কোরান সূরা মারইয়াম আয়াত 57 তাফসীর
﴿وَرَفَعْنَاهُ مَكَانًا عَلِيًّا﴾
[ مريم: 57]
আমি তাকে উচ্চে উন্নীত করেছিলাম। [সূরা মারইয়াম: 57]
Surah Maryam in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Maryam ayat 57
আর আমরা তাঁকে উন্নীত করেছিলাম অত্যুচ্চ পর্যায়ে।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৫৭. আমি তাঁকে নবুওয়াত দিয়ে তাঁর স্মরণকে সুউচ্চ করেছি। ফলে তিনি হলেন একজন উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
এবং আমি তাকে সুউচ্চ স্থানে উঠিয়ে নিয়েছিলাম। [১] [১] কথিত আছে যে, ইদরীস ( আঃ ) আদম ( আঃ )-এর পর প্রথম নবী ছিলেন এবং নূহ ( আঃ ) বা তাঁর পিতার দাদা ছিলেন। সর্বপ্রথম তিনিই কাপড় সিলাই শুরু করেন। 'সুউচ্চ স্থানে'র তাৎপর্য্য কি? কিছু মুফাসসির মনে করেন যে, ঈসা ( আঃ )-এর মত ইদরীস ( আঃ )-কেও আকাশে উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কুরআনের শব্দ এই অর্থের জন্য পরিষ্কার নয় এবং সহীহ হাদীসেও এ কথার উল্লেখ পাওয়া যায় না। অবশ্য ইস্রাঈলী বর্ণনায় তাঁকে আকাশে তুলে নেওয়ার কথা পাওয়া যায়, যা এ অর্থ প্রমাণের জন্য যথেষ্ট নয়। সেই জন্য সঠিক অর্থ এটাই মনে হয় যে, 'আমি তাকে উচ্চ মর্যাদা দান করেছিলাম।' সেই মর্যাদা ও সম্মান যা তাঁকে নবুঅত দান করার পর দেওয়া হয়েছিল। আর আল্লাহই ভাল জানেন।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর আমরা তাকে উন্নীত করেছিলাম উচ্চ মর্যাদায় [ ১ ]। [ ১ ] অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলা ইদরীস আলাইহিস সালামকে উচ্চ মর্তবায় সমুন্নত করেছেন। উদ্দেশ্য এই যে, তাকে উচ্চ স্থান তথা আকাশে অবস্থান করার ব্যবস্থা করেছি। [ ইবন কাসীর ]। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “ যখন আমাকে আকাশে উঠানো হয়েছিল মি'রাজের রাত্ৰিতে আমি ইদরীসকে চতুর্থ আসমানে দেখেছি । ’ [ তিরমিয়ী: ৩১৫৭ ] কোন কোন বর্ণনায় আছে যে, ইদরীস আলাইহিস সালামকে জীবিত অবস্থায় আকাশে তুলে নেয়া হয়েছে। এ সম্পর্কে ইবনে কাসীর বলেনঃ এটা ক'ব আল-আহবারের ইসরাঈলী বৰ্ণনা। এটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে গ্ৰহণযোগ্য বর্ণনা দ্বারা প্রমাণিত হয়নি। কাজেই আকাশে জীবিত অবস্থায় তুলে নেয়ার বিষয়টি স্বীকৃত নয়। আয়াতের অন্য অর্থ হচ্ছে, তাকে উচু স্থান জান্নাতে দেয়া হয়েছে। অথবা তাকে নবুওয়াত ও রিসালাত দিয়ে সম্মানিত করা হয়েছে। [ ফাতহুল কাদীর ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৫৬-৫৭ নং আয়াতের তাফসীর: হযরত ইদরীসের ( আঃ ) বর্ণনা দেয়া হচ্ছে যে, তিনি সত্য নবী ছিলেন এবং আল্লাহর বিশিষ্ট বান্দা ছিলেন। আল্লাহ তাআলা তাকে উচ্চ মর্যাদা দান করেছিলেন। হাদীসের উদ্ধৃতি দিয়ে পূর্বেই বর্ণনা করা হয়েছে যে, ( মি’রাজে গিয়ে ) রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) হযরত ইদরীসকে ( আঃ ) চতুর্থ আকাশে দেখতে পান।এই আয়াতের তাফসীরে ইমাম ইবনু জারীর ( রঃ ) এক অতি বিস্ময় কর হাদীস আনয়ন করেছেন। তা এই যে, হযরত ইবনু আব্বাস ( রাঃ ) হযরত কা’বকে ( রাঃ ) ( আরবী ) এই আয়াতটির ভাবার্থ জিজ্ঞেস করলে তিনি উত্তরে বলেনঃ “ হযরত ইদরীসকে ( আঃ ) আল্লাহ তাআলা ওয়াহী করেনঃ “সমস্ত বাণী আদমের আমলের সমান তোমার একার আমল আমি দৈনিক উঠিয়ে থাকি । সুতরাং আমি পছন্দ করি যে, তোমার আমল বেড়ে যাক।” অতঃপর তাঁর কাছে বন্ধু ফেরেশতা আগমন করলে তিনি তার কাছে বর্ণনা করেনঃ “ আমার কাছে এরূপ ওয়াহী এসেছে । সুতরাং আপনি মালাকুল মাউতকে বলে দিন যে, তিনি যেন আমার জান কবয বিলম্বে করেন, যাতে আমার নেক আমল বৃদ্ধি পায়।” ঐ ফেরেশতা তখন তাকে নিজের পালকের উপর বসিয়ে নিয়ে আকাশে উঠে যান। চতুর্থ আকাশে পৌঁছে মালাকুল মাউতের সাথে সাক্ষাৎ হয়। ঐ ফেরেশতা মালাকুল মাউতকে হযরত ইদরীসের ( আঃ ) ব্যাপারে সুপারিশ করেন। মৃত্যুর ফেরেশতা তাঁকে জিজ্ঞেস করেনঃ “ উনি কোথায় আছেন?" উত্তরে তিনি বলেনঃ “এই যে, আমার পালকের উপর বসে রয়েছেন । মালাকুল মাউত বা মৃত্যুর ফেরেশতা তখন বিস্ময় প্রকাশ করে বলেনঃ “ সুবহানাল্লাহ! আমাকে এখনই হুকুম করা হলো যে, আমি যেন হযরত ইদরীসের ( আঃ ) রূহ চতুর্থ আকাশে কব্য করি । আমি চিন্তা করছিলাম যে, যিনি যমীনে রয়েছেন তাঁর রূহ আমি চতুর্থ আকাশে কি করে কবয করতে পারি।” সুতরাং তৎক্ষণাৎ তিনি হযরত ইদরীসের ( আঃ ) জান কবয করে নেন। ( হযরত কাবের (রাঃ ) এ বর্ণনাটি ইসরাঈলী রিওয়াইয়াত। এর কতক গুলি খবর স্বীকার্য নয়। এ সব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সবচেয়ে ভাল জানেন)এই রিওয়াইয়াতই অন্য সনদে রয়েছে। তাতে এও আছে যে, হযরত ইদরীস ( আঃ ) ঐ ফেরেশতার মাধ্যমে মালাকুল মাউতকে জিজ্ঞেস করেনঃ “ আমার বয়সের আর কতদিন বাকী আছে?" আর একটি রিওয়াইয়াতে আছে যে, তার এই প্রশ্নের জবাবে মালাকুল মাউত বলেছিলেনঃ “আমি দেখছি যে, শুধু চক্ষুর একটা পলক ফেলার সময় বাকী আছে ।” ফেরেশতা তার পরের নীচে তাকিয়ে দেখেন যে, হযরত ইদরীসের ( আঃ ) প্রাণবায়ু বহির্গত হয়ে গেছে।হযরত ইবনু আব্বাস ( রাঃ ) বলেন যে, হযরত ইদরীস ( আঃ ) দরজি ছিলেন। সূচের প্রতিটি ফেঁড়ের সময় তিনি সুবহানাল্লাহ পাঠ করতেন। সন্ধ্যার সময় তাঁর সমান কারো নেক আমল আকাশে উঠে নাই। মুজাহিদ ( রঃ ) বলেন যে, হযরত ইদরীসকে ( আঃ ) আকাশে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। তিনি মৃত্যুবরণ করেন নাই। বরং হযরত ঈসার ( আঃ ) মতই তাকে জীবিতই উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। আওফীর ( রঃ ) রিওয়াইয়াতের মাধ্যমে হযরত ইবনু আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, তাকে ষষ্ঠ আকাশে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। আর সেখানেই তিনি মৃত্যুর মুখে পতিত হয়েছেন। হাসান ( রাঃ ) প্রভৃতি গুরুজন বলেন যে, ( আরবী ) দ্বারা জান্নাতকে বুঝানো হয়েছে।
সূরা মারইয়াম আয়াত 57 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- তিনিই জীবন ও মরণ দান করেন এবং তাঁরই কাছে প্রত্যাবর্তন করতে হবে।
- তবে যারা ধৈর্য্যধারণ করেছে এবং সৎকার্য করেছে তাদের জন্য ক্ষমা ও বিরাট প্রতিদান রয়েছে।
- নিশ্চয় তোমাদের মাবুদ এক।
- এবং ধন-ভান্ডার ও মনোরম স্থানসমূহ থেকে।
- পৃথিবীকে এর পরে বিস্তৃত করেছেন।
- আপনার পূর্বেও কোন মানুষকে আমি অনন্ত জীবন দান করিনি। সুতরাং আপনার মৃত্যু হলে তারা কি
- অতঃপর আমি তাদেরকে করে দিলাম অতীত লোক ও দৃষ্টান্ত পরবর্তীদের জন্যে।
- তোমার হাত বগলে রাখ। তা বের হয়ে আসবে নিরাময় উজ্জ্বল হয়ে এবং ভয় হেতু তোমার
- হা-মীম।
- আর তারা বলবে-সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদের দূঃখ দূর করেছেন। নিশ্চয় আমাদের পালনকর্তা ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা মারইয়াম ডাউনলোড করুন:
সূরা Maryam mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Maryam শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers