কোরান সূরা আলে-ইমরান আয়াত 97 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Al Imran ayat 97 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা আলে-ইমরান আয়াত 97 আরবি পাঠে(Al Imran).
  
   

﴿فِيهِ آيَاتٌ بَيِّنَاتٌ مَّقَامُ إِبْرَاهِيمَ ۖ وَمَن دَخَلَهُ كَانَ آمِنًا ۗ وَلِلَّهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلًا ۚ وَمَن كَفَرَ فَإِنَّ اللَّهَ غَنِيٌّ عَنِ الْعَالَمِينَ﴾
[ آل عمران: 97]

এতে রয়েছে মকামে ইব্রাহীমের মত প্রকৃষ্ট নিদর্শন। আর যে, লোক এর ভেতরে প্রবেশ করেছে, সে নিরাপত্তা লাভ করেছে। আর এ ঘরের হজ্ব করা হলো মানুষের উপর আল্লাহর প্রাপ্য; যে লোকের সামর্থ?2480;য়েছে এ পর্যন্ত পৌছার। আর যে লোক তা মানে না। আল্লাহ সারা বিশ্বের কোন কিছুরই পরোয়া করেন না। [সূরা আলে-ইমরান: 97]

Surah Al Imran in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Al Imran ayat 97


এতে আছে সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী -- মক্কামে ইব্রাহীম; আর যে কেউ এখানে প্রবেশ করবে সে হচ্ছে নিরাপদ, আর আল্লাহ্‌র উদ্দেশ্যে এই গৃহে হজ করা মানবগোষ্ঠীর জন্য আবশ্যিক -- যারই সেখানকার পাথেয় অর্জনের ক্ষমতা আছে। আর যে অবিশ্বাস পোষণ করে -- তাহলে নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সমস্ত সৃষ্ট জগতের থেকে স্বয়ং-সম্পূর্ণ।


Tafsir Mokhtasar Bangla


৯৭. এ ঘরটির সম্মান ও ফযীলতের অনেকগুলো সুস্পষ্ট আলামত রয়েছে। যেমন: হজ্জ ও উমরার কার্যাবলী এবং সেখানকার পবিত্র স্থানসমূহ। সে আলামতগুলোর একটি হলো সে পাথরটি যার উপর ইব্রাহীম ( আলাইহিস-সালাম ) দাঁড়িয়েছেন যখন তিনি কা’বার দেয়াল উুঁচ করার ইচ্ছা করেছেন। আরেকটি হলো যে ব্যক্তি এ ঘরে প্রবেশ করবে তার কোন ভয় থাকবে না। না তাকে কেউ কষ্ট দেয়ার অধিকার রাখে। যে ব্যক্তি এ ঘরে পৌঁছার শক্তি-সামর্থ্য রাখে আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে হজ্জের কার্যাদি আদায়ের জন্য সেখানে যাওয়া তার উপর ফরয। আর যে ব্যক্তি হজ্জ ফরয হওয়ার ব্যাপারটিকে অস্বীকার করবে নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা এ জাতীয় কাফির ও সর্ব জগতের প্রতি অমুখাপেক্ষী।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


ওতে বহু সুস্পষ্ট নিদর্শন রয়েছে, ( যেমন ) মাক্বামে ইব্রাহীম ( পাথরের উপর ইব্রাহীমের পদচিহ্ন )। যে কেউ সেখানে প্রবেশ করে, সে নিরাপত্তা লাভ করে।[১] মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে ঐ গৃহের হজ্জ্ব করা তার ( পক্ষে ) অবশ্য কর্তব্য।[২] আর যে অস্বীকার করবে ( সে জেনে রাখুক যে ), আল্লাহ জগতের প্রতি অমুখাপেক্ষী। [৩] [১] যেহেতু এখানে যুদ্ধ, খুনাখুনি এবং শিকার করা --এমনকি গাছ কাটাও নিষিদ্ধ। ( বুখারী-মুসলিম ) [২] 'যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে' অর্থাৎ, সম্পূর্ণ রাহা-খরচ পূরণ হওয়ার মত যথেষ্ট পাথেয় যার কাছে আছে। অনুরূপ রাস্তার ও জান-মালের নিরাপত্তা এবং শারীরিক সুস্থতা ইত্যাদিও সামর্থ্যের অন্তর্ভুক্ত। মহিলার জন্য মাহরাম ( স্বামী অথবা যার সঙ্গে তার বিবাহ চিরতরে হারাম এমন কোন লোক ) থাকাও জরুরী। ( ফাতহুল ক্বাদীর ) এই আয়াত প্রত্যেক সামর্থ্যবান ব্যক্তির উপর হজ্জ ফরয হওয়ার দলীল। হাদীস দ্বারা এ কথাও পরিষ্কার হয়ে যায় যে, হজ্জ জীবনে একবারই ফরয। ( ইবনে কাসীর ) [৩] সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হজ্জ না করাকে কুরআন 'কুফরী' ( অস্বীকার ) বলে আখ্যায়িত করেছে। এ থেকে হজ্জ ফরয হওয়ার এবং তা যে অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সে ব্যাপারে আর কোন সন্দেহের অবকাশ থাকে না। বহু হাদীসেও সাহাবীদের উক্তিতে সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে হজ্জ করে না, তার ব্যাপারে কঠোর ধমক এসেছে। ( ইবনে কাসীর )

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


তাতে অনেক সুস্পষ্ট নিদর্শন আছে [], যেমন মাকামে ইবরাহীম []। আর যে কেউ সেখানে প্রবেশ করে সে নিরাপদ []। আর মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহ্‌র উদ্দেশ্যে ঐ ঘরের হজ্ব [] করা তার জন্য অবশ্য কর্তব্য []। আর যে কেউ কুফরী করল সে জেনে রাখুক, নিশ্চয় আল্লাহ সৃষ্টিজগতের মুখাপেক্ষী নন []। [] এ আয়াতে কা’বা গৃহের তিনটি বৈশিষ্ট্য বর্ণিত হয়েছে। প্রথমতঃ এতে আল্লাহ্‌র কুদরতের নিদর্শনাবলীর মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নিদর্শন রয়েছে, আর তা হচ্ছে মাকামে ইবরাহীম । দ্বিতীয়তঃ যে ব্যক্তি এতে প্রবেশ করে, সে নিরাপদ ও বিপদমুক্ত হয়ে যায়; তাকে হত্যা করা বৈধ নয়। তৃতীয়তঃ সারা বিশ্বের মুসলিমদের জন্য এতে হজ্জ পালন করা ফরয; যদি এ গৃহ পর্যন্ত পৌঁছার শক্তি ও সামর্থ্য থাকে। কা’বা গৃহ নির্মিত হওয়ার দিন থেকে অদ্যাবধি আল্লাহ তা’আলা এর বরকতে শক্রর আক্রমণ থেকে মক্কাবাসীদের নিরাপদে রেখেছেন। বাদশাহ আবরাহা বিরাট হস্তীবাহিনীসহ কা’বা গৃহের প্রতি ধাবিত হয়েছিল। আল্লাহ স্বীয় কুদরতে পক্ষীকূলের মাধ্যমে তাদের নিশ্চিহ্ন করে দেন। মক্কার হারামে প্রবেশকারী মানুষ, এমনকি জীবজন্তু পর্যন্ত বিপদমুক্ত হয়ে যায়। [] কা’বাগৃহের বৈশিষ্ট্য ও নিদর্শনাবলীর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, মাকামে ইবরাহীম। যা একটি বড় নিদর্শন হওয়ার কারণেই কুরআনে একে স্বতন্ত্রভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। মাকামে ইবরাহীম একটি পাথরের নাম। এর উপরে দাঁড়িয়েই ইবরাহীম ‘আলাইহিস্ সালাম কা’বা গৃহ নিৰ্মাণ করতেন। এ পাথরের গায়ে ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালামের গভীর পদচিহ্ন অদ্যাবধি বিদ্যমান। একটি পাথরের উপর পদচিহ্ন পড়ে যাওয়া আল্লাহ্‌র অপার কুদরতের নিদর্শন এবং এতে কা’বা গৃহের শ্রেষ্ঠত্বই প্রমাণিত হয়। এ পাথরটি কা’বা গৃহের নীচে দরজার নিকটে অবস্থিত ছিল। যখন কুরআনে মাকামে ইবরাহীমে সালাত আদায় করার আদেশ নাযিল হয় তখন তওয়াফকারীদের সুবিধার্থে পাথরটি সেখান থেকে সরিয়ে কা’বা গৃহের সামনে সামান্য দূরে যমযম কুপের নিকট স্থাপন করা হয়। বর্তমানে মাকামে ইবরাহীমকে সরিয়ে নিয়ে একটি কাঁচ-পাত্রে সংরক্ষিত করে দেয়া হয়েছে। তাওয়াফ-পরবর্তী নামায এর আশে পাশে পড়া উত্তম। কিন্তু শাব্দিক অর্থের দিক দিয়ে মাকামে ইবরাহীম সমগ্র মসজিদে হারামকেও বুঝায়। এ কারণেই ফিকহবিদগণ বলেনঃ মসজিদে হারামের যে কোন স্থানে তওয়াফ পরবর্তী সালাত পড়ে নিলেই তা আদায় হয়ে যাবে। [] কা’বা গৃহের দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য বর্ণনা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে যে, যে ব্যক্তি এতে প্রবেশ করে, সে নিরাপদ হয়ে যায়। এ নিরাপত্তা মুলতঃ সৃষ্টিগতভাবে। অর্থাৎ আল্লাহ তা’আলা সৃষ্টিগতভাবেই প্রত্যেক জাতি ও সম্প্রদায়ের অন্তরে কা’বা গৃহের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ নিহিত রেখেছেন। জাহেলিয়াত যুগের আরব ও তাদের বিভিন্ন গোত্র অসংখ্য পাপাচারে লিপ্ত থাকা সত্বেও কা’বা গৃহের সম্মান রক্ষার জন্যে প্রাণ উৎসর্গ করতেও কুণ্ঠিত ছিল না। হারামের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে গিয়ে তারা পিতার হত্যাকারীকে দেখেও কিছুই বলত না। মক্কা বিজয়ের সময় আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে হারামের অভ্যন্তরে কিছুক্ষণ যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হয়েছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল কা’বা গৃহকে পবিত্র করা। বিজয়ের পর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষণা করেন যে, এ অনুমতি কা’বা গৃহকে পবিত্রকরণের উদ্দেশ্যে কয়েক ঘন্টার জন্যেই ছিল। এরপর পূর্বের ন্যায় চিরকালের জন্যে কাবার হারামে যুদ্ধ বিগ্রহ নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেনঃ আমার পূর্বে কারো জন্যে হারামের অভ্যন্তরে যুদ্ধ করা হালাল ছিল না, আমার পরেও কারো জন্যে হালাল নয়। আমাকেও মাত্র কয়েক ঘন্টার জন্যে অনুমতি দেয়া হয়েছিল, পরে আবার হারাম করে দেয়া হয়েছে। [ বুখারী: ১৩৪৯; মুসলিম: ১৩৫৫ ] তবে কাতাদাহ বলেন, হাসান বসরী বলেছেন, হারাম শরীফ কাউকে আল্লাহ্র সুনির্দিষ্ট হদ বা শাস্তি বাস্তবায়নে বাধা দেয় না। যদি কেউ হারামের বাইরে অন্যায় করে হারামে প্রবেশ করে তবে তার উপর হদ বা শাস্তি কায়েম করতে কোন বাধা নেই। যদি কেউ হারামে চুরি করে কিংবা ব্যভিচার করে বা হত্যা করে তার উপর শরীআতের আইন অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে [ তাবারী ]। [] হজ্ব শব্দের অর্থ ইচ্ছা করা। শরীয়তের পরিভাষায় কা’বা গৃহ প্রদক্ষিণ, আরাফাত ও মুযদালফায় অবস্থান ইত্যাদি ক্রিয়াকর্মকে হজ্ব বলা হয়। হজ্বের বিস্তারিত নিয়মপদ্ধতি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৌখিক উক্তি ও কর্মের মাধ্যমে ব্যক্ত করেছেন। [] আয়াতে কা’বা গৃহের তৃতীয় বৈশিষ্ট্যের বর্ণনা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, আল্লাহ্ তাআলা মানব জাতির জন্য শর্তসাপেক্ষে কা’বা গৃহের হজ্ব ফরয করেছেন। শর্ত এই যে, সে পর্যন্ত পৌছার সামর্থ্য থাকতে হবে। সামর্থ্যের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির হাতে সাংসারিক প্রয়োজনের অতিরিক্ত এ পরিমাণ অর্থ থাকতে হবে, যা দ্বারা সে কা’বা গৃহ পর্যন্ত যাতায়াত ও সেখানে অবস্থানের ব্যয়ভার বহন করতে সক্ষম হয়। এছাড়া গৃহে প্রত্যাবর্তন পর্যন্ত পরিবার-পরিজনের ভরণ-পোষণেরও ব্যবস্থা থাকতে হবে। দৈহিক দিক দিয়ে হাত পা ও চক্ষু কর্মক্ষম হতে হবে। কারণ, যাদের এসব অঙ্গ বিকল, তাদের পক্ষে স্বীয় বাড়ী ঘরে চলাফেরাই দুস্কর। এমতাবস্থায় সেখানে যাওয়া ও হজের অনুষ্ঠানাদি পালন করা তার পক্ষে কিরূপে সম্ভব হবে? মহিলাদের পক্ষে মাহরাম ব্যক্তি ছাড়া সফর করা শরীয়ত মতে নাজায়েয। কাজেই মহিলাদের সামর্থ্য তখনই হবে, যখন তার সাথে কোন মাহরাম পুরুষ হজে থাকবে; নিজ খরচে করুক অথবা মহিলাই তার খরচ বহন করুক। এমনিভাবে কা’বা গৃহে পৌঁছার জন্যে রাস্তা নিরাপদ হওয়াও সামর্থ্যের একটি অংশ। যদি রাস্তা বিপজ্জনক হয় এবং জানমালের ক্ষতির প্রবল আশঙ্কা থাকে, তবে হজের সামর্থ্য নাই বলে মনে করা হবে। ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, আয়াতে সামর্থ্য বলতে, বান্দার শারীরিক সুস্থতা এবং নিজের উপর কোন প্রকার কমতি না করে পাথেয় ও বাহনের খরচ থাকা বুঝায়। [ তাবারী ] [] ইবনে আব্বাস বলেন, আয়াতে কুফরী বলতে বোঝানো হয়েছে এমন ব্যক্তির কাজকে, যে হজ করাকে নেককাজ হিসেবে নিল না আর হজ ত্যাগ করাকে গোনাহের কাজ মনে করল না। [ তাবারী ] মুজাহিদ বলেন, কুফরী করার অর্থ, আল্লাহ ও আখেরাতকে অস্বীকার করল। [ তাবারী ] মোটকথা: বান্দা বড়-ছোট যে ধরনের কুফরীই করুক না কেন তার জানা উচিত যে, আল্লাহ তার মুখাপেক্ষী নয়। এ আয়াতে স্পষ্টভাবে ঘোষণা করা হয়েছে যে, আল্লাহ্ তা’আলা তার সৃষ্টির কোন কিছুর মুখাপেক্ষী নয়। যদি সমস্ত লোকই কাফের হয়ে যায় তবুও এতে তার রাজত্বে সামান্য হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটবে না। পবিত্র কুরআনে বিভিন্ন স্থানে এ ঘোষণা দেয়া হয়েছে। যেমন, “ তোমরা এবং পৃথিবীর সবাই যদি অকৃতজ্ঞ হও তারপরও আল্লাহ অভাবমুক্ত ও প্রশংসার যোগ্য ।” [ সূরা ইবরাহীম: ৮ ] আরও বলেন, “ অতঃপর তারা কুফরী করল ও মুখ ফিরিয়ে নিল । আল্লাহ( তাদের ঈমানের ব্যাপারে ) ভ্ৰক্ষেপহীন হলেন; আর আল্লাহ অভাবমুক্ত, সপ্রশংসিত” [ সূরা আত-তাগাবুন: ৬ ] সুতরাং তাঁর বান্দাদেরকে আনুগত্য করা এবং অবাধ্যতা থেকে দূরে থাকার নির্দেশ বান্দাদের উপকারার্থেই দিয়ে থাকেন। এ জন্যে দেন না যে, বান্দার আনুগত্য বা অবাধ্যতা আল্লাহ্‌র কোন ক্ষতি বা উপকার করবে। [ আদওয়াউল বায়ান ]

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


৯৬-৯৭ নং আয়াতের তাফসীর: অর্থাৎ মানবমণ্ডলীর ইবাদত, কুরবানী, তাওয়াফ, নামায, ই'তিকাফ ইত্যাদির জন্য আল্লাহর ঘর, যার নির্মাতা হচ্ছেন হযরত ইবরাহীম ( আঃ ), যে ঘরের আনুগত্যের দাবী ইয়াহুদী, খ্রীষ্টান, মুশরিক এবং মুসলমান সবাই করে থাকে ওটা ঐ ঘর যা সর্বপ্রথম মক্কায় নির্মিত হয়। আল্লাহ তা'আলার বন্ধু এ ইবরাহীম ( আঃ )-ই ছিলেন হজ্বের ঘোষণাকারী। কিন্তু বড়ই বিস্ময় ও দুঃখের কথা এই যে, তারা হযরত ইবরাহীম ( আঃ )-এর ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকার দাবী করে, অথচ এ ঘরের সম্মান করে না, এখানে হজ্ব করতে আসে না, বরং নিজের কিবলা ও কা'বা পৃথক পৃথক করে বেড়ায়। এ বায়তুল্লাহ শরীফের মধ্যেই হিদায়াত নিহিত রয়েছে এবংএটা সারা বিশ্ববাসীর জন্যেই পথ-প্রদর্শক। হযরত আবু যার ( রাঃ ) রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে জিজ্ঞেস করেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! সর্বপ্রথম কোন্ মসজিদটি নির্মিত হয়েছে? তিনি বলেনঃ ‘মসজিদ-ই-হারাম' তিনি পুনরায় প্রশ্ন করেনঃ তারপরে কোটি’? তিনি বলেনঃ ‘মসজিদ-ই-বায়তুল মুকাদ্দাস।হযরত আবু যার ( রাঃ ) আবার প্রশ্ন করেনঃ ‘এ দু’টি মসজিদের মধ্যে সময়ের ব্যবধান কত?' রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ চল্লিশ বছর। তারপরে হযরত আবু যার ( রাঃ ) জিজ্ঞেস করেনঃ ‘এরপরে কোন মসজিদ?' তিনি বলেনঃ “ যেখানেই নামাযের সময় হয়ে যাবে সেখানেই নামায পড়ে নেবে, সমস্ত ভূমিই মসজিদ' ( মুসনাদ-ই-আহমাদ এবং সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম ) হযরত আলী ( রাঃ ) বলেনঃ “ পূর্বে তো বহু ঘরই ছিল, কিন্তু বিশেষ করে আল্লাহর ইবাদতের ঘর সর্বপ্রথম এটাই ।' কোন লোক তাকে জিজ্ঞেস করেনঃ পৃথিবী পৃষ্ঠে কি সর্বপ্রথম এ ঘরটিই নির্মিত হয়েছে? তিনি উত্তরে বলেনঃ “ না, তবে কল্যাণময়, মাকাম-ই-ইবরাহীম এবং নিরাপত্তার ঘর সর্বপ্রথম এটাই' । বায়তুল্লাহ শরীফ নির্মাণের পূর্ণ বর্ণনা সূরা-ই-বাকারা ( আরবী ) ( ২:১২৫ )-এ আয়াতের তাফসীরে লিখিত হয়েছে। সুতরাং এখানে পুনরাবৃত্তির কোন প্রয়োজন নেই। হযরত সুদ্দী ( রঃ ) বলেনঃ ‘ভূ-পৃষ্ঠে সর্বপ্রথম এ ঘরটিই নির্মাণ করা হয়। কিন্তু হযরত আলী ( রাঃ )-এর উক্তিটিই সঠিক। আর বায়হাকীর ঐ হাদীসটি, যার মধ্যে রয়েছে যে, হযরত আদম ( আঃ ) হযরত হাওয়া ( আঃ ) আল্লাহর নির্দেশক্রমে বায়তুল্লাহ শরীফ নির্মাণ করেন, তাওয়াফ করেন এবং আল্লাহ তাআলা বলেনঃ ‘তুমি সর্বপ্রথম মানুষ এবং এটাই সর্বপ্রথম ঘর'। এ হাদীসটি ইবনে লাহীঅ। বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বর্ণনাকারী হিসেবে দুর্বল। সম্ভবতঃ এটা হযরত আবদুল্লাহ ইবন উমার ( রাঃ )-এর নিজস্ব উক্তি এবং ইয়ারমুকের যুদ্ধে তিনি যে কিতাবীদের পুস্তকের দু’টি থলে পেয়েছিলেন ঐগুলোর মধ্যে এটাও লিখিত থাকবে। বাক্কা’ হচ্ছে মাক্কা শরীফের প্রসিদ্ধ নাম। বড় বড় স্বেচ্ছাচারী ব্যক্তির স্কন্ধ এখানে ভেঙ্গে যেত এবং প্রত্যেক সম্মানিত ব্যক্তির মস্তক এখানে শুয়ে পড়তে বলে একে মাক্কা বলা হয়েছে। একে মাক্কা বলার আর একটি কারণ এই যে, এখানে জনগণের ভীড় জমে থাকে। আরও একটি কারণ এই যে, এখানে মানুষ মিশ্রিত হয়ে পড়ে। এমনকি কখনো কখনো স্ত্রী লোকেরা সম্মুখে সালাত আদায় করতে থাকে এবং পুরুষ লোকেরা তাদের পিছনে হয়ে যায়, যা অন্য কোন জায়গায় হয়না। ইবন আব্বাস ( রাঃ ) বলেনঃ “ ফাজ্জ হতে তানঈম পর্যন্ত হচ্ছে মাক্কা এবং বাইতুল্লাহ হতে বাতহা পর্যন্ত হচ্ছে বাক্কা । বায়তুল্লাহ এবং মসজিদকে বাক্কা বলা হয়েছে। বায়তুল্লাহ এবং ওর আশে-পাশের জায়গাকে বাক্কা, আর অবশিষ্ট শহরকে মক্কাও বলা হয়েছে। এর আরও বহু নাম রয়েছে। যেমন বায়তুল আতীক, বায়তুল হারাম, বালাদুল আমীন, বালাদুল মামূন, উম্মে রহাম, উম্মুল কুরা, সিলাহ, আরশ, কাদিস, মুকাদ্দাস, নাসেবাহ, নাগেসাহ, হাতেমাহ, রা’স কাউসা, আল বালাদাহ, আল বায়্যেনাহ এবং আল কা’বা। এর মধ্যে প্রকাশ্য নিদর্শনাবলী রয়েছে যা এর শ্রেষ্ঠত্ব ও মহামর্যাদার প্রমাণ বহন করে। এর দ্বারা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, আল্লাহ পাকের ঘর এটাই। এখানে মাকাম-ই-ইবরাহীম ( আঃ ) রয়েছে যেখানে দাড়িয়ে তিনি হযরত ইসমাঈল ( আঃ )-এর নিকট হতে পাথর নিয়ে নিয়ে কাবার দেয়াল উঁচু করতেন। এটা প্রথমে বায়তুল্লাহ শরীফের দেয়ালের সঙ্গে সংলগ্ন ছিল। কিন্তু হযরত উমার ( রাঃ ) স্বীয় খিলাফতের আমলে এটাকে সামান্য সরিয়ে পূর্বমুখী করে দিয়েছিলেন, যেন তাওয়াফ পূর্ণভাবে হতে পারে এবং তাওয়াফের পরে যারা মাকাম-ই-ইবরাহীমের পিছনে নামায পড়তে চান। তাদের যেন কোন অসুবিধা সৃষ্টি না হয়। ঐ দিকেই নামায পড়ার নির্দেশ রয়েছে এবং এ সম্পর্কীয় পূর্ণ তাফসীরও ( আরবী ) ( ২:১২৫ ) -এ আয়াতের তাফসীরে বর্ণিত হয়েছে।হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেন যে, প্রকাশ্য নিদর্শনাবলীর মধ্যে একটি নিদর্শন হচ্ছে মাকাম-ই-ইবরাহীম। অবশিষ্টগুলো হচ্ছে অন্যান্য নিদর্শন। হযরত মুজাহিদ ( রঃ ) বলেছেন, মাকাম-ই-ইবরাহীমের উপর হযরত ইবরাহীম ( আঃ )-এর যে পদচিহ্ন রয়েছে ওটাও একটি নিদর্শন। সম্পূর্ণ হারাম শরীফকে, হাতীমকে এবং হজ্বের সমুদয় রুকনকেও মুফাসসিরগণ মাকাম-ই-ইবরাহীমের তাফসীরের অন্তর্ভুক্ত করেছেন।যারা এ ঘরে প্রবেশ করে তারা নিরাপত্তা লাভ করে। অজ্ঞতার যুগেও মক্কা নিরাপদ জায়গা হিসেবে গণ্য হতো। এখানে পিতৃহন্তাকে পেলেও তারা তাকে হত্যা করতো না। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেনঃ ‘বায়তুল্লাহ আশ্রয়প্রার্থীকে আশ্রয় দিয়ে থাকে কিন্তু স্থান ও খানাপানি দেয় না।' কুরআন কারীমের মধ্যে অন্য জায়গায় রয়েছেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ তারা কি দেখে না যে, আমি হারামকে নিরাপত্তার জায়গা করেছি’? অন্য স্থানে রয়েছেঃ ( ২৯:৬৭ )( আরবী ) অর্থাৎ তিনি তাদেরকে ভয় হতে নিরাপত্তা দান করেছেন। ( ১০৬:৪ ) শুধু যে মানবের জন্যেই নিরাপত্তা রয়েছে তা নয়, বরং তথায় শিকার করা, শিকারকে তথা হতে তাড়িয়ে দেয়া, তাকে ভীত-সন্ত্রস্ত করা, তাকে তার অবস্থান স্থল হতে বা বাসা হতে সরিয়ে দেয়া বা উড়িয়ে দেয়াও নিষিদ্ধ। তথাকার বৃক্ষ কেটে ফেলা এবং ঘাস উঠিয়ে ফেলাও বৈধ নয়। এ বিষয়ে আরও বহু হাদীস সূরা-ই-বাকারার তাফসীরে বর্ণিত হয়েছে। সুতরাং এখানে ওর পুনরাবৃত্তি নিষ্প্রয়োজন। মুসনাদ-ই-আহমাদ, জামেউত তিরমিযী ও সুনানে নাসাঈর মধ্যে একটি হাদীস রয়েছে যেটাকে ইমাম তিরমিযী ( রঃ ) হাসান সহীহ বলেছেন। তা এই যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) মক্কার হারূরা বাজারে দাঁড়িয়ে বলেনঃ “ হে মক্কা! তুমি আল্লাহ তা'আলার নিকট সমগ্র ভূমির মধ্যে উত্তম ও প্রিয় ভূমি । যদি আমাকে তোমার উপর হতে জোরপূর্বক বের করে দেয়া না হতো তবে আমি কখনও তোমাকে ছেড়ে যেতাম না।' এ আয়াতের একটি অর্থ এও আছে যে, সে জাহান্নাম হতে পরিত্রাণ পেয়ে গেল। বায়হাকীর একটি মারফু হাদীসে রয়েছেঃ “ যে ব্যক্তি বায়তুল্লাহর মধ্যে প্রবেশ করলো সে পুণ্যের মধ্যে এসে গেল ও পাপ হতে দূর হলো এবং তার পাপ ক্ষমা করে দেয়া হলো । কিন্তু এর একজন বর্ণনাকারী হচ্ছেন আবদুল্লাহ ইবনে নাওমাল, যিনি বর্ণনাকারী হিসেবে বলিষ্ঠ নন। আয়াতের শেষাংশ হচ্ছে হজ্ব ফরয হওয়ার দলীল। কেউ কেউ বলেন যে, ( আরবী ) এ আয়াতটিই হচ্ছে হজ্জ ফরয হওয়ার দলীল। কিন্তু প্রথম উক্তিটিই অধিকতর সঠিক। কয়েকটি হাদীসে এসেছে যে, হজ্ব ইসলামের রুকনসমূহের মধ্যে একটি রুকন। এটা যে ফরয এর উপর মুসলমানদের ইজমা রয়েছে। আর একথাও সাব্যস্ত যে, সমর্থ ব্যক্তিদের উপর জীবনে একবার হজ্ব করা ফরয। নবী ( সঃ ) স্বীয় ভাষণে বলেছিলেনঃ “ হে মানবমণ্ডলী! আল্লাহ তা'আলা তোমাদের উপর হজ্ব ফরয করেছেন, সুতরাং তোমরা হজ্ব করবে । একটি লোক জিজ্ঞেস করেন- “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! প্রতি বছরই কি?' তিনি তখন নীরব হয়ে যান । লোকটি তিনবার ঐ প্রশ্নই করেন। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তখন বলেনঃ “ আমি যদি হাঁ বলতাম তবে প্রতি বছরই হজ্ব ফরয হয়ে যেতো । অতঃপর তোমরা পালন করতে পারতে না। আমি যা বলবো না তোমরা সে সম্বন্ধে জিজ্ঞাসাবাদ করবে না। তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেরা অধিক প্রশ্ন করার ফলে এবং নবীদের ( আঃ ) উপর মতানৈক্য সৃষ্টি করার কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে। আমার নির্দেশ সাধ্যানুসারে পালন কর এবং যে জিনিস হতে আমি নিষেধ করি তা হতে বিরত থাক’। ( মুসনাদ-ই-আহমাদ ) সহীহ মুসলিম শরীফের এ হাদীসে এতটুকু বেশী রয়েছে যে, এ প্রশ্নকারী ব্যক্তি ছিলেন হযরত আকরা’ ইবনে হাবিস ( রাঃ ) এবং রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) উত্তরে এ কথাও বলেছিলেন যে, একবার ফরয ও পরে নফল। অন্য একটি বর্ণনায় রয়েছে যে, ঐ প্রশ্ন সম্বন্ধেই ( আরবী ) আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। ( মুসনাদ-ই-আহমাদ ) আর একটি বর্ণনায় রয়েছে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ 'যদি আমি হাঁ' বলতাম ও প্রতি বছর হজ্ব ফরয হয়ে যেতো তবে তোমরা পালন করতে পারতে না, ফলে শাস্তি অবতীর্ণ হতো'। ( সুনানে ইবনে মাজাহ ) অন্য একটি হাদীসে রয়েছে যে, নবী ( সঃ ) বিদায় হজ্বে স্বীয় সহধর্মিণীগণকে বলেছিলেনঃ হজ্ব হয়ে গেছে। এখন আর বাড়ী হতে বের হবে না। এখন বাকী থাকলো ক্ষমতা ও সামর্থ। ওটা কখনও কারও মাধ্যম ব্যতিরেকেই মানুষের হয়ে থাকে, আবার কখনও কারও মাধ্যমে হয়ে থাকে। যেমন আহকামের পুস্তকগুলোর মধ্যে এর বিস্তারিত বিবরণ বিদ্যমান রয়েছে। ইমাম তিরমিযী ( রঃ )-এর হাদীসে রয়েছে যে, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে জিজ্ঞেস করেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! হাজী কে? তিনি বলেনঃ ‘বিক্ষিপ্ত চুল বিশিষ্ট এবং ময়লাযুক্ত কাপড় পরিহিত ব্যক্তি' অন্য এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! কোন্ হজ্ব উত্তম? তিনি বলেনঃ “যে হজ্বে খুব বেশী কুরবানী করা হয় এবং ‘লাব্বায়েক' শব্দ অধিক উচ্চারিত হয় আর একটি লোক প্রশ্ন করেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! ( আরবী ) শব্দের ভাবার্থ কি?' তিনি বলেনঃ ‘পাথেয়, পানাহারের উপযুক্ত খরচ এবং সোয়ারী' এ হাদীসের একজন বর্ণনাকারী দুর্বল হলেও এর পিছনে অন্য সনদও রয়েছে। বিভিন্ন সাহাবী হতে বিভিন্ন সনদে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) ( আরবী )-এর তাফসীরে পাথেয় এবং সোয়ারীর কথা বলেছেন। মুসনাদ-ই-আহমাদের অন্য একটি হাদীসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ তোমরা ফরয হজু তাড়াতাড়ি আদায় করে নাও, না জানি কি ঘটে যায় । সুনন-ই-আবু দাউদ প্রভৃতির মধ্যে রয়েছেঃ “ হজ্ব করতে ইচ্ছুক ব্যক্তির উচিত যে, সে যেন শীঘ্রই স্বীয় বাসনা পূর্ণ করে ।' হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেন, যার নিকট তিনশ রৌপ্যমুদ্রা রয়েছে সে সক্ষম ব্যক্তি।' হযরত ইকরামা ( রাঃ ) বলেন যে, ইসলাম ছাড়া যে ব্যক্তি অন্য ধর্ম অনুসন্ধান করে তা কখনও গৃহীত হবে না'। যখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়, তখন ইয়াহূদীরা বলতে থাকেঃ “ আমরাও মুসলমান । রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তখন তাদেরকে বলেনঃ মুসলানদের উপর তো হজ্ব ফরয, তাহলে তোমরাও হজ্ব কর। তখন তারা স্পষ্টভাবে অস্বীকার করে বসে। ফলে এ আয়াতটি অবর্তীণ হয় এবং বলা হয় যে, হজ্বের অস্বীকারকারী কাফির। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ তা'আলা সমগ্র বিশ্ববাসী হতে প্রত্যাশা মুক্ত। হযরত আলী ( রাঃ ) বলেন যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ যে ব্যক্তি খাদ্য, পানীয় ও যানবাহনের উপর ক্ষমতা রাখে এ পরিমাণ মাল তার নিকট বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও হজ্ব করে না, সে ইয়াহুদী বা খ্রীষ্টান ধর্মের উপর মৃত্যুবরণ করবে । আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ ‘আল্লাহর উদ্দেশ্যে বায়তুল্লাহর হজ্ব করা মানুষের কর্তব্য যারা তদ্দিকে পথ অতিক্রমে সমর্থ, আর যদি কেউ অস্বীকার করে তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ সমগ্র বিশ্ববাসী হতে প্রত্যাশা মুক্ত।' এ হাসীসের বর্ণনাকারীর উপরও সমালোচনা রয়েছে। হযরত উমার ফারূক ( রাঃ ) বলেন, ক্ষমতা থাকতেও যে ব্যক্তি হজ্ব করে না, সে ইয়াহুদী হয়ে বা খ্রীষ্টান হয়ে মারা যাবে। এর সনদ সম্পূর্ণরূপে বিশুদ্ধ। ( হাফিয আবু বাকর ইসমাঈলী ) মুসনাদ-ই- সাঈদ ইবনে মানসুরের মধ্যে রয়েছে যে, হযরত উমার ফারূক ( রাঃ ) বলেছেনঃ “ আমার ইচ্ছে রয়েছে যে, আমি বিভিন্ন শহরে লোক পাঠিয়ে দেবো এবং তারা ঐসব লোকের উপর জিযিয়া কর বসিয়ে দেবে যারা ক্ষমতা থাকতেও হজ্ব করে না । কেননা তারা মুসলমান নয়।”

সূরা আলে-ইমরান আয়াত 97 সূরা

فيه آيات بينات مقام إبراهيم ومن دخله كان آمنا ولله على الناس حج البيت من استطاع إليه سبيلا ومن كفر فإن الله غني عن العالمين

سورة: آل عمران - آية: ( 97 )  - جزء: ( 4 )  -  صفحة: ( 62 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. আর আপনি যখন পরিজনদের কাছ থেকে সকাল বেলা বেরিয়ে গিয়ে মুমিনগণকে যুদ্ধের অবস্থানে বিন্যস্ত করলেন,
  2. এটা লিখিত আছে সম্মানিত,
  3. এবং স্মরণ করুন, আমি আপনাকে বলে দিয়েছিলাম যে, আপনার পালনকর্তা মানুষকে পরিবেষ্টন করে রেখেছেন এবং
  4. এটা এজন্যে যে, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তারা তা পছন্দ করে না। অতএব, আল্লাহ তাদের
  5. অতঃপর যদি তারা সবর করে, তবুও জাহান্নামই তাদের আবাসস্থল। আর যদি তারা ওযরখাহী করে, তবে
  6. এই সে জাহান্নাম, যার ওয়াদা তোমাদেরকে দেয়া হতো।
  7. সে বললঃ আপনি কি লক্ষ্য করেছেন, আমরা যখন প্রস্তর খন্ডে আশ্রয় নিয়েছিলাম, তখন আমি মাছের
  8. কিন্তু যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে ও সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্যে রয়েছে অশেষ পুরস্কার।
  9. এই কিতাবে ইসমাঈলের কথা বর্ণনা করুন, তিনি প্রতিশ্রুতি পালনে সত্যাশ্রয়ী এবং তিনি ছিলেন রসূল, নবী।
  10. সে দিন মানুষ বলবেঃ পলায়নের জায়গা কোথায় ?

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা আলে-ইমরান ডাউনলোড করুন:

সূরা Al Imran mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Al Imran শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Sunday, May 19, 2024

لا تنسنا من دعوة صالحة بظهر الغيب