কোরান সূরা আ'রাফ আয়াত 11 তাফসীর
﴿وَلَقَدْ خَلَقْنَاكُمْ ثُمَّ صَوَّرْنَاكُمْ ثُمَّ قُلْنَا لِلْمَلَائِكَةِ اسْجُدُوا لِآدَمَ فَسَجَدُوا إِلَّا إِبْلِيسَ لَمْ يَكُن مِّنَ السَّاجِدِينَ﴾
[ الأعراف: 11]
আর আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, এরপর আকার-অবয়ব, তৈরী করেছি। অতঃপর আমি ফেরেশতাদেরকে বলছি-আদমকে সেজদা কর তখন সবাই সেজদা করেছে, কিন্তু ইবলীস সে সেজদাকারীদের অন্তর্ভূক্ত ছিল না। [সূরা আ'রাফ: 11]
Surah Al-Araf in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Araf ayat 11
আর নিশ্চয়ই আমরা তোমাদের সৃষ্টি করেছি, তারপর তোমাদের রূপদান করেছি, তারপর ফিরিশ্তাদের বললাম -- ''আদমের প্রতি সিজদা করো।’’ কাজেই তারা সিজদা করলো, কিন্তু ইবলীস করলো না সে সিজদাকারীদের অন্তর্ভুক্ত হলো না।
Tafsir Mokhtasar Bangla
১১. হে মানুষ! আমি তোমাদের পিতা আদমকে সৃষ্টি করেছি এবং তাকে সুন্দর গঠন ও অবয়ব দিয়েছি অতঃপর ফিরিশতাদেরকে তার সম্মানে সাজদাহ করার আদেশ করেছি। তারা আমার কথা মেনে তাকে সাজদাহ করেছে। তবে ইবলিস অহঙ্কার ও হঠকারিতা দেখিয়ে তাকে সাজদাহ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
আমিই তোমাদেরকে[১] সৃষ্টি করি, অতঃপর তোমাদেরকে ( মানবাকারে ) রূপদান করি এবং তারপর ফিরিশতাদেরকে বলি, ‘তোমরা আদমকে সিজদাহ কর।’ তখন ইবলীস ব্যতীত সকলেই সিজদাহ করল। সে সিজদাহকারীদের অন্তর্ভুক্ত হল না। [১] خَلَقْنَاكُمْ তে সর্বনাম বহুবচন এলেও, তার দ্বারা বুঝানো হয়েছে আবুল বাশার আদম ( আঃ )-কে।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর অবশ্যই আমারা তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, তারপর আমারা তোমাদের আকৃতি প্রদান করেছি [ ১ ], তারপর আমরা ফিরিশতাদেরকে বললাম,আদমকে সিজদা কর। অতঃপর ইবলীস ছাড়া সবাই সিজদা করল।সে সিজদাকারীদের অন্তর্ভূক্ত হল না। দ্বিতীয় রুকূ’ [ ১ ] এ আয়াতের তাফসীরে ইবন আব্বাস বলেন, এখানে সৃষ্টি করার অর্থ প্রথমে আদমকে সৃষ্টি করা। আর আকৃতি প্রদানের কথা বলে তার সন্তানদেরকে বোঝানো হয়েছে। [ তাবারী ] মুজাহিদ বলেন, এখানে সৃষ্টি করার কথা বলে আদম এবং আকৃতি প্রদানের কথা বলে, আদমের সন্তানদেরকে আদমের পৃষ্ঠে আকৃতি প্রদানের কথা বোঝানো হয়েছে। [ আত-তাফসীরুস সহীহ ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
এখানে আল্লাহ পাক মানব-পিতা আদম ( আঃ )-এর মর্যাদা এবং তাঁর শত্রু ইবলীসের বর্ণনা দিচ্ছেন, যে ইবলীস হযরত আদম ( আঃ ) ও তাঁর সন্তানদের সাথে শত্রুতা রাখে। যেন মানুষ তাদের শত্রু ইবলীস থেকে বেঁচে থাকে এবং তার পথে না চলে। তাই তিনি মানব জাতিকে সম্বোধন করে বলেনঃ আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদের আকৃতি দান করেছি। তারপর আমি ফেরেশতাদেরকে বলেছি-আদিম ( আঃ )-কে সিজদা কর । আমার এ নির্দেশ পালনার্থে সবাই সিজদা করলো। আল্লাহ তা'আলা ফেরেশতামণ্ডলীকে বলেছিলেন-আমি মানব সৃষ্টি করবো, যাকে আমি ঠনঠনে শুষ্ক মাটি দ্বারা তৈরী করবো। সুতরাং যখন আমি ওকে তৈরী করে ওতে রূহ ফুঁকে দিলাম এবং একটা জীবন্ত দেহ তৈরী হয়ে গেল, তখন আমার এই ক্ষমতা দেখে সবাই আদম ( আঃ )-এর সিজদায় পড়ে গেল। আর এর প্রয়োজনীয়তা এজন্যেই ছিল যে, যখন আল্লাহ তা'আলা আদম ( আঃ )-কে নিজের হাতে মসৃন চটচটে মাটি দ্বারা তৈরী করলেন এবং তাকে একটা সোজা দেহবিশিষ্ট মানবীয় রূপ দান করলেন আর তার মধ্যে রূহ ফুকে দিলেন, তখন তিনি ফেরেশতাদেরকে নির্দেশ দিলেন- ‘কুন’ শব্দ দ্বারা বানানো মাখলুককে নয়, বরং স্বয়ং আমার হাতে বানানো পুতুলকে সিজদা কর। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটা ছিল কুদরতে ইলাহীকে সিজদা করা এবং তার শান শওকতের সম্মান করা। এই নির্দেশ দেয়া মাত্রই সমস্ত ফেরেশতা নির্দেশ পালনার্থে সিজদা করলেন। কিন্তু একমাত্র ইবলীস সিজদাহ করলো না। প্রথম সূরা অর্থাৎ সূরায়ে বাকারায় এর উপর যথেষ্ট আলোচনা হয়েছে। এখন এই স্থানে আমরা যা কিছু আলোচনা করলাম তা হচ্ছে। ওটাই যা ইবনে জারীর ( রঃ ) অবলম্বন করেছেন।( আরবী ) -এর তাফসীরে হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেন যে, প্রথমে মানুষকে পুরুষ লোকদের পৃষ্ঠদেশে সৃষ্টি করা হয়। এরপর স্ত্রী লোকদের গর্ভাশয়ে তার আকৃতি দান করা হয়। কাতাদাহ ( রঃ ) এবং যহ্হাক ( রঃ ) এই আয়াতের তাফসীরে বলেন যে, এর অর্থ হচ্ছে-আমি আদম ( আঃ )-কে সৃষ্টি করেছি। তারপর তার সন্তানের আকৃতি দান করেছি। কিন্তু এতে চিন্তা ভাবনার অবকাশ রয়েছে। কেননা, এর পরেই আল্লাহ পাক বলেছেন- ( আরবী )-এটা একথাই প্রমাণ করছে যে, এর দ্বারা আদম ( আঃ )-কেই বুঝানো হয়েছে। আর এখানে বহুবচনের সাথে যে বলা হয়েছে, এর কারণ এই যে, আদম ( আঃ ) হচ্ছেন মানব জাতির পিতা। যেমন আল্লাহ তা'আলা তো সম্বোধন করছেন নবী ( সঃ )-এর যুগের বানী ইসরাঈলদেরকে। অর্থাৎ ( আরবী ) ( ২:৫৭ ) অর্থাৎ গামাম’, ‘মান’ ও ‘সালওয়া তো এসেছিল বর্তমান যুগের বানী ইসরাঈলের পূর্বপূরুষদের উপর। তাহলে এর দ্বারা তো ঐ লোকদেরকেই বুঝানো হয়েছে যারা হযরত মূসা ( আঃ )-এর যুগে ছিল। কিন্তু বাপ-দাদাদের উপর অনুগ্রহ করাও প্রকতপক্ষে তাদের বংশধরদের উপরও অনুগহ করা হয়ে থাকে। তাহলে এই অনুগ্রহ যেন সন্তানদের উপরও করা হয়েছিল। এ জন্যেই ( আরবী ) সে দ্বারা সম্বোধন করেছেন। তাহলে যেন ( আরবী ) শব্দ দ্বারা আদম ( আঃ ) এবং তাঁর সন্তানগণ সকলকেই বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ সকলকেই একত্রিত করা হয়েছে। এটা আল্লাহ পাকের নিম্নের উক্তির বিপরীতঃ ( আরবী ) ( ২৩:১২ ) এখানে ( আরবী ) শব্দ দ্বারা ( আরবী ) উদ্দেশ্য। অর্থাৎ বহুবচন উদ্দেশ্য নয়, বরং একটি আত্মা অর্থাৎ হযরত আদম ( আঃ )-এর সত্তা উদ্দেশ্য, যাকে মাটি থেকে সৃষ্টি করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর সমস্ত সন্তানকে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করা হয়নি, বরং নুঙ্কা' বা বীর্য থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। এখন যে বলা হয়-“ মানুষকে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে তা শুধু এই কারণে যে, মানুষের পিতা আদম ( আঃ )-কে মানুষের মত বীর্য থেকে নয়, বরং মাটি দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছিল । এসব বিষয়ে আল্লাহই সবচেয়ে ভাল জানেন।
সূরা আ'রাফ আয়াত 11 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- আরও বলঃ পালনকর্তা, আমাকে কল্যাণকর ভাবে নামিয়ে দাও, তুমি শ্রেষ্ঠ অবতারণকারী।
- আল্লাহর কসম, আমি আপনার পূর্বে বিভিন্ন সম্প্রদায়ে রাসূল প্রেরণ করেছি, অতঃপর শয়তান তাদেরকে কর্ম সমূহ
- তোমরা যখন ফরিয়াদ করতে আরম্ভ করেছিলে স্বীয় পরওয়ারদেগারের নিকট, তখন তিনি তোমাদের ফরিয়াদের মঞ্জুরী দান
- তোমাদের প্রত্যেক অনুরাগী ও স্মরণকারীকে এরই প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল।
- তিনিই তোমাদের প্রতি রহমত করেন এবং তাঁর ফেরেশতাগণও রহমতের দোয়া করেন-অন্ধকার থেকে তোমাদেরকে আলোকে বের
- তোমাদের সামনে আল্লাহর কসম খায় যাতে তোমাদের রাযী করতে পারে। অবশ্য তারা যদি ঈমানদার হয়ে
- বৃদ্ধা নারী, যারা বিবাহের আশা রাখে না, যদি তারা তাদের সৌন্দর্য?2474;্রকাশ না করে তাদের বস্ত্র
- এগুলো কতগুলো নাম বৈ নয়, যা তোমরা এবং তোমাদের পূর্ব-পুরুষদের রেখেছ। এর সমর্থনে আল্লাহ কোন
- ফেরাউন বলল, হে পরিষদবর্গ, আমি জানি না যে, আমি ব্যতীত তোমাদের কোন উপাস্য আছে। হে
- তারা কি লক্ষ্য করে না, তাদের মাথার উপর উড়ন্ত পক্ষীকুলের প্রতি পাখা বিস্তারকারী ও পাখা
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা আ'রাফ ডাউনলোড করুন:
সূরা Araf mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Araf শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers