কোরান সূরা আ'রাফ আয়াত 56 তাফসীর
﴿وَلَا تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ بَعْدَ إِصْلَاحِهَا وَادْعُوهُ خَوْفًا وَطَمَعًا ۚ إِنَّ رَحْمَتَ اللَّهِ قَرِيبٌ مِّنَ الْمُحْسِنِينَ﴾
[ الأعراف: 56]
পৃথিবীকে কুসংস্কারমুক্ত ও ঠিক করার পর তাতে অনর্থ সৃষ্টি করো না। তাঁকে আহবান কর ভয় ও আশা সহকারে। নিশ্চয় আল্লাহর করুণা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী। [সূরা আ'রাফ: 56]
Surah Al-Araf in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Araf ayat 56
আর দুনিয়াতে গন্ডগোল সৃষ্টি করো না তার মধ্যে শান্তিপ্রতিষ্ঠার পরে, আর তাঁকে ডাকো ভয়ে ও আশায়। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্র অনুগ্রহ সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৫৬. তোমরা গুনাহে লিপ্ত হওয়ার মাধ্যমে জমিনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করো না। অথচ আল্লাহ তা‘আলা ইতিমধ্যে রাসূলগণকে পাঠিয়ে তা পরিশুদ্ধ করেছেন এবং তাঁর একক আনুগত্যের ধারা প্রতিষ্ঠা করেছেন। তোমরা আল্লাহর শাস্তির ভয় অন্তরে নিয়ে এবং তাঁর সাওয়াব অর্জনের আশায় এককভাবে আল্লাহকে ডাকো। নিশ্চয়ই আল্লাহর রহমত সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী। তাই তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
পৃথিবীতে শান্তি স্থাপনের পর ওতে বিপর্যয় ঘটায়ো না এবং তাঁকে ভয় ও আশার সঙ্গে আহবান কর। নিশ্চয় আল্লাহর করুণা সৎকর্মপরায়ণদের নিকটবর্তী। [১] [১] এই আয়াতগুলোতে চারটি জিনিসের শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। ( ক ) আল্লাহর কাছে কাকুতি-মিনতি সহকারে এবং গোপনে দু'আ করা। যেমন, হাদীসেও এসেছে যে, " হে লোক সকল! তোমরা নিজের উপর দয়ার্দ্র হও। কেননা, তোমরা কোন বধির ও অনুপস্থিতকে ডাকছ না, বরং তোমরা ডাকছ এমন সত্তাকে যিনি সব কিছু শোনেন এবং দেখেন। " (বুখারীঃ দু ' আ অধ্যায়, মুসলিমঃ জান্নাত অধ্যায়) ( খ ) দু'আতে বাড়াবাড়ি না করা। অর্থাৎ, নিজের যোগ্যতা ও মর্যাদার ঊর্ধ্বে যেন দু'আ না করা হয়। ( অনুপযুক্ত কিছু চাওয়া না হয়। ) ( গ ) শান্তি প্রতিষ্ঠার পর ফাসাদ বা অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করা। অর্থাৎ, আল্লাহর অবাধ্যতা করে ফাসাদ সৃষ্টি করার কাজে যেন অংশ না নেওয়া হয়। ( ঘ ) আল্লাহর শাস্তির ভয় যেন অন্তরে থাকে এবং তাঁর দয়ার আশাও। এইভাবে যারা দু'আ করে, তারাই হল সৎকর্মশীল। আর অবশ্যই আল্লাহর রহমত সৎকর্মশীলদের অতি নিকটবর্তী।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর যমীনে শান্তি স্থাপনের পর তোমরা সেখানে বিপর্যয় সৃষ্টি করো না [ ১ ]। আর আল্লাহকে ভয় ও আশার সাথে ডাক [ ২ ]। নিশ্চয় আল্লাহ্র অনুগ্রহ মুহসিনদের খুব নিকটে [ ৩ ] [ ১ ] এখানে - ( صلاح ) ও ( فساد ) শব্দ দুটি পরস্পর বিরোধী। ( صلاح ) শব্দের অর্থ সংস্কার আর ( اصلاح ) শব্দের অর্থ সংস্কার করা এবং ( فساد ) শব্দের অর্থ অনর্থ ও গোলযোগ আর ( افساد ) শব্দের অর্থ অনর্থ সৃষ্টি করা। মূলতঃ সমতা থেকে বের হয়ে যাওয়াকে ‘ফাসাদ’ বলা হয়; তা সামান্য হোক কিংবা বেশী। কম বের হলে কম ফাসাদ এবং বেশী বের হলে বেশী ফাসাদ হবে। কাজেই আয়াতের অর্থ দাঁড়ায় এই যে, পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করো না, আল্লাহ্ তা'আলা কর্তৃক সংস্কার করার পর। আল্লাহ্ তা'আলার সংস্কার কয়েক প্রকার হতে পারে। ( এক ) প্রথমেই জিনিসটি সঠিকভাবে সৃষ্টি করা। যেমন, সূরা মুহাম্মাদের ২নং আয়াতে বলা হয়েছে: ( وَاَصْلَحَ بَالَهُمْ ) ( দুই ) অনর্থ আসার পর তা দূর করা। যেমন, সূরা আল-আহযাবের ৭১নং আয়াতে বলা হয়েছেঃ ( يُّصْلِحْ لَكُمْ اَعْمَالَكُمْ ) ( তিন ) সংস্কারের নির্দেশ দান করা। যেমন, এ আয়াতে বলা হয়েছেঃ “ যখন আল্লাহ্ তা'আলা পৃথিবীর সংস্কার সাধন করেছেন, তখন তোমরা তাতে অনর্থ সৃষ্টি করো না ।" এখানে পৃথিবীর সংস্কার সাধন করার দুটি অর্থ হতে পারে। ( এক ) বাহ্যিক সংস্কার; অর্থাৎ পৃথিবীকে চাষাবাদ ও বৃক্ষ রোপনের উপযোগী করেছেন, তাতে মেঘের সাহায্যে পানি বর্ষণ করে মাটি থেকে ফল-ফুল উৎপন্ন করেছেন এবং মানুষ ও অন্যান্য জীবজন্তুর জন্য মাটি থেকে জীবন ধারণের প্রয়োজনীয় সামগ্ৰী সৃষ্টি করেছেন। ( দুই ) পৃথিবীর আভ্যন্তরীণ ও অর্থগত সংস্কার করেছেন। নবী-রাসূল, গ্রন্থ ও হেদায়াত প্রেরণ করে পৃথিবীকে কুফর, শির্ক, পাপাচার ইত্যাদি থেকে পবিত্র করেছেন। সৎ আমল দিয়ে পূর্ণ করেছেন। আয়াতে উভয় অর্থ, বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ সংস্কারও উদ্দিষ্ট হতে পারে। অতএব আয়াতের অর্থ এই যে, আল্লাহ তা'আলা বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ দিক দিয়ে পৃথিবীর সংস্কার সাধন করেছেন। এখন তোমরা এতে গোনাহ ও অবাধ্যতার মাধ্যমে গোলযোগ ও অনর্থ সৃষ্টি করো না। [ কুরতুবী ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর ] [ ২ ] অর্থাৎ আল্লাহকে ভয় ও আশা সহকারে ডাক। একদিকে দো’আ অগ্রাহ্য হওয়ার ভয় থাকবে এবং অপরদিকে তাঁর করুণা লাভের পূর্ণ আশাও থাকবে। এ আশা ও ভয়ই দৃঢ়তার পথে মানবাত্মার দুটি বাহু। এ বাহুদ্বয়ের সাহায্যে সে উধ্বলোকে আরোহণ করে এবং সুউচ্চ পদ মর্যাদা অর্জন করে। এ বাক্য থেকে বাহ্যতঃ প্রতীয়মান হয় যে, আশা ও ভয় সমান সমান হওয়া উচিত। কোন কোন আলেম বলেন, জীবিতাবস্থায় ও সুস্থতার সময় ভয়কে প্রবল রাখা প্রয়োজন, যাতে আনুগত্যে ক্রটি না হয়, আর যখন মৃত্যু নিকটবর্তী হয়, তখন আশাকে প্রবল রাখবে। কেননা, এখন কাজ করার শক্তি বিদায় নিয়েছে। করুণা লাভের আশা করাই এখন তার একমাত্র কাজ। [ কুরতুবী ] মোটকথা, দো’আর দুটি আদব হল- বিনয় ও নম্রতা এবং আস্তে ও সংগোপনে দো’আ করা। এ দুটি গুণই মানুষের বাহ্যিক দেহের সাথে সম্পৃক্ত। কেননা, বিনয়ের অর্থ হল দো’আর সময় দৈহিক আকার-আকৃতিকে অপারগ ও ফকীরের মত করে নেয়া, অহংকারী ও বেপরোয়ার মত না হওয়া। দো’আ সংগোপনে করার সম্পর্কও জিহবার সাথে যুক্ত। এ আয়াতে দো’আর আরো দুটি আভ্যন্তরীণ আদব বর্ণিত হয়েছে। এগুলোর সম্পর্ক মানুষের মনের সাথে। আর তা হল এই যে, দো'আকারীর মনে এ ভয় ও আশংকা থাকা উচিত যে, সম্ভবতঃ দো’আটি গ্রাহ্য হবে না এবং এ আশাও থাকা উচিত যে, দো’আ কবুল হতে পারে। তবে দো'আকারীর মনে এটা প্রবল থাকতে হবে যে, তার দো’আ কবুল হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “ তোমরা আল্লাহকে এমনভাবে ডাকবে যে, তোমাদের দৃঢ় বিশ্বাস তিনি তা কবুল করবেন । “ [ তিরমিয়ীঃ ৩৪৭৯, হাকেমঃ ১/৪৯৩, মুসনাদে আহমাদঃ ২/১৭৭ ] [ ৩ ] অর্থাৎ আল্লাহ্ তা'আলার করুণা সৎকর্মীদের নিকটবর্তী। এতে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, যদিও দো’আর সময় ভয় ও আশা উভয় অবস্থাই থাকা বাঞ্চনীয়, কিন্তু এতদুভয়ের মধ্যে আশার দিকটিই থাকবে প্রবল। কেননা, বিশ্ব প্রতিপালক পরম দয়ালু আল্লাহর দান ও অনুগ্রহে কোন ক্রটি ও কৃপণতা নেই। তিনি মন্দ লোকের দো’আও কবুল করতে পারেন। কবুল না হওয়ার আশংকা স্বীয় কুকর্ম ও গোনাহর অকল্যাণেই থাকতে পারে। কারণ, আল্লাহর রহমতের নিকটবর্তী হওয়ার জন্য সৎকর্মী হওয়া প্রয়োজন। এ কারণেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ "কেউ কেউ সুদীর্ঘ সফর করে, স্বীয় বেশভূষা ফকীরের মত করে এবং আল্লাহর সামনে দো’আর হস্ত প্রসারিত করে; কিন্তু তার খাদ্য, পানীয় ও পোষাক সবই হারাম- এরূপ লোকের দো'আ কিরূপে কবুল হতে পারে?” [ মুসলিমঃ ১০১৫) অপর এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ “ বান্দা যতক্ষণ কোন গোনাহ অথবা আত্মীয়তার সম্পর্কচ্ছেদের দো’আ না করে এবং তড়িঘড়ি না করে, ততক্ষণ তার দো'আ কবুল হতে থাকে । সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেনঃ তড়িঘড়ি দোআ করার অর্থ কি? তিনি বলেনঃ এর অর্থ হল এরূপ ধারণা করে বসা যে, আমি এত দীর্ঘ দিন থেকে দোআ করছি, অথচ এখনো পর্যন্ত কবুল হল না। অতঃপর নিরাশ হয়ে দো’আ ত্যাগ করা। [মুসলিমঃ ২৭৩৫ ] অন্য এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ “ যখনই আল্লাহর কাছে দো'আ করবে তখনই কবুল হওয়ার ব্যাপারে নিঃসন্দেহ হয়ে দো’আ করবে মুসনাদ” [আহমাদঃ ২/১৭৭, তিরমিয়ীঃ ৩৪৭৯) অর্থাৎ আল্লাহর রহমতের ভাণ্ডারের বিস্তৃতিকে সামনে রেখে দোআ করলে অবশ্যই দোআ কবুল হবে বলে মনকে মজবুত কর । এমন মনে করা, গোনাহর কারণে দোআ কবুল না হওয়ার আশংকা অনুভব করা এর পরিপন্থী নয়।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৫৫-৫৬ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ পাক স্বীয় বান্দাদেরকে প্রার্থনা করার নিয়ম-নীতি শিক্ষা দিচ্ছেন যা তাদের জন্যে দ্বীন ও দুনিয়ায় মুক্তি লাভের কারণ। তিনি বলেনঃ তোমরা অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে ও সংগোপনে তোমাদের প্রতিপালকের নিকট প্রার্থনা কর। যেমন তিনি বলেনঃ ‘প্রভুকে স্বীয় অন্তরে স্মরণ কর।' জনগণ উচ্চ স্বরে প্রার্থনা করতে শুরু করে দিয়েছিল। তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বললেনঃ “ হে লোক সকল! তোমরা নিজেদের নফসের উপর দয়া কর । তোমরা কোন বধির ও অনুপস্থিত সত্তাকে ডাকছো না। তোমরা যার নিকট প্রার্থনা করছো তিনি নিকটেই রয়েছেন এবং সবকিছু শুনছেন।” অত্যন্ত কাকুতি মিনতি এবং অনুনয় বিনয়ের সাথে দুআ করবে। খুবই নত হয়ে সংগোপনে প্রার্থনা জানাবে এবং আল্লাহর একত্ববাদের প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস রাখবে। বাগাড়ম্বর করে উচ্চ স্বরে দুআ করা উচিত নয়। বিয়াকারী থেকে বাঁচবার জন্যে পূর্বকালের লোকেরা কুরআনের হাফিয হওয়া সত্ত্বেও জনগণ ঘুণাক্ষরেও তাঁদের হাফিয হওয়ার কথা জানতে পারতো না। তারা রাত্রে নিজ নিজ ঘরে দীর্ঘক্ষণ ধরে নামায পড়তেন এবং তাঁদের ঘরে মেহমান থাকতো, অথচ তারা তাঁদের নামাযের টেরই পেতো না। কিন্তু আজকাল আমরা এ ধরনের লোক দেখতে পাই যে, সংগোপনে ইবাদত করার যথেষ্ট সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তারা সদা-সর্বদা প্রকাশ্যভাবে ইবাদত করে থাকে। পূর্ব যুগের মুসলমানরা যখন দুআ করতেন তখন শুধু ফিফিস শব্দ ছাড়া তাদের মুখ থেকে কোন শব্দ শোনা যেতো না। কেননা আল্লাহ পাক বলেনঃ “ তোমরা বিনীতভাবে ও সংগোপনে তোমাদের প্রভুকে ডাকো ।" আল্লাহ পাক তাঁর এক মনোনীত বান্দার বর্ণনা দিচ্ছেন যে, যখন সে স্বীয় প্রভুকে ডাকতো তখন খুবই উচ্চ স্বরে ডাকতো। শব্দকে উচ্চ করা অত্যন্ত অপছন্দনীয়। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) ( আরবী ) -এর তাফসীরে বলেন যে, এর ভাবার্থ হচ্ছে- প্রার্থনায় সীমালংঘনকে আল্লাহ তা'আলা পছন্দ করেন না। আবু মুজলি ( রঃ ) বলেনঃ “ তোমরা নবীদের পদ মর্যাদা লাভ করার জন্যে দুআ করো না ।সা'দ ( রঃ ) স্বীয় পুত্রকে দেখেন যে, সে প্রার্থনা করছেঃ “ হে আল্লাহ! আমি জান্নাত, জান্নাতের নিয়ামতরাজি এবং তথাকার রেশমী বস্ত্রের জন্যে প্রার্থনা করছি, আর জাহান্নাম হতে, জাহান্নামের শৃংখল ও বেড়ি হতে আশ্রয় চাচ্ছি ।” তখন তিনি পুত্রকে বলেনঃ হে বৎস! আমি রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে বলতে শুনেছি-“ নিকটবর্তী যামানায় এমন লোক সৃষ্ট হবে যারা প্রার্থনা করতে গিয়ে সীমালংঘন করবে এবং অযু করার সময় প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করবে ।” অতঃপর তিনি ( আরবী ) -এই আয়াতটি পাঠ করেন। হে আমার পুত্র! তোমার জন্যে তো শুধু এটুকু বলাই যথেষ্ট, “ হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে জান্নাত এবং জান্নাতের নিকটবর্তীকারী কথা ও কাজের জন্যে প্রার্থনা করছি এবং জাহান্নাম হতে ও জাহান্নামের নিকটবর্তীকারী কথা ও কাজ হতে আশ্রয় চাচ্ছি ।” ( এটা ইমাম আহমাদ (রঃ ) ও ইমাম আবু দাউদ ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন) আবদুল্লাহ ইবনে মুগাফফাল ( রঃ ) স্বীয় পুত্রকে দেখেন যে, সে দুআ করছে- “ হে আল্লাহ! আমি জান্নাতের ডান দিকের সাদা প্রাসাদটি যাঙ্ক্ষা করছি ।” তখন তিনি পুত্রকে বলেনঃ “ হে বৎস! আল্লাহর কাছে শুধু জান্নাতের জন্যে প্রার্থনা কর এবং শুধু জাহান্নাম হতে আশ্রয় চাও ।” ( এটা ইমাম আহমাদ (রঃ ), ইবনে মাজাহ ( রঃ ) এবং আবু দাউদ ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন এবং ইবনে কাসীর ( রঃ ) বলেন যে, এর ইসনাদ উত্তম)আল্লাহ পাকের উক্তিঃ দুনিয়ায় শান্তি শৃংখলা স্থাপনের পর ওতে বিপর্যয় ও বিশৃংখলা সৃষ্টি করো না। কেননা, শান্তি ও নিরাপত্তার পরে ফাসাদ বিশৃংখলা অত্যন্ত খারাপ। কারণ, কাজ-কারবার যখন শান্ত পরিবেশে চলতে থাকে তখন যদি বিশৃংখলা সৃষ্টি করা হয় তবে বান্দা ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যায়। এ জন্যেই আল্লাহ তাআলা। ( আরবী ) কথাটি যোগ করেছেন। আর তিনি বিনয়ের সাথে দুআ করতে বলেছেন। তিনি বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ শাস্তির ভয় করে এবং নিয়ামত ও সাওয়াবের আশা রেখে তোমরা প্রার্থনা কর। এরপর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ আল্লাহর রহমত সৎকর্মশীলদের অতি সন্নিকটে। অর্থাৎ তাঁর রহমত সৎ লোকদের অপেক্ষায় রয়েছে। তারা হচ্ছে ঐসব লোক যারা আল্লাহর নির্দেশাবলী মান্য করে চলে এবং তাঁর নিষেধাজ্ঞা থেকে বিরত থাকে। যেমন তিনি বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ আমার রহমত প্রত্যেক জিনিসকে ধারণ করে রয়েছে । ( ৭:১৫৬ ) মহান আল্লাহ ( আরবী ) বলেছেন, ( আরবী ) বলেননি। অথচ ( আরবী ) শব্দটি বা ( আরবী ) স্ত্রীলিঙ্গ। সুতরাং ( আরবী ) টিও স্ত্রীলিঙ্গ হওয়া উচিত ছিল। এটাকে পুংলিঙ্গ ব্যবহার করার কারণ এই যে, ( আরবী ) শব্দটিকে ( আরবী ) -এর অর্থে নিয়ে ( আরবী ) হিসেবে পুংলিঙ্গ ধরা হয়েছে। অথবা এও হতে পারে যে, আল্লাহ পাকের সত্তার দিকে একে ( আরবী ) করা হয়েছে বলে পুংলিঙ্গ ব্যবহার করা হয়েছে। আনুগত্যের কারণে সকর্মশীল লোকেরা আল্লাহ তা'আলার অঙ্গীকারের ছায়ায় আশ্রয় পেয়েছে এবং তাঁর রহমতের নিকটবর্তী হয়েছে।
সূরা আ'রাফ আয়াত 56 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- আমি একে আরবী ভাষায় কোরআন রূপে অবতীর্ণ করেছি, যাতে তোমরা বুঝতে পার।
- যারা ঈমান এনেছে এবং ভয় করতে রয়েছে।
- আল্লাহ দয়াশীল নবীর প্রতি এবং মুহাজির ও আনসারদের প্রতি, যারা কঠিন মহূর্তে নবীর সঙ্গে ছিল,
- আল্লাহ নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল যথাযথভাবে সৃষ্টি করেছেন, যাতে প্রত্যেক ব্যক্তি তার উপার্জনের ফল পায়। তাদের
- হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর উদ্দেশে ন্যায় সাক্ষ্যদানের ব্যাপারে অবিচল থাকবে এবং কোন সম্প্রদায়ের শত্রুতার কারণে
- তারা বললঃ আমাদের উপাস্যদের সাথে এরূপ ব্যবহার কে করল? সে তো নিশ্চয়ই কোন জালিম।
- আর যে কৃপণতা করে ও বেপরওয়া হয়
- উচ্চ পবিত্র পত্রসমূহে,
- পিতা-মাতা এবং নিকটাত্নীয়গণ যা ত্যাগ করে যান সেসবের জন্যই আমি উত্তরাধিকারী নির্ধারণ করে দিয়েছি। আর
- আর যারা ঈমান আনে না, তাদেরকে বলে দাও যে, তোমরা নিজ নিজ অবস্থায় কাজ করে
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা আ'রাফ ডাউনলোড করুন:
সূরা Araf mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Araf শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers