কোরান সূরা জাসিয়া আয়াত 5 তাফসীর
﴿وَاخْتِلَافِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَمَا أَنزَلَ اللَّهُ مِنَ السَّمَاءِ مِن رِّزْقٍ فَأَحْيَا بِهِ الْأَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا وَتَصْرِيفِ الرِّيَاحِ آيَاتٌ لِّقَوْمٍ يَعْقِلُونَ﴾
[ الجاثية: 5]
দিবারাত্রির পরিবর্তনে, আল্লাহ আকাশ থেকে যে রিযিক (বৃষ্টি) বর্ষণ করেন অতঃপর পৃথিবীকে তার মৃত্যুর পর পুনরুজ্জীবিত করেন, তাতে এবং বায়ুর পরিবর্তনে বুদ্ধিমানদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। [সূরা জাসিয়া: 5]
Surah Al-Jaathiyah in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Jathiyah ayat 5
আর রাত ও দিনের বিবর্তনে, আর আল্লাহ্ আকাশ থেকে জীবনোপকরণের মধ্যের যা-কিছু পাঠান ও যার দ্বারা পৃথিবীকে সঞ্জীবিত করেন তার মৃত্যুর পরে, আর বায়ু প্রবাহের পরিবর্তনে নিদর্শনাবলী রয়েছে সেই লোকদের জন্য যারা জ্ঞান-বুদ্ধি রাখে।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৫. আর দিবা-রাত্রির পরিক্রমা এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে আসমান থেকে অবতীর্ণ বৃষ্টি যদ্বারা তিনি উদ্ভিদ উদ্গত করার মাধ্যমে শুষ্ক যমীনকে জীবিত করেন যা ইতিপূর্বে মৃত ছিলো এবং তাতে কোনরূপ উদ্ভিদ ছিলো না আর তোমাদের উপকারার্থে কখনো এদিক আবার কখনো ওদিক থেকে বায়ু প্রবাহিত করার মধ্যে রয়েছে জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য প্রমাণাদি। ফলে তারা তদ্বারা আল্লাহর একত্ববাদ, পুনরুত্থান ও অন্য সব কিছুর উপর তাঁর ক্ষমতার প্রমাণ গ্রহণ করে থাকে।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
বহু নিদর্শন রয়েছে জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য রাত ও দিনের পরিবর্তনে, যে বৃষ্টি বর্ষণ দ্বারা পৃথিবীকে তার মৃত্যুর পর তিনি পুনর্জীবিত করেন তাতে[১] এবং বায়ুর পরিবর্তনে। [২] [১] আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং মানুষ ও জীব-জন্তুর সৃষ্টিতে, দিবারাত্রির আগমন-প্রত্যাগমনে এবং আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণের মাধ্যমে মৃত ভূমিকে পুনরায় জীবিত করে তোলা ইত্যাদি সহ সারা বিশ্বজাহানে এমন অসংখ্য নিদর্শন রয়েছে, যা আল্লাহর একত্ব ও তাঁর প্রতিপালকত্বকে প্রমাণ করে।[২] অর্থাৎ, কখনো হাওয়া উত্তর ও দক্ষিণমুখী হয়, কখনো পূর্ব ও পশ্চিমমুখী, কখনো সমুদ্রের হাওয়া আবার কখনো মরুর লু হাওয়া, কখনো হাওয়া রাতে চলে আবার কখনো দিনে, কোন হাওয়া বৃষ্টিবাহী, কোন হাওয়া ফলপ্রসূ, কোন হাওয়া আত্মার খোরাক ( অক্সিজেন )। আবার কোন হাওয়া সব কিছুকে ঝলসে দেয়, কোন হাওয়া শুধু ধুলোবালির ঝড় বয়ে আনে। এত প্রকারের হাওয়াও প্রমাণ করে যে, এই বিশ্বজাহানের কেউ পরিচালক আছেন এবং তিনি একজনই। দু'জন বা তার অধিক নন। সমস্ত এখতিয়ারের মালিক তিনি একাই। এতে তাঁর কোন শরীক নেই। সর্বপ্রকার কর্তৃত্ব কেবল তাঁরই হাতে। অন্য কারো হাতে সামান্য পরিমাণও কিছুর এখতিয়ার নেই। এই অর্থেরই আয়াত হল সূরা বাক্বারার ২:১৬৪ নং আয়াতটি।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর রাত ও দিনের পরিবর্তনে এবং আল্লাহ আকাশ হতে যে রিযক ( পানি ) বর্ষণ করেন, অতঃপর তিনি তা দ্বারা যমীনকে তার মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত করেন তাতে এবং বায়ুর পরিবর্তনে অনেক নিদর্শন রয়েছে, এমন সম্প্রদায়ের জন্য যারা বোঝে।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
১-৫ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তা'আলা স্বীয় মাখলুককে হিদায়াত করছেন যে, তারা যেন মহা ক্ষমতাবান আল্লাহর ক্ষমতার নিদর্শনাবলীর উপর চিন্তা ও গবেষণা করে, তাঁর নিয়ামতরাজিকে জানে ও বুঝে, অতঃপর এগুলোর কারণে তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। তারা যেন এটা দেখে যে, আল্লাহ কত বড় ক্ষমতাবান! যিনি আসমান, যমীন এবং বিভিন্ন প্রকারের সমস্ত মাখলুক সৃষ্টি করেছেন! ফেরেশতা, দানব, মানব, পশু-পাখী, কীট-পতঙ্গ ইত্যাদি সবকিছুরই স্রষ্টা তিনিই। সমুদ্রের অসংখ্য সৃষ্টজীবেরও সৃষ্টিকর্তা তিনিই। দিবসকে রজনীর পরে এবং রজনীকে দিবসের পিছনে আনয়ন তিনিই করছেন। রাত্রির অন্ধকার এবং দিনের ঔজ্জ্বল্য তাঁরই অধিকারভুক্ত জিনিস। প্রয়োজনের সময় মেঘমালা হতে পরিমিত পরিমাণে বৃষ্টি তিনিই বর্ষণ করে থাকেন। রিযক দ্বারা বৃষ্টিকে বুঝানো হয়েছে। কেননা, এর দ্বারাই খাদ্য জাতীয় জিনিস উৎপন্ন হয়ে থাকে। শুষ্কভূমি সিক্ত হয় এবং তা হতে নানা প্রকারের শস্য উৎপাদিত হয়। দিবস ও রজনীতে উত্তরা হাওয়া ও দক্ষিণা হাওয়া এবং পুবালী হাওয়া ও পশ্চিমা হাওয়া এবং শুষ্ক ও সিক্ত হাওয়া তিনিই প্রবাহিত করেন। কোন কোন বায়ু মেঘ আনয়ন করে এবং কোন কোন বায়ু মেঘকে পানিপূর্ণ করে। কোন কোন বাতাস রূহের খোরাক হয় এবং এগুলো ছাড়া অন্যান্য কাজের জন্যেও প্রবাহিত হয়ে থাকে। আল্লাহ পাক প্রথমে বলেন যে, এতে নিদর্শন রয়েছে মুমিনদের জন্যে, এরপর বলেছেনঃ এতে নিশ্চিত বিশ্বাসীদের জন্যে রয়েছে নিদর্শন এবং শেষে বলেছেনঃ এতে নিদর্শন রয়েছে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্যে। এটা একটা সম্মান বিশিষ্ট অবস্থা হতে অন্য একটা বেশী সম্মান বিশিষ্ট অবস্থার দিকে উন্নত করা। এ আয়াতটি সূরায়ে বাকারার নিম্নের আয়াতটির সাথে সাদৃশ্যযুক্তঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ আকাশ মণ্ডল ও পৃথিবীর সৃষ্টিতে, দিবস ও রাত্রির পরিবর্তনে, যা মানুষের হিত সাধন করে তা সহ সমুদ্রে বিচরণশীল নৌযানসমূহে, আল্লাহ আকাশ হতে যে বারি বর্ষণ দ্বারা ধরিত্রিকে ওর মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত করেন । তাতে এবং ওর মধ্যে যাবতীয় জীব-জন্তুর বিস্তারে, বায়ুর দিক পরিবর্তনে, আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যে নিয়ন্ত্রিত মেঘমালাতে জ্ঞানবান জাতির জন্যে নিদর্শন রয়েছে।"( ২:১৬৪ ) ইমাম ইবনে আবি হাতিম ( রঃ ) এখানে একটি দীর্ঘ আসার আনয়ন করেছেন, কিন্তু ওটা গারীব। ওতে মানুষকে চার প্রকারের উপাদান দিয়ে সৃষ্টি করার কথাও রয়েছে। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সবচেয়ে ভাল জানেন।
সূরা জাসিয়া আয়াত 5 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- পথবিশিষ্ট আকাশের কসম,
- এবং মাছওয়ালার কথা স্মরণ করুন তিনি ক্রুদ্ধ হয়ে চলে গিয়েছিলেন, অতঃপর মনে করেছিলেন যে, আমি
- এবং যিনি সুপরিমিত করেছেন ও পথ প্রদর্শন করেছেন
- আমরা আমাদের পালনকর্তার তরফ থেকে এক ভীতিপ্রদ ভয়ংকর দিনের ভয় রাখি।
- বরং তারা বলে যেমন তাদের পূর্ববর্তীরা বলত।
- হে বিশ্বাসীগণ! যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর, আল্লাহ তোমাদেরকে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের পা দৃঢ়প্রতিষ্ঠ
- ফেরেশতাদেরকে বলা হবেঃ ধর একে গলায় বেড়ি পড়িয়ে দাও,
- এবং প্রবাহিত পানিতে,
- এবং তা এই যে, নামায কায়েম কর এবং তাঁকে ভয় কর। তাঁর সামনেই তোমরা একত্রিত
- তিনিই সৃষ্টি করেছেন রাত্রি ও দিন এবং সূর্য ও চন্দ্র। সবাই আপন আপন কক্ষপথে বিচরণ
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা জাসিয়া ডাউনলোড করুন:
সূরা Jathiyah mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Jathiyah শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers