরকে যাদের সাথে কাফেররা যুদ্ধ করে; কারণ তাদের প্রতি অত্যাচার করা
  2. যদি তিনি আল্লাহর তসবীহ পাঠ না করতেন,
  3. অতঃপর তারা যখন তাদের ইদ্দতকালে পৌঁছে, তখন তাদেরকে যথোপযুক্ত পন্থায় রেখে দেবে অথবা যথোপযুক্ত পন্থায়
  4. তারা কি এই উদ্দেশ্যে দেশ ভ্রমণ করেনি, যাতে তারা সমঝদার হৃদয় ও শ্রবণ শক্তি সম্পন্ন
  5. খয়রাত ঐ সকল গরীব লোকের জন্যে যারা আল্লাহর পথে আবদ্ধ হয়ে গেছে-জীবিকার সন্ধানে অন্যত্র ঘোরাফেরা
  6. এতে সন্দেহ নেই যে, আমার নিদর্শন সমুহের প্রতি যেসব লোক অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করবে, আমি তাদেরকে
  7. অতঃপর সে সুখী জীবন-যাপন করবে,
  8. তারা সেখানে সিংহাসনে হেলান দিয়ে বসবে। সেখানে রৌদ্র ও শৈত্য অনুভব করবে না।
  9. তোমাদের আগে অতীত হয়েছে অনেক ধরনের জীবনাচরণ। তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ কর এবং দেখ যারা মিথ্যা
  10. যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার নিম্নদেশে নির্ঝরিণীসমূহ প্রবাহিত

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা দুখান ডাউনলোড করুন:

সূরা Ad Dukhaan mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Ad Dukhaan শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত দুখান  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত দুখান  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত দুখান  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত দুখান  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত দুখান  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত দুখান  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত দুখান  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত দুখান  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত দুখান  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত দুখান  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত দুখান  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত দুখান  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত দুখান  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত দুখান  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত দুখান  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত দুখান  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত দুখান  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত দুখান  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত দুখান  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত দুখান  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত দুখান  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত দুখান  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত দুখান  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত দুখান  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত দুখান  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Monday, November 18, 2024

Please remember us in your sincere prayers