কোরান সূরা সাফ্ফাত আয়াত 132 তাফসীর
﴿إِنَّهُ مِنْ عِبَادِنَا الْمُؤْمِنِينَ﴾
[ الصافات: 132]
সে ছিল আমার বিশ্বাসী বান্দাদের অন্তর্ভূক্ত। [সূরা সাফ্ফাত: 132]
Surah As-Saaffat in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Assaaffat ayat 132
তিনি নিশ্চয়ই ছিলেন আমাদের মুমিন বান্দাদের অন্যতম।
Tafsir Mokhtasar Bangla
১৩২. অবশ্যই ইলিয়াস ( আলাইহিস-সালাম ) আমার সেসব প্রকৃত মুু’মিন বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত যারা স্বীয় প্রতিপালকের উপর ঈমানে সত্যপরায়ণ।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
নিশ্চয় সে ছিল আমার বিশ্বাসী দাসদের অন্যতম। [১] [১] কুরআনে অধিকাংশ জায়গায় নবী ও রসূলদের বর্ণনা করার পর এ বাক্যটি ব্যবহার করা হয়েছে যে, 'সে আমার মু'মিন বান্দা ( বিশ্বাসী দাস )-দের একজন ছিল।' এর দুটি উদ্দেশ্য আছে। প্রথম উদ্দেশ্য, তাঁর মহান চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ, যা ঈমানের জরুরী অংশ। যাতে সেই সকল মানুষ, যারা অনেক পয়গম্বরদের চারিত্রিক দুর্বলতার কথা বলে থাকে, তাদের খন্ডন হয়ে যায়। যেমন বর্তমান তাওরাত ও ইঞ্জীলে অনেক পয়গম্বরদের বিষয়ে এরূপ মনগড়া কেচ্ছা-কাহিনী লিপিবদ্ধ আছে। দ্বিতীয় উদ্দেশ্য, ঐ সকল মানুষদের ধারণা খন্ডন, যারা অনেক নবীদের গুণাবলীতে অতিরঞ্জন করে তাঁদের মধ্যে আল্লাহর গুণ ও ক্ষমতা সাব্যস্ত করে। অর্থাৎ তাঁরা অবশ্যই পয়গম্বর ছিলেন, আর ছিলেন আল্লাহর বান্দা ও তাঁর দাস। তাঁরা না ছিলেন ইলাহ বা তাঁর অংশ, আর না ছিলেন তাঁর অংশীদার।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
তিনি তো ছিলেন আমাদের মুমিন বান্দাদের অন্যতম।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
১২৩-১৩২ নং আয়াতের তাফসীর: হযরত কাতাদা ( রঃ ) ও মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাক ( র ) বলেনঃ “ বলা হয় যে, ইলিয়াস ছিল হযরত ইদরীস ( আঃ )-এর নাম । হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ ( রাঃ ) বলেন যে, ইলিয়াসই ছিলেন ইদরীস ( আঃ )। যহাক ( রঃ ) বলেন যে, আল্লাহ তা'আলা হযরত হাকীল নবী ( আঃ )-এর পরে তাঁকে বানী ইসরাঈলের মধ্যে প্রেরণ করেন। বানী ইসরাঈল ঐ সময় ‘বা'আল’ নামক মূর্তির পূজা। করতো। হযরত ইলিয়াস ( আঃ ) তাদেরকে আল্লাহর দিকে ডাকলেন এবং আল্লাহ ছাড়া অন্যের উপাসনা করতে নিষেধ করলেন। তাদের বাদশাহ তা কবুল করে নেয়। কিন্তু পরে সে মুরতাদ ( ধর্মত্যাগী ) হয়ে যায়। অতঃপর তারা সবাই ভ্রান্ত পথেই রয়ে যায়। তাদের কেউই তার উপর ঈমান আনলো না। আল্লাহর নবী ( আঃ ) তাদের উপর বদ দূআ করেন। ফলে তিন বছর ধরে সেখানে বৃষ্টিপাত বন্ধ তাকে। তখন তারা সবাই হযরত ইলিয়াস ( আঃ )-এর কাছে এসে বলেঃ “ আপনি দুআ করুন! আমাদের উপর বৃষ্টিপাত হলেই আমরা কসম করে বলছি যে, আমরা ঈমান আনয়ন করবো ।” হযরত ইলিয়াস ( আঃ )-এর দু'আর ফলে আল্লাহ তাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ করলেন। কিন্তু এর পরেও তারা অঙ্গীকার ভঙ্গ করে কুফরীর উপরই অটল থেকে গেল। তাদের এ আচরণ দেখে হযরত ইলিয়াস ( আঃ ) আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করলেন যে, তাঁকে যেন আকাশে উঠিয়ে নেয়া হয়। হযরত ইয়াসা ইবনে উখতূব ( আঃ ) তাঁর নিকটই লালিত পালিত হয়েছিলেন। হযরত ইলিয়াস ( আঃ )-এর এই দু’আর পর তাকে নির্দেশ দেয়া হলো যে, তিনি যেন অমুক নির্দিষ্ট স্থানে গমন করেন এবং সেখানে যে যানবাহন পাবেন তাতেই যেন আরোহণ করেন। যথাস্থানে পৌঁছে তিনি নূরের একটি ঘোড়া দেখতে পান এবং তাতেই আরোহণ করেন। আল্লাহ তাকেও জ্যোতির্ময় করলেন এবং পাখা প্রদান করলেন। তিনি ফেরেশতাদের সাথে স্বীয় পাখার উপর ভর করে উড়তে লাগলেন। এই ভাবে একজন মানুষ আসমানী ও যমীনী ফেরেশতায় পরিণত হয়ে গেলেন। ( অহাব ইবনে মুনাব্বাহ (রঃ ) আহলে কিতাব হতে এটা বর্ণনা করেছেন। এসব ব্যাপারে সঠিক জ্ঞানের অধিকারী একমাত্র আল্লাহ)মহান আল্লাহ বলেন যে, ইলিয়াস ( আঃ ) স্বীয় সম্প্রদায়কে বললেনঃ “ তোমরা কি আল্লাহকে ভয় কর না যে, তাকে ছেড়ে অন্যের উপাসনা কর?” হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেন যে, ( আরবী ) অর্থ হলো ‘রব’ বা প্রতিপালক । ইকরামা ( রঃ ) বলেন যে, এটা ইয়ামনীদের ভাষা। কাতাদা ( রঃ ) বলেন যে, এটা ইযদ শানুআদের ভাষা। ইবনে ইসহাক ( রঃ ) বলেন:“ আমাকে সংবাদ দেয়া হয়েছে যে, তারা একটি মহিলার মূর্তির পূজা করতো । তার নাম ছিল বা'আল। আবদুর রহমান ( রঃ ) বলেন যে, ওটা একটা মূর্তি ছিল। শহরবাসীরা ওর পূজা করতো। ঐ শহরের নামও ছিল বাআলাক'। হযরত ইলিয়াস ( আঃ ) তাদেরকে বললেনঃ “ তোমরা সকলের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহকে ছেড়ে মূর্তিপূজায় লিপ্ত হয়েছে? অথচ আল্লাহ তো তোমাদের ও তোমাদের পূর্বপুরুষদের সৃষ্টিকর্তা এবং প্রতিপালক । একমাত্র তিনিই তো ইবাদতের যোগ্য।" প্রবল প্রতাপান্বিত আল্লাহ বলেনঃ “ কিন্তু তারা তাকে মিথ্যাবাদী বলেছিল, কাজেই তাদেরকে অবশ্যই শাস্তির জন্যে উপস্থিত করা হবে । তবে আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দাদের কথা স্বতন্ত্র ।” তাদেরকে তিনি রক্ষা করবেন। আল্লাহ তা'আলার বাণীঃ আমি ইলিয়াস ( আঃ )-এর জন্যে পরবর্তী লোকদের উত্তম প্রশংসা প্রচলিত রেখেছি যে, প্রত্যেক মুসলমান তার উপর দরূদ ও সালাম প্রেরণ করে থাকে।( আরবী ) শব্দের দ্বিতীয় রূপ ( আরবী ) রয়েছে। যেমন ( আরবী ) কে ( আরবী ) বলা হয়। এটা বানু আসাদ গোত্রের ভাষা। অনুরূপভাবে ( আরবী ) -কে ( আরবী ) এবং ( আরবী ) কে ( আরবী ) বলা হয়ে থাকে। ফল কথা, এটা আরবে সুপ্রচলিত শব্দ। হযরত ইবনে মাসউদ ( রাঃ )-এর এক কিরআতে ( আরবী ) পড়া হয়েছে। অর্থাৎ ( আরবী ) বা মুহাম্মাদ ( সঃ )-এর বংশধর। মহান আল্লাহ বলেনঃ “ এই ভাবে আমি সৎকর্মশীলদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি । নিশ্চয়ই সে ছিল আমার মুমিন বান্দাদের অন্যতম।” এর তাফসীর পূর্বেই গত হয়েছে। এসব ব্যাপারে আল্লাহই সবচেয়ে ভাল জানেন।
সূরা সাফ্ফাত আয়াত 132 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- হে প্রশান্ত মন,
- আল্লাহ যেসব গৃহকে মর্যাদায় উন্নীত করার এবং সেগুলোতে তাঁর নাম উচ্চারণ করার আদেশ দিয়েছেন, সেখানে
- যেদিন আমি প্রবলভাবে ধৃত করব, সেদিন পুরোপুরি প্রতিশোধ গ্রহণ করবই।
- সে বলল, আমি এই ধন আমার নিজস্ব জ্ঞান-গরিমা দ্বারা প্রাপ্ত হয়েছি। সে কি জানে না
- যেদিন ভূমন্ডল বিদীর্ণ হয়ে মানুষ ছুটাছুটি করে বের হয়ে আসবে। এটা এমন সমবেত করা, যা
- যে লোক নিজ প্রতিজ্ঞা পূর্ন করবে এং পরহেজগার হবে, অবশ্যই আল্লাহ পরহেজগারদেরকে ভালবাসেন।
- বলূনঃ হে আমার পালনকর্তা, ক্ষমা করুন ও রহম করুন। রহমকারীদের মধ্যে আপনি শ্রেষ্ট রহমকারী।
- এরা তোমাদের বোঝা এমন শহর পর্যন্ত বহন করে নিয়ে যায়, যেখানে তোমরা প্রাণান্তকর পরিশ্রۦ#2478; ব্যতীত
- নিশ্চয় তাদের পালনকর্তার শাস্তি থেকে নিঃশঙ্কা থাকা যায় না।
- নভোমন্ডল ও ভুপৃষ্ঠে যা কিছু আছে, সব তাঁরই এবং আল্লাহই অভাবমুক্ত প্রশংসার অধিকারী।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা সাফ্ফাত ডাউনলোড করুন:
সূরা Assaaffat mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Assaaffat শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers