কোরান সূরা নিসা আয়াত 152 তাফসীর
﴿وَالَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرُسُلِهِ وَلَمْ يُفَرِّقُوا بَيْنَ أَحَدٍ مِّنْهُمْ أُولَٰئِكَ سَوْفَ يُؤْتِيهِمْ أُجُورَهُمْ ۗ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا﴾
[ النساء: 152]
আর যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর উপর, তাঁর রসূলের উপর এবং তাঁদের কারও প্রতি ঈমান আনতে গিয়ে কাউকে বাদ দেয়নি, শীঘ্রই তাদেরকে প্রাপ্য সওয়াব দান করা হবে। বস্তুতঃ আল্লাহ ক্ষমাশীল দয়ালু। [সূরা নিসা: 152]
Surah An-Nisa in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Nisa ayat 152
গ্রন্থপ্রাপ্তরা তোমাকে প্রশ্ন করে তুমি আকাশ থেকে তাদের কাছে কিতাব অবতারণ করো; এমনিভাবে তারা মূসার কাছে সওয়াল করেছিল এর চাইতেও বড় কিছু, যখন তারা বলেছিল -- ''আল্লাহ্কে আমাদের দেখাও প্রকাশ্যভাবে।’’ তাই বজ্রধবনি তাদের পাকড়ালো তাদের অন্যায়ের জন্য। তারপর তারা গোবৎসকে গ্রহণ করেছিল তাদের কাছে স্পষ্ট নিদর্শনাবলী আসার পরেও; কিন্তু আমরা তাও মাফ করলাম। আর আমরা মূসাকে দিয়েছিলাম স্পষ্ট কর্তৃত্ব।
Tafsir Mokhtasar Bangla
১৫২. যারা একমাত্র আল্লাহর উপর ঈমান আনে এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক করে না উপরন্তু তাঁর সকল রাসূলকে বিশ্বাস করে ও কাফিরদের মতো তাঁদের কারো মাঝে পার্থক্য সৃষ্টি না করে সকলের উপরই ঈমান আনে তাদেরকে ঈমান ও নেক আমলের প্রতিদান স্বরূপ আল্লাহ তা‘আলা মহা পুরস্কার দিবেন। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর তাওবাকারী বান্দাদের প্রতি ক্ষমাশীল ও দয়ালু।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
পক্ষান্তরে যারা আল্লাহ এবং তাঁর রসূলগণে বিশ্বাস করে এবং তাদের কোন একজনের সাথে অন্য জনের পার্থক্য করে না, তাদেরকেই তিনি পুরস্কার দেবেন।[১] আর আল্লাহ চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। [১] এই আয়াতে ঈমানদারদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে যে, তাঁরা সকল নবীগণের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে। যেমনটি মুসলিমরা কোন নবীকে অমান্য করে না। কুরআন কারীমের উপরোক্ত স্পষ্ট ঘোষণায় ঐ সব বিভ্রান্ত লোকদের মতবাদ খন্ডন করা হয়েছে, যারা বলে, 'সব ধর্ম সমান।' যারা অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের প্রতি উদারতা প্রদর্শন করতে গিয়ে নিজেদের ধর্মমত ও ধর্মীয় বিশ্বাসকে বিজাতির পদমূলে 'উৎসর্গ' দিতে চায়। যারা কুরআনের স্পষ্ট বিধানকে উপেক্ষা করে অন্যান্য ধর্মানুসারীদেরকে বুঝাতে চায় যে, ইসলামই একমাত্র মুক্তির সনদ নয়, বরং অমুসলিমরাও তাদের নিজ নিজ ধর্মে-কর্মে স্থির থেকে পরকালে পরিত্রাণ লাভ করতে পারে! অথচ কুরআনের এই আয়াতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপনের সাথে সাথে মুহাম্মাদ ( সাঃ )-এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা জরুরী। সুতরাং কেউ যদি শেষ রসূলের রিসালতকে অমান্য করে, তাহলে আল্লাহর উপর তার ঈমান গ্রহণযোগ্য হবে না। ( আরো দেখুন সূরা বাক্বারার ২:৬২ নং আয়াতের টীকা )
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান এনেছে এবং তাদের একের সাথে অপরের পার্থক্য করেনি, অচিরেই তাদেরকে তিনি তাদের প্রতিদান দেবেন। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
১৫০-১৫২ নং আয়াতের তাফসীর: এ আয়াতে বর্ণিত হচ্ছে যে, মাত্র একজন নবীকেও যে মানে না সেও কাফির। ইয়াহুদীরা হযরত ঈসা ( আঃ ) ও হযরত মুহাম্মাদ ( সঃ ) ছাড়া অন্যান্য সমস্ত নবীকেই মানতো। খ্রীষ্টানেরা শুধুমাত্র সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ রাসূল হযরত মুহাম্মাদ ( সঃ ) ছাড়া সমস্ত নবীকেই বিশ্বাস করতো। সামেরীরা হযরত ইউশা’ ( আঃ )-এর পরে অন্য কোন নবী ( আঃ )-কে স্বীকার করতো না। হযরত ইউশা ( আঃ ) হযরত মূসা ইবনে ইমরান ( আঃ )-এর খলীফা ছিলেন। মাজুসীদের সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, তারা তাদের নবী যারাদাশতকে স্বীকার করতো। কিন্তু তারা যখন তাঁর শরীয়তকে অস্বীকার করে তখন আল্লাহ তা'আলা তাদের শরীয়তকে উঠিয়ে নেন। আল্লাহ তাআলাই সবচেয়ে বেশী জানেন। সুতরাং এ লোকগুলো যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের মধ্যে প্রভেদ আনয়ন করতো অর্থাৎ কোন নবীকে মানতো ও কোন নবীকে মানতো না, তা যে, আল্লাহ প্রদত্ত দলীলের উপর ভিত্তি করে তা নয়। বরং শুধুমাত্র মনের ইচ্ছা, অত্যন্ত গোঁড়ামি এবং পূর্ব পুরুষের কথার উপর অন্ধ বিশ্বাসের কারণেই তারা এরূপ করতো। এর দ্বারা এটাও জানা গেল যে, যে ব্যক্তি মাত্র একজন নবীকে মানে না সে আল্লাহ তাআলার নিকট সমস্ত নবীকেই অস্বীকারকারী। সুতরাং তারা নিঃসন্দেহেই কাফির। প্রকৃতপক্ষে শারঈ ঈমান তাদের কারও উপরেই নেই, বরং রয়েছে শুধু গোঁড়ামি ও প্রবৃত্তির ঈমান। আর এরূপ ঈমান মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। অতএব এ কাফিরদের জন্যে অপমানজনক শাস্তি রয়েছে। কেননা, যাদের উপর ঈমান না এনে তাঁদের মর্যাদার হানি করেছে তার প্রতিফল এটাই যে, তাদেরকে লাঞ্ছনাজনক শাস্তির মধ্যে নিক্ষেপ করা হবে। তারা যে তাদের উপর ঈমান আনছে না তা তাদের চিন্তা-শক্তির অভাবের কারণেই হোক বা সত্য প্রকাশিত হয়ে যাওয়ার পর ইহলৌকিক কোন স্বার্থের কারণেই হোক, যেমন ইয়াহূদী আলেমদের রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর ব্যাপারে এ অভ্যাস ছিল যে, তারা একমাত্র হিংসার বশবর্তী হয়ে তাঁর নবুওয়াতকে অস্বীকার করেছিল এবং তার বিরুদ্ধাচরণ ও শত্রুতার কাজে উঠে পড়ে লেগেছিল। তাই আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে দুনিয়াতেও লাঞ্ছিত করেন এবং পরকালেও রয়েছে তাদের জন্যে অপমানকর শাস্তি। অতঃপর মুহাম্মাদ ( সঃ )-এর উম্মতের প্রশংসা করা হচ্ছে যে, তারা আল্লাহ তা'আলার উপর বিশ্বাস স্থাপন করতঃ সমস্ত নবীকেই বিশ্বাস করে এবং তাঁদের মধ্যে কোন ভিন্নতা সৃষ্টি করে না। আল্লাহ তাআলার শেষ গ্রন্থ কুরআন কারীমের উপর ঈমান এনে অন্যান্য সমস্ত আসমানী কিতাবকেও তারা বিশ্বাস করে থাকে। যেমন আল্লাহ তাআলা। ( আরবী ) ( ২:২৮৫ )-এ আয়াতে বলেছেন। এরপর তাদের প্রতিদান সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন যে, তিনি তাদেরকে তাদের আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর ঈমান আনয়নের কারণে সত্বরই প্রতিদান প্রদান করবেন। তারা যদি কোন পাপকার্যও করে বসে তবুও তিনি তাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন এবং তাদের উপর স্বীয় করুণা বর্ষণ করবেন। কেননা তিনি ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
সূরা নিসা আয়াত 152 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- যাতে আল্লাহ মুনাফিক পুরুষ, মুনাফিক নারী, মুশরিক পুরুষ, মুশরিক নারীদেরকে শাস্তি দেন এবং মুমিন পুরুষ
- তুমি কখনো সেখানে দাড়াবে না, তবে যে মসজিদের ভিত্তি রাখা হয়েছে তাকওয়ার উপর প্রথম দিন
- মানুষের অধিপতির,
- আমি আপন পিতৃপুরুষ ইব্রাহীম, ইসহাক ও ইয়াকুবের ধর্ম অনুসরণ করছি। আমাদের জন্য শোভা পায় না
- তাদের জন্যে চতুস্পদ জন্তুর মধ্যে অনেক উপকারিতা ও পানীয় রয়েছে। তবুও কেন তারা শুকরিয়া আদায়
- অতঃপর তাদেরকে যখন সুস্থ ও ভাল দান করা হল, তখন দানকৃত বিষয়ে তার অংশীদার তৈরী
- অতঃপর সুর্যোদয়ের সময় তারা তাদের পশ্চাদ্ধাবন করল।
- এবং যখন আমি হযরত আদম (আঃ)-কে সেজদা করার জন্য ফেরেশতাগণকে নির্দেশ দিলাম, তখনই ইবলীস ব্যতীত
- আল্লাহর রাহে যুদ্ধ করতে থাকুন, আপনি নিজের সত্তা ব্যতীত অন্য কোন বিষয়ের যিম্মাদার নন! আর
- আর যখন মানুষ কষ্টের সম্মুখীন হয়, শুয়ে বসে, দাঁড়িয়ে আমাকে ডাকতে থাকে। তারপর আমি যখন
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা নিসা ডাউনলোড করুন:
সূরা Nisa mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Nisa শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers