কোরান সূরা ইউসুফ আয়াত 66 তাফসীর
﴿قَالَ لَنْ أُرْسِلَهُ مَعَكُمْ حَتَّىٰ تُؤْتُونِ مَوْثِقًا مِّنَ اللَّهِ لَتَأْتُنَّنِي بِهِ إِلَّا أَن يُحَاطَ بِكُمْ ۖ فَلَمَّا آتَوْهُ مَوْثِقَهُمْ قَالَ اللَّهُ عَلَىٰ مَا نَقُولُ وَكِيلٌ﴾
[ يوسف: 66]
বললেন, তাকে ততক্ষণ তোমাদের সাথে পাঠাব না, যতক্ষণ তোমরা আমাকে আল্লাহর নামে অঙ্গীকার না দাও যে, তাকে অবশ্যই আমার কাছে পৌঁছে দেবে; কিন্তু যদি তোমরা সবাই একান্তই অসহায় না হয়ে যাও। অতঃপর যখন সবাই তাঁকে অঙ্গীকার দিল, তখন তিনি বললেনঃ আমাদের মধ্যে যা কথাবার্তা হলো সে ব্যাপারে আল্লাহই মধ্যস্থ রইলেন। [সূরা ইউসুফ: 66]
Surah Yusuf in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Yusuf ayat 66
তিনি বললেন -- ''আমি তাকে কিছুতেই তোমাদের সাথে পাঠাব না যতক্ষণ না তোমরা আমার কাছে আল্লাহ্র নামে ওয়াদা কর যে তোমরা নিশ্চয় আমার কাছে তাকে ফিরিয়ে আনবে, যদি না তোমরা একান্ত অসহায় হও।’’ অতএব তারা যখন তাঁকে তাদের প্রতিশ্রুতি দিল তখন তিনি বললেন -- ''আমরা যা বলছি তার উপরে আল্লাহ্ই কর্ণধার।’’
Tafsir Mokhtasar Bangla
৬৬. তাদের পিতা তাদেরকে বললো: আমি তাকে তোমাদের সাথে পাঠাবো না যতক্ষণ না তোমরা আল্লাহর সাথে এ ব্যাপারে শক্ত অঙ্গীকার করবে যে, তোমরা তাকে আমার নিকট ফিরিয়ে দিবে। তবে কোন ধ্বংসযজ্ঞ যদি তোমাদের সবাইকে ঘিরে ফেলে এবং তোমাদের কেউ বেঁচে না থাকো কিংবা সে ধ্বংসযজ্ঞ তোমরা প্রতিরোধ করতে বা সেখান থেকে তোমরা ফিরে আসতে না পারো তাহলে তা ভিন্ন কথা। যখন তারা তাঁকে এ ব্যাপারে আল্লাহর শক্ত অঙ্গীকার দিলো তখন তিনি বললেন: আমাদের কথার উপর আল্লাহই সাক্ষী। তাঁর সাক্ষ্যই আমাদের জন্য যথেষ্ট।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
পিতা বলল, ‘আমি ওকে কক্ষনো তোমাদের সাথে পাঠাব না, যতক্ষণ না তোমরা আল্লাহর নামে অঙ্গীকার কর যে, তোমরা তাকে আমার নিকট অবশ্যই ফিরিয়ে আনবে; তবে তোমরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়লে সে কথা ভিন্ন।’[১] অতঃপর যখন তারা তাঁর নিকট অঙ্গীকার করল, তখন সে বলল, ‘আমরা যা কিছু বলছি, আল্লাহ তার বিধায়ক।’ [১] অর্থাৎ, তোমরা সকলে বিপদগ্রস্ত হয়ে পড় অথবা তোমরা ধ্বংস কিংবা গ্রেপ্তার হয়ে যাও, যা থেকে নিষ্কৃতি পেতে তোমরা অসমর্থ, তাহলে তা ভিন্ন কথা, উক্ত পরিস্থিতিতে তোমাদের ওযর গ্রহণযোগ্য হবে।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
পিতা বললেন, ‘আমি তাকে কখনোই তোমাদের সাথে পাঠাবো না যতক্ষণ না তোমরা আল্লাহ্র নামে অঙ্গীকার কর যে, তোমরা তাকে আমার কাছে নিয়ে আসবেই [ ১ ], অবশ্য যদি তোমরা বেষ্টিত হয়ে পড় ( তবে ভিন্ন কথা )।’ তারপর যখন তারা তাঁর কাছে প্রতিজ্ঞা করল তখন তিনি বললেন, ‘আমরা যে বিষয়ে কথা বলছি, আল্লাহ্ তার বিধায়ক [ ২ ]।’ [ ১ ] এসব কথা শুনে পিতা উত্তর দিলেন, আমি বিনইয়ামীনকে তোমাদের সাথে ততক্ষণ পর্যন্ত পাঠাব না, যতক্ষণ না তোমরা আল্লাহ্র কসমসহ এরূপ ওয়াদা-অঙ্গীকার আমাকে দাও যে, তোমরা অবশ্যই তাকে সাথে নিয়ে আসবে। ঐ অবস্থা ব্যতীত, যখন তোমরা সবাই কোন বেষ্টনীতে পড়ে যাও। তাফসীরবিদ মুজাহিদ বলেনঃ এর অর্থ এই যে, তোমরা সবাই মৃত্যুমুখে পতিত হও। [ কুরতুবী ] কাতাদাহর মতে অর্থ এই যে, তোমরা সম্পূর্ণ অক্ষম ও পরাভূত হয়ে পড়। [ ইবন কাসীর ] [ ২ ] অর্থাৎ ছেলেরা যখন প্রার্থিত পন্থায় ওয়াদা-অঙ্গীকার করল অর্থাৎ সবাই কসম করল এবং পিতাকে আশ্বস্ত করার জন্য কঠোর ভাষায় প্রতিজ্ঞা করল, তখন ইয়াকূব ‘আলাইহিস্ সালাম বললেনঃ বিনইয়ামীনকে হেফাজতের জন্য হলফ নেয়া-হলফ করার যে কাজ আমরা করেছি, আল্লাহ্ তা'আলার উপরই তার নির্ভর। তিনি শক্তি দিলেই কেউ কারো হেফাযত করতে পারে এবং দেয়া অঙ্গীকার পূর্ণ করতে পারে। [ কুরতুবী ] নতুবা মানুষ অসহায়; তার ব্যক্তিগত সামর্থাধীন কোন কিছুই নয়।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৬৫-৬৬ নং আয়াতের তাফসীর আল্লাহ তাআ’লা বলছেন যে, ইউসুফের ( আঃ ) ভ্রাতাগণ যখন তাদের মালপত্র খুললো তখন দেখলো যে, তাদের পণ্যমূল্য তাদেরকে প্রত্যর্পণ করা হয়েছে ঐগুলি হযরত ইউসুফ ( আঃ ) তাঁর ভাইদের বিদায়ের সময় তাদের বস্তার মধ্যে গোপনীয়ভাবে ভরে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বাড়ি গিয়ে যখন তাঁরা বস্তা খুলল তখন তাদের প্রদত্ত পণ্য মূল্য গুলি বস্তার মধ্যে দেখতে পেল। তা দেখে তাদের পিতাকে তারা বললোঃ “ আব্বা! আর কি চান? দেখুন! মিসরের আযীয তো আমাদেরকে আমাদের পণ্য মূল্য পর্যন্ত ফিরিয়ে দিয়েছেন অথচ খাদ্য শস্য পুরোপুরি প্রদান করেছেন । আপনি এখন আমাদের ভাই বিনইয়ামীনকে আমাদের সাথে পাঠিয়ে দিন। আমরা আমাদের পরিবারের জন্যে রসদও আনবো এবং ভাই এর কারণে আরো এক উট বোঝাই খাদ্য পেয়ে যাবো। কেননা মিসরের আযীয প্রত্যেককে এক উট বোঝাই খাদ্যই দিয়ে থাকেন। আর আপনি আমাদের ভাই বিনইয়ামীনকে আমাদের সাথে পাঠানোর ব্যাপার চিন্তা করছেন কেন? আমরা পূর্ণভাবে তার রক্ষণাবেক্ষণ করবে। এটা খুবই সহজ মাপ।" এই ছিল পিতার সাথে তাদের আলাপ আলোচনা হযরত ইয়াকুব ( আঃ ) তাঁদের এসব কথার জবাবে বললেনঃ “ যে পর্যন্ত তোমরা শপথ করে না বলবে যে, তোমরা তোমাদের এই ভাইকে আমার কাছে ফিরিয়ে আনবে সেই পর্যন্ত আমি তাকে তোমাদের সাথে পাঠাতে পারি না । হ্যাঁ, তবে যদি আল্লাহ না করুন তোমরা সবাই শত্রু কর্তৃক পরিবেষ্টিত হয়ে যাও তাহলে সেটা অন্য কথা।” এরপর হযরত ইয়াকুব ( আঃ ) বললেনঃ “ আমরা যা কিছু বলছি, আল্লাহ তার বিধায়ক ।” এ কথা বলে তিনি তাঁর প্রিয় পুত্র বিনইয়ামীনকে তাঁদের সাথে পাঠিয়ে দেন। কেননা, ওটা ছিল দুর্ভিক্ষের সময়। কাজেই প্রয়োজনের তাগিদে তাকে তাঁদের সাথে পাঠানো ছাড়া কোন উপায় ছিল না।
সূরা ইউসুফ আয়াত 66 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- বল, আচ্ছা নিজেই লক্ষ্য করে দেখ, যা কিছু আল্লাহ তোমাদের জন্য রিযিক হিসাবে অবতীর্ণ করেছেন,
- আর আল্লাহ শান্তি-নিরাপত্তার আলয়ের প্রতি আহবান জানান এবং যাকে ইচ্ছা সরলপথ প্রদর্শন করেন।
- অবশ্যই তারা সাহায্য প্রাপ্ত হয়।
- হে কারাগারের সঙ্গীরা! পৃথক পৃথক অনেক উপাস্য ভাল, না পরাক্রমশালী এক আল্লাহ?
- বনবাসীরা এবং তোব্বা সম্প্রদায়। প্রত্যেকেই রসূলগণকে মিথ্যা বলেছে, অতঃপর আমার শাস্তির যোগ্য হয়েছে।
- আর আল্লাহ যখন আহলে কিতাবদের কাছ থেকে প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করলেন যে, তা মানুষের নিকট বর্ণনা
- এবং রুচিমত পাখীর মাংস নিয়ে।
- আমি তাদের নিকট দুজন রসূল প্রেরণ করেছিলাম, অতঃপর ওরা তাদেরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করল। তখন আমি
- যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম সম্পাদন করে, আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশ
- আল্লাহর পরিবর্তে? তারা কি তোমাদের সাহায্য করতে পারে, অথবা তারা প্রতিশোধ নিতে পারে?
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা ইউসুফ ডাউনলোড করুন:
সূরা Yusuf mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Yusuf শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers